সাহিত্য ডেস্ক : বাংলা সাহিত্যে অবদানের জন্য জেমকন সাহিত্য পুরস্কার ২০২১ পেয়েছেন কথাসাহিত্যিক আফসানা বেগম, তরুণ কথাসাহিত্যিক সঞ্জয় পাল, কবি মারুফা মিতা ও দিপন দেবনাথ।
মঙ্গলবার (৫ জুলাই) বিকেলে বাংলা একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে পুরস্কারপ্রাপ্তদের নাম ঘোষণা করেন জেমকন গ্রুপের পরিচালক কাজী আনিস আহমেদ।
‘জেমকন সাহিত্য পুরস্কার’ ক্যাটাগরিতে কথাসাহিত্যিক আফসানা বেগমকে ‘কোলাহল থামার পরে’ উপন্যাসের জন্য ৫ লাখ টাকার চেক, ক্রেস্ট ও সম্মাননাপত্র; ‘জেমকন তরুণ কথাসাহিত্য পুরস্কার’ ক্যাটাগরিতে কথাসাহিত্যিক সঞ্জয় পালকে ‘দ্বীপরাজ’ নামে উপন্যাসের পাণ্ডুলিপির জন্য ১ লাখ টাকার চেক, ক্রেস্ট ও সম্মাননাপত্র এবং ‘জেমকন তরুণ কবিতা পুরস্কার’ ক্যাটাগরিতে যৌথভাবে মারুফা মিতার কবিতার পাণ্ডুলিপি ‘বোতামঘর’ ও দিপন দেবনাথের ‘আদি ফসিলের গান’র জন্য উভয়কে ৫০ হাজার টাকার চেক, ক্রেস্ট ও সম্মাননাপত্র প্রদান করা হয়।
এ ছাড়াও অনুষ্ঠানে ২০২০ সালের জেমকন সাহিত্য পুরস্কারপ্রাপ্ত কথাসাহিত্যিকদের হাতেও পুরস্কারের ক্রেস্ট ও আর্থিক সম্মাননা তুলে দেওয়া হয়। পুরস্কারপ্রাপ্ত মাসরুর আরেফিন, জেমকন তরুণ কথাসাহিত্যিক পুরস্কার যৌথভাবে জব্বার আল নাঈম ও ধ্রুপদী রিপন, জেমকন তরুণ কবিতা পুরস্কার কবি হাসনাইন হীরার হাতে তুলে দেওয়া হয়।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন জেমকন গ্রুপের ভাইস-চেয়ারম্যান কাজী নাবিল আহমেদ। তিনি এ পর্যন্ত পুরস্কারপ্রাপ্তদের নাম ঘোষণা করে বলেন, ‘আমাদের জেমকন গ্রুপের সহযোগী সংগঠন সাপ্তাহিক খবরের কাগজ এবং দৈনিক আজকের কাগজের নামেই ২০০০ সালে এ পুরস্কার প্রবর্তন করা হয়। এ পুরস্কারের নাম ছিল কাগজ পুরস্কার। তরুণ কথাসাহিত্যিকদের উৎসাহিত করতে এ পুরস্কার প্রবর্তন করা হয়। তখন তাদের পাণ্ডুলিপি জুরি বোর্ডে দেওয়া হয়, তখন তাদের নাম থাকে না। যাতে লেখক না লেখাকে মূল্যায়ন করা হয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘করোনার কারণে জেমকন সাহিত্য পুরস্কার গতবছর অনুষ্ঠান করে দেওয়া যায়নি। এ কারণে একটু ছেদ পড়েছে। আশা করছি আগামীতে আমরা সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে পুরস্কার প্রদান অব্যাহত রাখতে পারবো। আমি বিচারকদের ধন্যবাদ জানাই কষ্ট করে পাণ্ডুলিপি পড়ে বিজয়ীদের নির্বাচিত করার জন্য।’ এ সময় তিনি এ পুরস্কারের সাথে সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানান।
আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য অধ্যাপক তপোধীর ভট্টাচার্য্য বলেন, ‘আমাদের অখণ্ড বাংলা সাহিত্যের পতাকা যারা হাতে তুলে নিয়েছিলেন, তাদের একটু একটু করে দেখলাম। যারা আজ পুরস্কার পেলেন কবি হিসেবে, কথাকার হিসেবে, তারা নিজেদের সামনে অতিক্রম যোগ্য ফলক নির্দিষ্ট করে দিলেন। আমরা পাঠকরা এরপর থেকে লক্ষ্য করবো তারা পরবর্তীকালে নিজেদের কীভাবে অতিক্রম করে যাচ্ছে।’
পুরস্কারপ্রাপ্তির অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে কথাসাহিত্যিক আফসানা বেগম বলেন, ‘আমি পুরস্কারের জন্য জেমকন গ্রুপ ও বিচারকদের ধন্যবাদ জানাই। আমি সমাজের একটা সমস্যাকে কেন্দ্র করে আমার বই লিখেছি। আমাদের সমাজ নারীবান্ধব নয়। বাড়ির ভেতর নারীদের প্রতি যে নির্যাতন হয়, সেটি তুলে ধরেছি। এই উপন্যাস বহুল পাঠের মধ্য দিয়ে এই সমস্যার সমাধানে ভূমিকা রাখবে বলে আমি মনে করি।’
এ সময় উপস্থিত ছিলেন কবি মোহাম্মদ সাদিক, কবি-অধ্যাপক ড. বনানী চক্রবর্তী, কবি নিখিলেশ রায়, কথাশিল্পী আহমাদ মোস্তফা কামাল প্রমুখ।
|