স্টাফ রিপোর্টার
জানুয়ারির ২ থেকে ৩১ তারিখের মধ্যে হালনাগাদ ভোটার তালিকা প্রকাশের বিধান পাল্টে আগামী বছর ১৫ জানুয়ারিতে খসড়া প্রকাশ করে ১ মার্চ ভোটার দিবসে চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করতে চায় নির্বাচন কমিশন।
এজন্য ২০০৯ সালের ভোটার তালিকা আইনে উল্লেখিত ভোটার তালিকা প্রকাশের নির্ধারিত সূচি তুলে দিয়ে তারিখ নির্ধারণের ক্ষমতা কমিশনের কাছে রাখতে আইন সংশোধনের প্রস্তাব করেছে বিশেষজ্ঞ কমিটি।
এবিষয়ে জানতে চাইলে নির্বাচন কমিশনার রফিকুল ইসলাম বলেন, “ভোটার তালিকা বিষয়ে আমাদের একটি কমিটি রয়েছে; আইন-বিধি সংশোধনের বিষয়ও রয়েছে। কমিটির এ সংক্রান্ত পূর্ণাঙ্গ প্রস্তাবনা কমিশন সভায় উপস্থাপন করার পর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”
খসড়া ও চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশের তারিখ নির্ধারণে করণীয় চিহ্নিত করে নির্বাচন কমিশনের ‘জাতীয় পরিচয়পত্র, ভোটার তালিকা ও নির্বাচন ব্যবস্থাপনায় তথ্য প্রযুক্তির প্রয়োগ’ বিষয়ক কমিটি, যার নেতৃত্বে রয়েছেন কমিশনার শাহাদাত হোসেন চৌধুরী।
এই কমিটি ১০ অক্টোবরের বৈঠকে ভোটার তালিকা নিয়ে যেসব প্রস্তাব করেছে, তাতে উল্লেখযোগ্য দুটি বিষয় রয়েছে:
>>> ভোটার তালিকা আইনে খসড়া প্রকাশের যে তারিখ উল্লেখ রয়েছে, তা তুলে দিয়ে নির্বাচন কমিশন নির্ধারিত তারিখে ভোটার তালিকা প্রকাশের ক্ষমতা বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের হাতে রাখার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্বাচন সহায়তা-২ শাখাকে পদক্ষেপ গ্রহণের সিদ্ধান্ত হয়।
>>> এবছর চলমান হালনাগাদের খসড়া ২০২০ সালের ১৫ জানুয়ারি এবং ১ মার্চ জাতীয় ভোটার দিবসে চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশের ব্যবস্থা রেখে দাবি, আপত্তি ও নিষ্পত্তির তারিখ নির্ধারণ করে পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন কমিশনের পরবর্তী সভায় উপস্থাপনের সিদ্ধান্ত হয়।
ভোটার তালিকা আইনে রয়েছে- কম্পিউটার ডেটাবেইজে সংরক্ষিত বিদ্যমান সকল ভোটার তালিকা প্রতি বছর ২ জানুয়ারি থেকে ৩১ জানুয়ারির মধ্যে নির্ধারিত পদ্ধতিতে হালনাগাদ করা হবে।
গত বছর এপ্রিলে সরকার ১ মার্চকে ভোটার দিবস হিসেবে পালনে সম্মতি দেয়। এ বছর প্রথমবারের মতো কেন্দ্রীয় ও মাঠ পর্যায়ে ব্যাপক কর্মসূচি নিয়ে ১ মার্চ ‘ভোটার দিবস’ উদযাপনও করে সাংবিধানিক সংস্থাটি।
এখন দিবসটিকে চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশের দিন ধরে ১৫ জানুয়ারিতে খসড়া প্রকাশের পর দাবি-আপত্তি-নিষ্পত্তির কাজ শেষ করার প্রস্তাব উঠেছে।
প্রস্তাবনার মধ্যে রয়েছে- ১৫ জানুয়ারি খসড়া তালিকা প্রকাশ, ১৬ জানুয়ারি থেকে ৩১ জানুয়ারি দাবি, ১ ফেব্রুয়ারি থেকে ৭ ফেব্রুয়ারি দাবি নিষ্পত্তি, ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে ২৯ ফেব্রুয়ারি সিডি প্রস্তুত এবং ১ মার্চ ভোটার দিবসে চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশের সময়সূচি রেখে বিধি সংশোধন।
জানুয়ারিতে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি ভোটের পরিকল্পনার কথা ইতোমধ্যে জানিয়ছে কমিশন। ২০২০ সালে হালনাগাদের খসড়া তালিকা প্রকাশের বিষয়ে আইন-বিধি সংশোধন হলে নতুন কোনো জটিলতা হবে বলে মনে করছে না সংস্থাটি।
একজন নির্বাচন কমিশনার বলেন, “আগে তো কমিশনে সিদ্ধান্ত হতে হবে; তারপর সংশোধনের বিষয় আসবে। ভোটের সঙ্গে হালনাগাদের এ কার্যক্রমে কোনো জটিলতা হবে না।”
২০০৭-২০০৮ সালে ছবিসহ ভোটার তালিকা প্রণয়নের কাজ শুরুর হয়। প্রথমবারের মতো ৮ কোটি ১০ লাখের বেশি নাগরিক ভোটার তালিকাভুক্ত হয়।
এরপর থেকে বাড়ি বাড়ি গিয়ে নতুন ভোটারদের তথ্য সংগ্রহ ও মৃতদের বাদ দেওয়াসহ হালনাগাদ কাজ চলে। ২০০৯, ২০১২, ২০১৪, ২০১৫ ও ২০১৭ সালে হালনাগাদ করা হয়।
একইসঙ্গে এবারের হালনাগাদে (১৫-১৮ বছর বয়সী) চার বছরের তথ্য সংগ্রহ চলছে। ২০২০ সালের ১ জানুয়ারি যারা ভোটারযোগ্য রয়েছে তাদের হালনাগাদ খসড়া প্রকাশ করার কথা রয়েছে।
|