বাংলার জন্য ক্লিক করুন
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
শিরোনাম : * নাসা গ্রুপের কর্ণধার নজরুল ইসলাম ১০ দিনের রিমান্ডে   * বন্দিদের মুক্তি না দিলে গাজায় ফের যুদ্ধ শুরুর হুমকি নেতানিয়াহুর   * ‘বইমেলায় অপ্রীতিকর ঘটনা উন্মুক্ত সাংস্কৃতিক চর্চাকে ক্ষুণ্ন করে’   * সড়কে চলছে না কাউন্টারভিত্তিক বাস, দুর্ভোগে যাত্রীরা   * গুয়েতেমালায় ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৫১   * হুটহাট করে জামিন দেবেন না, বিচারকদের আসিফ নজরুল   * ৬ দাবিতে শহীদ মিনারে চাকরিচ্যুত বিডিআর সদস্যদের অবস্থান   * কোনো ‘শয়তান’ যেন পালাতে না পারে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা   * দুর্নীতিগ্রস্ত দেশের তালিকায় বাংলাদেশ ১৪তম   * ভোজ্যতেলের সংকট অল্প দিনের মধ্যে কেটে যাবে: বাণিজ্য উপদেষ্টা  

   মতামত
  ভারত ও বাংলাদেশের উচিত তিস্তা চুক্তিতে স্বাক্ষর করা
  তারিখ : 14-09-2022
 

বিশেষ সংবাদদাতা: বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে দীর্ঘদিনের অমীমাংসিত সমস্যাগুলোর একটি হলো তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি। তিস্তার পানি বণ্টন নিয়ে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে চুক্তি নিয়ে গত কয়েক বছর ধরে আলোচনা চলছে। কিন্তু আশ্বাসে থেমে গেছে তিস্তা ইস্যু। ১৯৯৬ সালে গঙ্গা চুক্তির পর তিস্তা নদীর পানি বণ্টনের বিষয়টি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনার বিষয় হয়ে ওঠে। ১৯৮৩ সালের আগস্ট মাসে দুই দেশের মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে তিস্তার পানি বণ্টনের বিষয়টি শুরু হয়।
২০১১ সালের সেপ্টেম্বরে ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং ঢাকা সফর করেন। সে সময় তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি হওয়ার কথা ছিল। অন্তর্র্বতী চুক্তির মেয়াদ ছিল ১৫ বছর। চুক্তি অনুযায়ী তিস্তার পানির ৪২ দশমিক ৫ শতাংশ এবং বাংলাদেশের ৩৭ দশমিক ৫ শতাংশের ওপর ভারতের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির বিরোধিতার কারণে চুক্তি চূড়ান্ত হয়নি।
পরবর্তীতে ২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারত সফর করেন। এই ভারত সফর তিস্তা চুক্তি স্বাক্ষরের আশা জাগিয়েছে। সফরকালে প্রধানমন্ত্রী পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির সঙ্গে বৈঠক করেন। কিন্তু তারপরও রাজি হননি পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, তার মতবিরোধের মূল কারণ উত্তরবঙ্গের মানুষকে বঞ্চিত করে তিনি বাংলাদেশকে পানি দিতে রাজি নন। এমনকি ২০১৫ সালে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে ঢাকা সফর করেছিলেন। সে সময় তিস্তা চুক্তি নিয়ে ইতিবাচক বক্তব্য দেওয়া হলেও কোনো ফল পাওয়া যায়নি। বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত ৫৪টি আন্তঃসীমান্ত নদী বা অভিন্ন নদী রয়েছে। এর মধ্যে ৪৩টি অভিন্ন নদীর পানির বেশির ভাগই ভারতের দখলে, যা প্রতিবেশী দেশগুলোর প্রতি কার্যত অন্যায্য। ৫৪টি ভারত-বাংলাদেশ যৌথ নদী কমিশনের কারিগরি কমিটি ৫ জানুয়ারী, ২০২১ থেকে দুই দিনের জন্য বৈঠক করেছে। করোনভাইরাস পরিস্থিতির কারণে বৈঠকটি কার্যত শেষ হয়েছে। বৈঠকে অভিন্ন নদীতে পানি বণ্টনের জন্য একটি ফ্রেমওয়ার্ক চুক্তি নিয়ে আলোচনা হয়। এর আগে, বাংলাদেশ সরকার ত্রিপুরার সাব্রুম শহরে পানি সংকট মোকাবেলায় মানবিক কারণে ফেনী নদী থেকে ১.৮২ কিউসেক পানি তুলতে সম্মত হয়। তবে তিস্তার পানি বণ্টনের বিষয়টি দিনের পর দিন অমীমাংসিতই থেকেছে। একটি আন্তঃসীমান্ত নদী জুড়ে জল ভাগাভাগির ক্ষেত্রে চুক্তিটি গুরুত্বপূর্ণ ছিল, কারণ এটি একটি দেশের জল ভাগ এবং প্রাপ্যতা নিশ্চিত করেছিল। চুক্তি সম্পন্ন না হলে সাব্রুম শহরে এমনকি বাংলাদেশেও পানির ঘাটতি মেটানো সম্ভব হবে না, পাম্প হাউস দিয়ে সেচ প্রকল্প নির্মাণ করে তা বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে না। চুক্তির ফলে উভয় দেশই লাভবান হবে। গজলডোবা বাঁধটি ১৯৯৮ সালে ভারতের জলপাইগুড়ি জেলার মালবাজার মহকুমায় নীলফামারীর তিস্তা নদীর উজানে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এই বাঁধ নির্মাণের মাধ্যমে তিস্তা নদীর নিয়ন্ত্রণ ভারতের হাতে চলে যায়। বাঁধের ৫৪টি গেট রয়েছে যা তিস্তার মূল স্রোত থেকে বিভিন্ন সেক্টরে পানি সরানোর জন্য বন্ধ রয়েছে। বাঁধটি মূলত তিস্তার পানি তিস্তা-মহানন্দা খালে প্রবাহিত করার জন্য নির্মিত হয়েছিল। গজলডোবা বাঁধের আগে তিস্তা অববাহিকায় ২৫০০ কিউসেক পানি পাওয়া যেত, এখন পানির প্রবাহ ৪০০ কিউসেক কম। বাংলাদেশে ১৯৯৭ সালে শুষ্ক মৌসুমে তিস্তায় পানির প্রবাহ ছিল প্রায় ৬,৫০০ কিউসেক, যা ২০০৬ সালে ১,৩৪৮ কিউসেকে নেমে আসে এবং ২০১৪ সালে তা দাঁড়ায় মাত্র ৮০০ কিউসেকে। পানির অভাবে অনেক জমি চাষাবাদের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। ফলে সাধারণ কৃষকরা ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন, যার প্রভাব পড়ছে তাদের জীবিকা। অপর্যাপ্ত পানির প্রবাহে নদী ভরাট হয়ে যাচ্ছে চরগুলোতে। গ্রীষ্মকালেও নদীতে একেবারেই পানি থাকে না। মানুষ পায়ে হেঁটে নদী পার হয়। মরা নদীতে পরিণত হয়েছে তিস্তা। এভাবে চলতে থাকলে শুধু জনজীবনই নয়, জীববৈচিত্র্যও হুমকির মুখে পড়বে। তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি এখন সময়ের দাবি। কিন্তু তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তির ব্যাপারে ভারতের দেরি বোঝায় যে তারা এটা মানতে নারাজ। তিস্তা প্রকল্প বাংলাদেশের সীমান্ত দিয়ে প্রবাহিত তিস্তা নদীর ১১৫ কিলোমিটার খনন করবে। খননের মাধ্যমে নদীর গভীরতা উল্লেখযোগ্য হারে হ্রাস পাবে। নদী ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে অনেক নদী উদ্ধার করা হবে। নদীর তীরবর্তী জমি চাষের উপযোগী করা হবে। এমনকি তিস্তা নদীর উভয় তীরে শিল্পনগরী গড়ে তোলা সম্ভব হবে, যা বহু লোকের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করবে। এতে দেশের সমগ্র অর্থনীতি সমৃদ্ধ হবে। মূলত, তিস্তা নদী চুক্তি স্বাক্ষর না করা ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে প্রতিবেশী মনোভাবকে ক্ষুণ্ন করছে। ভারতের মনে রাখা উচিত বাংলাদেশ এই অঞ্চলে একটি বিশ্বস্ত মিত্র। ভারত বাংলাদেশের সঙ্গে চুক্তিতে স্বাক্ষর না করলে বাংলাদেশ অবশ্যই বিকল্প পথ খোঁজার চেষ্টা করবে। প্রায়ই বলা হয় বাংলাদেশ ও আমি হফরধ বর্তমানে তাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের স্বর্ণযুগের সাক্ষী। বাংলাদেশ ইস্যুতে চীনের সহযোগিতা গ্রহণ করার আগে ভারতের উচিত বিরোধ নিরসনে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া। বাংলাদেশ ইতোমধ্যে চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের (বিআরআই) অংশ হতে সম্মত হয়েছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও বাংলাদেশ ইঙ্গিত দিয়েছে যে তারা এখনও ভারতকে তার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেশী এবং মিত্র হিসাবে বিবেচনা করে।
ক্রমবর্ধমান অভ্যন্তরীণ চাহিদার কারণে শেখ হাসিনা তিস্তা নদীর বণ্টন সমস্যা সমাধানে আগ্রহী। তবে ভারতের পক্ষ থেকে দেরি হলে বিকল্প পথের কথা ভাবতে পারে বাংলাদেশ। তিস্তা সমস্যার ফলপ্রসূ সমাধান শুধু বাংলাদেশকে অর্থনৈতিকভাবে উপকৃত করবে না বরং ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক জোরদার করতেও সাহায্য করবে। তিস্তা চুক্তি ভারতকেও দারুণভাবে উপকৃত করবে। এই দ্বিপাক্ষিক চুক্তি এগিয়ে গেলে তা বাংলাদেশের সকল স্টেকহোল্ডারদের সন্তুষ্ট করতে সক্ষম হবে। ভারত অবশ্যই বাংলাদেশের একটি শক্তিশালী মিত্র হিসেবে তার অবস্থানকে শক্তিশালী করতে এবং একটি শক্তিশালী অর্থনৈতিক ও কূটনৈতিক অংশীদারিত্ব গড়ে তুলতে সক্ষম হবে।
তিস্তা নদীর রয়েছে অপার সম্ভাবনা। তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি বা তিস্তা প্রকল্পের যথাযথ বাস্তবায়ন সম্ভব হলে শুধু তিস্তা উপকূল বা উত্তরবঙ্গের মানুষ নয়, সমগ্র বাংলাদেশ এর সুফল ভোগ করবে। পরিবর্তন আসবে উত্তরবঙ্গের জনজীবনে। বাংলাদেশের অর্থনীতি সমৃদ্ধ হবে। সব মিলিয়ে তিস্তা চুক্তি বা তিস্তা প্রকল্প বাস্তবায়নে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।



সংবাদটি পড়া হয়েছে মোট : 908        
   শেয়ার করুন
Share Button
   আপনার মতামত দিন
     মতামত
রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি ও কথার লড়াই বন্ধ হওয়া উচিত : তাজুল ইসলাম
.............................................................................................
২০ জানুয়ারির মধ্যে হামাস-ইসরায়েলের যুদ্ধ বিরতির জোর প্রস্তুতি : ইসরায়েলকে যদি পূর্বেই থামানো যেত তাহলে গাজায় এত মানুষ নিহত হতো না : বিশ্লেষক তাজুল ইসলাম
.............................................................................................
২০০ টাকা মূল্যমানের নন-জুডিশিয়াল ষ্ট্যাম্প ছাপিয়ে মূল্যবান কাগজের সাশ্রয় করা উচিত : বিশ্লষক তাজুল ইসলাম
.............................................................................................
আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বমূলক নির্বাচন এই মুহুর্তে বাংলাদেশের জন্য সময়োপযোগী নয় : বিশ্লেষক তাজুল ইসলাম
.............................................................................................
‘না’ ভোট ব্যবস্থা গণতন্ত্র বিকাশে বড় বাধা : বিশ্লেষক তাজুল ইসলাম
.............................................................................................
বিশ্লষক তাজুল ইসলামের অভিমত : বৈধভাবে গ্যাসের সংযোগ বাড়িয়ে গ্যাসের অপচয়রোধ ও দূর্ণীতিবাজদের টাকার পাহাড় গড়া বন্ধ করা যেত পারে
.............................................................................................
ঢাকা-করাচি সরাসরি বিমান যোগাযোগ : “নির্বিঘ্ন ভ্রমণে জনগণের আহ্বানের উত্তর"
.............................................................................................
কলকাতা প্রেসক্লাবের নিবন্ধন ৬৮ বছর পেরিয়ে- ২
.............................................................................................
কলকাতা প্রেসক্লাবের ৬৮ বছর পেরিয়ে - ১
.............................................................................................
অল্টারনেটিভ (বিকল্প চিকিৎসা ব্যবস্থা)
.............................................................................................
প্রাথমিক শিক্ষায় উন্নয়নের ধারা
.............................................................................................
প্রত্যাশা: আত্মশুদ্ধির উদ্বোধন
.............................................................................................
গণহত্যার শিকারদের স্মরণ ও প্রতিরোধ দিবস
.............................................................................................
বিনোদনের নামে অসুস্থ প্রতিযোগিতা থেকে বিরত থাকি
.............................................................................................
ভারত ও বাংলাদেশের উচিত তিস্তা চুক্তিতে স্বাক্ষর করা
.............................................................................................
ভারত সীমান্তে বেআইনি হত্যাকাণ্ড: বিচার চাইছে বাংলাদেশি পরিবার
.............................................................................................
নারী ও শিশুর নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে কে?
.............................................................................................
বন্ধুত্বই গড়বে সম্প্রীতির বাংলাদেশ
.............................................................................................
বানালিটির কুফল এবং এর পরে যা হয়
.............................................................................................
মধ্যবিত্তের কান্নার শেষ কোথায়?
.............................................................................................
Digital Truck Scale | Platform Scale | Weighing Bridge Scale
Digital Load Cell
Digital Indicator
Digital Score Board
Junction Box | Chequer Plate | Girder
Digital Scale | Digital Floor Scale
Dynamic Solution IT
POS | Super Shop | Dealer Ship | Show Room Software | Trading Software | Inventory Management Software
Accounts,HR & Payroll Software
Hospital | Clinic Management Software

|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
প্রধান সম্পাদক ও প্রকাশক : মো: তাজুল ইসলাম
প্রধান কার্যালয়: ২১৯ ফকিরের ফুল (১ম লেন, ৩য় তলা), মতিঝিল, ঢাকা- ১০০০ থেকে প্রকাশিত । ফোন: ০২-৭১৯৩৮৭৮ মোবাইল: ০১৮৩৪৮৯৮৫০৪, ০১৭২০০৯০৫১৪
Web: www.dailyasiabani.com ই-মেইল: [email protected]
   All Right Reserved By www.dailyasiabani.com Dynamic Scale BD