অনলাইন ডেস্ক : সাব্বির রহমান কেমন চাপে ছিলেন, সেটি বোধ হয় তিনি ছাড়া আর কেউ ভালো বলতে পারবেন না। নিষেধাজ্ঞার মধ্যে ছিলেন, ছিল হাজারো সমালোচনা। তারপরও অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজার অনুরোধে নিউজিল্যান্ড সফরের দলে জায়গা করে নেন মারকুটে এই ব্যাটসম্যান। নিজেকে প্রমাণ করতে না পারলে নিশ্চয়ই সমালোচকরা আরও বেশি পেয়ে বসতেন!
নিউজিল্যান্ড সফরে তার আসলে যাওয়ার কথা ছিল না। নিষেধাজ্ঞার মেয়াদই যে ফুরোয়নি তখনও। ওয়ানডে অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা নির্বাচকদের কাছে সাব্বিরের জন্য অনুরোধ করেন। সামনে বিশ্বকাপ। এমন সময়ে যে টিম কম্বিনেশনে তার মতো একজন হার্ডহিটার ব্যাটসম্যান যে খুব দরকার!
সাব্বির ঠিক দলে ফিরলেন। অধিনায়কের আস্থার প্রতিদান দিলেন ব্যাটেই। সেটাও আবার নিউজিল্যান্ডের বিরূপ কন্ডিশনে। যেখানে তামিম ইকবাল, মুশফিকুর রহীমের মতো অতি নির্ভরযোগ্য ব্যাটসম্যানরাও টানা তিন ম্যাচে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছেন।
প্রস্তুতি ম্যাচে ৪০ রানের ইনিংস। এরপর সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে সুযোগ পেয়ে করেছিলেন মাত্র ১৩। কিন্তু পরের ম্যাচেই দলের বিপদের মুখে ৪৩ রানের দায়িত্বশীল এক ইনিংস বের হয়ে আসে সাব্বিরের ব্যাট থেকে।
ডানেডিনে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে বোধ হয় নিজেকেই ছাড়িয়ে যাওয়ার সংকল্প নিয়ে নেমেছিলেন সাব্বির। ওয়ানডে ক্যারিয়ারে প্রথম সেঞ্চুরিটা করলেন পাহাড়সমান চাপের মুখে দাঁড়িয়ে। ১১০ বলে ১২ বাউন্ডারি আর ২ ছক্কায় করলেন ১০২ রান।
দলের বিপর্যয়, তাকে নিয়েও সমালোচনা। ডানেডিনে সিরিজের তৃতীয় ওয়ানডেতে একসঙ্গে দ্বিমুখী চাপকে জয় করলেন সাব্বির। সেঞ্চুরির পর তার উদযাপনটাও তাই ছিল দেখার মতো।
বাংলাদেশের ইনিংসের তখনও ২৬ বল বাকি। কিউই ফাস্ট বোলার টিম সাউদিকে কাভার ড্রাইভে সীমানার ওপারে পাঠিয়ে ৯৫ থেকে পৌঁছে গেলেন ৯৯-তে। ঠিক পরের বলেই কব্জির মোচড়ে ব্যাকওয়ার্ড স্কয়ার লেগে ঘুরিয়ে সিঙ্গেলস। প্রান্ত বদলের আগেই উচ্ছ্বাস উল্লাস, ব্যাট উঁচুতে তুলে আনন্দের আতিশয্যে শূন্যে লাফিয়ে উঠলেন সাব্বির রহমান।
তারপর মাঠে সেজদা দিলেন। ব্যাট উঁচু করে ধরে হাত দিয়ে কি যেন ইশারা করলেন। দেখে যতটুকু মনে হয়েছে, ব্যাট কথা বলেছে-এমন বার্তাই বোধ হয় সমালোচকদের উদ্দেশ্যে দিলেন সাব্বির। এবার তো তাদের মুখ বন্ধ করার সময় এসেছে!
|