মিয়া আবদুল হান্নান : জুমুআ`র নামাজ ইসলামের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি নামাজ। جُمُعَة (জুমু`আহ) শব্দটি আরবি। এর অর্থ একত্রিত হওয়া, সম্মিলিত হওয়া, কাতারবদ্ধ হওয়া। সপ্তাহের শ্রেষ্ঠ দিন হলো শুক্রবার। আর শুক্রবারের শ্রেষ্ঠ নামাজ হলো জুমুআ`। জুমুআ`র নামাজের বিভিন্ন ফজিলত বর্ণিত হয়েছে হাদিসে। রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, জুমুআ` হচ্ছে শ্রেষ্ঠ দিবস। জুমুআ` নামে পবিত্র কুরআনে একটি স্বতন্ত্র সুরা নাজিল হয়েছে। যেহেতু, সপ্তাহের নির্দিষ্ট দিন শুক্রবারে প্রাপ্তবয়স্ক মুমিন-মুসলমান একটি নির্দিষ্ট সময়ে একই স্থানে একত্রিত হয়ে জামাতের সঙ্গে সে দিনের জোহরের নামাজের পরিবর্তে এই নামাজ ফরজরূপে আদায় করে, সে জন্য এই নামাজকে `জুমুআ`র নামাজ` বলা হয়।শুক্রবারের দিন জোহরের নামাজের পরিবর্তে জুমার নামাজকে ফরজ করা হয়েছে। জুমুআ`র দুই রাকাত ফরজ নামাজ ও ইমামের খুতবাকে জোহরের চার রাকাত ফরজ নামাজের স্থলাভিষিক্ত করা হয়েছে। সপ্তাহের এদিনে জুমিআ`র খতিব উম্মতের যাবতীয় প্রয়োজনীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে পবিত্র কোরআন ও হাদিসের আলোকে নির্দেশনা ও সমাধানমূলক উপদেশ দিয়ে থাকেন খুতবায়।এই দিনে অনেক ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা এক কাতারে মিলিত হন। মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়েন। এখন প্রশ্ন হচ্ছে- জুমুআ`র নামাজ না পেলে আমরা কী করব-?কারও জুমুআ`র নামাজ এক রাকাত ছুটে গেলে বাকি আরো এক রাকাত ইমামের সালাম ফেরানোর পর উঠে পড়ে নিলে তার জুমুআ` হয়ে যাবে। অনুরূপ কেউ দ্বিতীয় রাকাতের রুকুর আগে থেকে পেলেও ওই রাকাত এবং তার সঙ্গে আর এক রাকাত পড়লে তারও জুমুআ`র নামাজ হয়ে যাবে।কিন্তু যদি কেউ দ্বিতীয় রাকাতের রুকু শেষ হওয়ার পর জামাতে শামিল হয়, তাহলে সে জুমুআ`র নামাজ পাবে না। এই অবস্থায় তাকে জোহরের ৪ রাকআত আদায়ের নিয়তে জামাআতে শামিল হয়ে ইমামের সালাম ফেরানোর পর ৪ রাকআত ফরজ পড়তে হবে। (ফাতাওয়া ইসলামিয়্যাহ, সৌদি উলামা-কমিটি ১/৪১৮, ৪২১)আর কেউ যদি জুমুআ`র নামাজ না পায় বা মসজিদে গিয়ে দেখে জুমিআ` শেষ হয়ে গেছে তবে তাকে জোহরের নামাজ পড়তে হবে। কারণ জামাত ছাড়া জুমুআ`র নামাজ হয় না।হাদিসে এসেছে, ইবনে মাসঊদ (রা.) বলেন, যে ব্যক্তি জুমুআ`র এক রাকআত পেয়ে যায়, সে ব্যক্তি যেন আর এক রাকাত পড়ে নেয়। কিন্তু যে (দ্বিতীয় রাকআতের) রুকু না পায়, সে যেন জোহরের ৪ রাকআত পড়ে নেয়।` (ইবনে আবী শাইবা, ত্বাবারানী, বায়হাকী, আলবানী : ৬২১)
পবিত্র কোরআনে সূরা আল (৯ আয়াত) জুমুআ`হ্ ইরশাদ করা হয়েছেঃ--أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِذَا نُودِي لِلصَّلَاةِ مِن يَوْمِ الْجُمُعَةِ فَاسْعَوْا إِلَى ذِكْرِ اللَّهِ وَذَرُوا الْبَيْعَ ذَلِكُمْ خَيْرٌ لَّكُمْ إِن كُنتُمْ تَعْلَمُونَ বাংলা তরজমা: -ইয়া আইয়্যাহল্লাযীনা আমানু ইযা নূদিয়া লিসসালাতি মিইঁ য়াওমিল জুমুআ`তি ফাসআ`ওইলা যিকরিল্লাাহি ওয়া যারূল্ বাইআ` যালিকুম খাইরুল্ লাকুম ইন্ কুন্তুুম তা`লামিন।
`মুমিনগণ, জুমুআ`র দিনে যখন নামাজের আজান দেওয়া হয়, তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণের পানে ত্বরা কর এবং বেচাকেনা বন্ধ কর। এটা তোমাদের জন্য উত্তম যদি তোমরা বুঝ।` (সূরা:অতএব জুমুআ`র নামাজ একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। এ নামাজ ছেড়ে দিলে হাদিসে ভয়াবহ ক্ষতির কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এ জন্য প্রতিটি মুসলিমকে অবশ্যই জুমুআ`র নামাজ গুরুত্বসহ পড়া উচিত। আল জুমুআ`, আয়াত: ৯)অতএব জুমুআ`র নামাজ একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। এ নামাজ ছেড়ে দিলে হাদিসে ভয়াবহ ক্ষতির কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এ জন্য প্রতিটি মুসলিমকে অবশ্যই জুমুআ`র নামাজ গুরুত্বসহ পড়া উচিত।
|