অনলাইন ডেস্ক : করোনার স্থবির সময় পেরিয়ে দড়জায় কড়া নাড়ছে নতুন বছর। নতুন পোশাকে নতুন বছর বরণে আগ্রহ সবার। দোকানে দোকানে তাই ঈদ পাশাকের সঙ্গে শোভা পাচ্ছে বৈশাখী শাড়ি, পাঞ্জাবি আর ফতুয়া। কাছাকাছি সময় দুটি উৎসব হওয়ায় ব্যবসায়ীরাও করোনার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে চাচ্ছেন।
বাঙালির একমাত্র সার্বজনীন উৎসব পয়লা বৈশাখ। দুই ঈদের পরে সবচেয়ে বেশি পোশাক কেনাবেচা হয় এই উৎসবকে ঘিরে। তাই দেশি ফ্যাশন হাউসগুলোর থাকে বাড়তি প্রস্তুতি।
গত দু’বছর করোনায় সব বন্ধ থাকায় এবার নববর্ষে বাঙালি সাজের বাহারি পোশাকে ক্ষতি পোষানোর লক্ষ্য ব্যবসায়ীদের। গ্রাম বাংলার আবহে তৈরি লাল-সাদার সুতি পোশাকের পাশাপাশি হরেক রঙের পাঞ্জাবি, থ্রিপিস আর শাড়ির পসরা সাজিয়ে বসছেন দোকানিরা। সুতির পাশাপাশি রয়েছে সিল্ক, হাফ সিল্ক, মসলিনসহ বিভিন্ন ধরনের ফেব্রিক। বেছে বেছে পছন্দের পোশাক কিনছেন সব বয়সীরা।
এক ক্রেতা বলেন, কেনাকাটা করতে ভালো লাগে। আর সন্তানের আবদার মেটাতে আরও ভালো লাগে। দুই বছর পর এবার আমরা পয়লা বৈশাখ উদযাপন করতে যাচ্ছি। বাচ্চাদের জন্য কেনাকাটা করতে আসছি।
আরেক ক্রেতা বলেন, আমার এক ছেলে এক মেয়ে। বৈশাখ উপলক্ষে তাদের জন্য কেনাকাটা করতে আসছি। কিন্তু সব কিছুর দাম বেড়ে গেছে। কয়েকটা মার্কেট ঘুরে দেখলাম, আমাদের যা বাজেট ছিল তার চেয়ে দাম একটু বেশি মনে হচ্ছে।
অপর ক্রেতা বলেন, এবার পহেলা বৈশাখ ও ঈদ কাছাকাছি সময়ে। যার জন্য আমরা চেষ্টা করছি ঈদ ও পয়লা বৈশাখ দুটি উৎসবের জন্য সমন্বয় করে পোশাক কিনতে। তাহলে বাচ্চারাও খুশি হবে।
এক নারী ক্রেতা বলেন, আমরা এতদিন একদম ঘরবন্দি ছিলাম। এখন স্কুল-কলেজ খুলে যাওয়ায় আমাদেরও ব্যস্ততা বেড়ে গেছে। সব কিছু খোলার পর বাঙালিদের বড় অনুষ্ঠান পাচ্ছি। বের হতে পেরেও ভালো লাগছে।
বিক্রেতারা জানান, রোজার কারণে প্রথমে তেমন ক্রেতা না আসলেও শেষ মুহূর্তে জমে উঠেছে বৈশাখী কেনাকাটা।
এক বিক্রেতা বলেন, পয়লা বৈশাখ উপলক্ষে বেচাকেনা ভালোই হচ্ছে। আমরা ভেবেছিলাম রোজায় সেল (বিক্রি) হবে না। কিন্তু টুকটাক আছে।
বিশ্ব রঙের স্বত্বাধিকরী ও ডিজাইনার বিপ্লব সাহা জানান, বৈশাখের দুই সপ্তাহ পরেই ঈদ হওয়ায় তা মাথায় রেখেই এবার পোশাকের ফেব্রিক, রং আর নকশা করা হয়েছে।
তিনি বলেন, আমাদের বৈশাখের কালেকশন হয়তো সেই মাত্রায় নেই। কিন্তু বৈশাখের কালেকশন অবশ্যই আমাদের কাছে আছে। ঈদের কেনাকাটা হলেও মানুষ পাশাপাশি বৈশাখের কেনাকাটা করছে। আবার কেউ কেউ পোশাকটা এমনভাবে চয়েস করছেন, সেটা যেন ঈদ বৈশাখ দুইটাকেই কাভার করে।
তিনি আরও বলেন, প্রতি বছরই আমরা একেকটা থিম নিয়ে কাজ করি। এ বছরের থিমটা হচ্ছে আমাদের আগে গ্রাম-বাংলায় কাগজ কেটে কেটে ঝালর দিয়ে ঘর সাজাতো। সেখানো কিছু মোটিভ ছিল, সেগুলো নিয়ে আমরা আমাদের এবারের পোশাক সাজিয়েছি।
এবারের পয়লা বৈশাখ আর ঈদে করোনার ক্ষতি হয়তো পুরোপুরি পোষানো যাবে না, তবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলে দ্রুত ঘুরে দাঁড়াতে চায় দেশি ফ্যাশন হাউসগুলো।
|