আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ভয়াবহ বন্যার আর্থিক ক্ষতি মোকাবিলায় পাকিস্তানের বৈদেশিক ঋণের কিস্তি পরিশোধ স্থগিত এবং দাতাদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে ঋণ পুনর্গঠন করা উচিত বলে মনে করছে জাতিসংঘ। শুক্রবার (২৩ সেপ্টেম্বর) সংস্থাটির একটি নীতিগত স্মারকলিপির বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ দৈনিক দ্য ফিন্যান্সিয়াল টাইমস।
জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি) ওই স্মারকলিপিটি চলতি সপ্তাহেই পাকিস্তান সরকারের কাছে পাঠাবে বলে খবরে উল্লেখ করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, দেশটির জন্য দাতাদের ঋণছাড়ের বিষয়টি বিবেচনা করা উচিত, যাতে পাকিস্তানি নীতিনির্ধারকরা ঋণ পরিশোধের চেয়ে দুর্যোগ মোকাবিলায় অর্থায়নে অগ্রাধিকার দিতে পারেন।
পাকিস্তান সরকারের ভাষ্যমতে, দেশটিতে সাম্প্রতিক বন্যায় আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ তিন হাজার কোটি মার্কিন ডলার ছাড়িয়ে গেছে। পাকিস্তানের পাশাপাশি জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস এই বন্যার জন্য জলবায়ু পরিবর্তনকে দায়ী করেছেন। তিনি বলেছেন, বৈশ্বিক কার্বন নিঃসরণে ভূমিকা খুব সামান্য হলেও এতে সবচেয়ে বেশি ভুগতে হয় পাকিস্তানের মতো দেশগুলোকে।
জাতিসংঘের স্মারকলিপিতে প্রস্তাবিত ঋণ পুনর্গঠন বা অদলবদলের (সোয়াপ) বিষয়ে আরও বলা হয়েছে, পাকিস্তান জলবায়ু পরিবর্তন-প্রতিরোধী অবকাঠামোয় বিনিয়োগ করতে সম্মত হওয়ার বিনিময়ে ঋণ পরিশোধে ছাড় দিতে পারে দাতারা।
দক্ষিণ এশিয়ার দেশটি দীর্ঘদিন থেকেই অর্থনৈতিক সংকটে ভুগছে। তার মধ্যে ভয়ংকর বন্যা আরও বড় বিপর্যয় সৃষ্টি করেছে। পাকিস্তানে এবারের ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৩ কোটি ৩০ লাখের বেশি মানুষ, যা গোটা অস্ট্রেলিয়ার জনসংখ্যার চেয়েও বেশি।
সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে অতীতের স্বাভাবিক গড়ের তুলনায় প্রায় তিনগুণ বৃষ্টিপাত হয়েছে পাকিস্তানে। এতে সৃষ্ট বন্যা ও বন্যা সম্পর্কিত অসুখ-বিসুখে দেশটিতে মারা গেছেন অন্তত ১ হাজার ৫৫৯ জন, যার মধ্যে ৫৫১টি শিশু এবং ৩১৮ জন নারীও রয়েছেন।
পাকিস্তানি কর্মকর্তারা আশঙ্কাপ্রকাশ করেছেন, বন্যাকবলিত এলাকাগুলোতে পানিবাহিত রোগের বিস্তার নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ার ঝুঁকি তৈরি হয়েছে।
বন্যার কারণে এ বছর পাকিস্তানের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি প্রত্যাশার তুলনায় অর্ধেক কমে যাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এ অবস্থায় বিশ্ব সম্প্রদায়ের কাছে সাহায্যের আবেদন জানিয়েছেন জাতিসংঘের মহাসচিব। তিনি বলেছেন, এই সংকট মোকাবিলায় পাকিস্তানের বিশাল অর্থনৈতিক সাহায্য দরকার।
সূত্র: রয়টার্স
|