জবি প্রতিনিধি : জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি) যৌন নিপীড়ন বিরোধী চিত্রকর্ম প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সাংস্কৃতিক ইউনিয়ন। মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) ক্যাম্পাসের ভাস্কর্য চত্বরের বিপরীত পাশে দিনব্যাপী প্রদর্শনীর এ আয়োজন করা হয়।
আয়োজকরা বলেছেন, সাম্প্রতিক সময়ে যৌন নিপীড়নের ঘটনা বৃদ্ধি পাওয়া তাদের এ আয়োজন। শিল্পকর্ম বরাবরই প্রতিবাদের ভাষা হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। যৌন নিপীড়ন বন্ধে নারী-পুরুষ উভয়ের সচেতনতা প্রয়োজন। শিল্পকর্মের সঠিক চর্চার মাধ্যমেই মানুষের বিবেক জাগ্রত করা সম্ভব বলে মনে করছেন তারা।
জবি শাখা সাংস্কৃতিক ইউনিয়নের সদস্য সাবাব আলম সানি বলেন," সমগ্র বাংলাদেশে যৌন নির্যাতনের বিরুদ্ধে আমাদের প্রচেষ্টায় শিল্পকর্মের মাধ্যমে আমরা এর প্রতিবাদ করছি। কারণ, আমরা বিশ্বাস করি যৌন হয়রানি জঘন্য ও ঘৃণ্যতম অপরাধমূলক কাজ। তাই আমরা জবি শিল্পীরা একসাথে শিল্পকর্মের মাধ্যমে ধর্ষকদের সাথে কি ধরনের আচরণ করা উচিৎ তা তুলে ধরেছি। "
চিত্রকর্মগুলিতে শিল্পীরা, যৌন নিপীড়ন বন্ধের আহবান জানিয়েছেন। চিত্রকর্মগুলিতে তুলে ধরা হয়েছে, নারীর প্রতি সমাজ ও পুরুষের বিকৃত যৌন মানসিকতা। এছাড়াও নারীর বিভিন্ন প্রতিবাদী চরিত্র।
প্রদর্শনীতে অংশ নেওয়া চারুকলা বিভাগের ৯ম ব্যাচের অনিক সাহা সুমিত বলেন, প্রদর্শনীতে আমার ২টি চিত্রকর্ম প্রদর্শীত হচ্ছে। একটিতে বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত যৌন নিপীড়নের পেপারকার্টিং এর উপর নিপীড়নের শিকার নারী প্রতিকৃতি এঁকেছি। এর মাধ্যমে আমি বুঝিয়েছি প্রতিদিনই সংবাদপত্রে যৌন নিপীড়নের সংবাদ প্রকাশ হচ্ছে তারপরও নারীর অবস্থার পরিবর্তন হচ্ছে না বরং বাড়ছে।
প্রদর্শনীতে জায়গা পেয়েছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যায়নরত চারুকলা বিভাগের ২৭ জন ও অন্যান্য বিভাগের ৫ জন শিল্পীর ৩৫ টি চিত্রকর্ম, কাটুর্ন ও শিল্পকর্ম।
শিল্পকর্ম দেখতে আসা দর্শণার্থী অণুজীববিজ্ঞান বিভাগের ১৩তম ব্যাচের শিক্ষার্থী সানজিদা সাথী বলেন, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে এধরনের প্রতিবাদ দেখে অনেক ভালো লাগছে। যারা এধরণের কাজ করে তাদের সামাজিক ভাবে সচেতন করার জন্যে এটি অনেকাংশে সাহায্য করবে। এধরণের বিকৃত মস্তিষ্ক অধিকারী মানুষদের কে সচেতন করার জন্যে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এর আয়োজন করা উচিৎ।
আয়োজনের বিষয়ে শাখা ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি মিফতাহ আল ইহসান তূর্য বলেন, "শিল্পের মাধ্যমে যৌন নিপীড়নের প্রতিবাদে আমাদের আয়োজন। শিল্প মানুষের মৌলিক ও জৈবিক চাহিদা। মানুষ শিল্পের সঠিক চর্চায় না থাকলে বিভিন্ন অপকর্মে লিপ্ত হয়। আমাদের চেষ্টা ছিলো মানুষ কম করে হলেও একটি ছবি দেখুক এবং নিজেকে প্রশ্ন করার জায়গা থাকছে, বিবেক জাগ্রত হওয়ার সুযোগ তৈরি হচ্ছে।
|