মিয়া আবদুল হান্নান : বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উদ্দেশে বলেছেন, আজকে চলমান আন্দোলনে গত কয়েকমাসে আমাদের ৬ জন নেতাকর্মী শহীদ হয়েছেন। তাদের অপরাধ তারা গণসমাবেশ সফলের জন্য লিফলেট বিতরণ করছিলো। কিন্তু আমি পুলিশকে বলবো- বেআইনি হত্যাকাণ্ড চালাবেন না প্রত্যেক অন্যায় কাজের জবাব দিতে হবে। আজ রোববার বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবের মিলনায়তনে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এসব কথা বলেন।
জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের প্রেসিডেন্ট ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ৫৮তম জন্মদিন উপলক্ষে আলোচনা সভার আয়োজন করে জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন (জেডআরএফ)। জেডআরএফের নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক ডাঃ ফরহাদ হালিম ডোনারের সভাপতিত্বে ও বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের সদস্য সচিব ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি সাংবাদিক নেতা কাদের গণি চৌধুরীর সঞ্চালনায় সভায় বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রোভিসি অধ্যাপক ডঃ আ ফ ম ইউসুফ হায়দার, বিএনপির শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক এবিএম ওবায়দুল ইসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাদা দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক লুৎফর রহমান, ড্যাবের সভাপতি অধ্যাপক ডাঃ হারুন আল রশিদ, ইঞ্জিনিয়ার রিয়াজুল ইসলাম রিজু, ইঞ্জিনিয়ার মাহবুব আলম প্রমুখ। অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ব্যারিস্টার নাসিরউদ্দিন অসীম, ঢাবি সাদা দলের অধ্যাপক ডঃ আবদুর রশিদ, অধ্যাপক ডঃ মোঃ মোর্শেদ হাসান খান, অধ্যাপক ডঃ মোহাম্মদ ছিদ্দিকুর রহমান খান, শহিদুল ইসলাম জাহিদ, ডঃ শাহ এমরান, ডঃ আলী কাউসার, ডঃ জাফরুল আজম, জেডআরএফের অধ্যাপক ডঃ আবদুল করিম, ডাক্তার শাহ মুহাম্মদ আমান উল্লাহ আমান, অধ্যাপক ডঃ আবুল হাসনাত মোহাম্মদ শামীম, খান মোঃ মনোয়ারুল ইসলাম শিমুল, ডঃ মোঃ নুরুল ইসলাম, কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীম, ডাক্তার জহিরুল ইসলাম শাকিল, ডাক্তার মোঃ ফখরুজ্জামান ফখরুল, ডাক্তার মোঃ মেহেদী হাসান, কেএম সানোয়ার আলম, বিপ্লবুজ্জামান বিপ্লব, দবির উদ্দিন তুষার, ইঞ্জিনিয়ার আইয়ুব হোসেন মুকুল, ইঞ্জিনিয়ার রাকিবুল হাসান চৌধুরী, ইঞ্জিনিয়ার মোঃ মেহেদী হাসান, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান প্রমুখ। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, তারেক রহমান আমাদের বাতিঘর। যিনি দূরে থেকেও আমাদের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তারেক রহমান অসাধ্যকে সাধন করতে চলেছেন। তার নেতৃত্বে জাতি আজ ঐক্যবদ্ধ। তার আহ্বানে মানুষ রাস্তায় নেমেছে। আজকে চরম বৈরি পরিবেশে যাচ্ছি। এখানে মানুষ কথা বলতে পারেনা। ভোট দিতে পারেনা। স্বাধীনতার ৫০ বছর পরও আমরা অধিকার হারা। এখনো আমাদের অধিকার আদায়ে লড়াই করতে হচ্ছে। রাজপথে জীবন দিতে হচ্ছে। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আজকে সরকার ফ্যাসিবাদী কায়েম করেছে ১৫ বছর ধরে। এরমধ্যে আমাদের আশা দেখাচ্ছেন তারেক রহমান। তার সাংগঠনিক দক্ষতা আসাধারণ। তারেক রহমান মানুষের মাঝে জায়গা করে নিয়েছেন। আজকে আমাদের একটা পাহাড় পার হতে হচ্ছে। তারেক রহমান দলের মধ্যে যৌথ নেতৃত্ব তৈরি করেছেন। নতুন প্রজন্মের জন্য নতুনভাবে রাষ্ট্র নির্মাণের ধারণা দিয়েছেন তারেক রহমান। আজকে তরুণ প্রজন্মের অনেকে রাজনীতিতে আগ্রহ দেখায় না। তাদেরকে নতুন স্বপ্ন দেখাচ্ছেন তারেক রহমান। গণসমাবেশে মানুষ অংশ নিচ্ছে। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আরও বলেন আজকে খারাপ সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। পিনাক ও মুশফিকুল ফজল আনসারীর বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়েছে। আসলে সরকার আস্থা হারিয়ে ফেলেছে। তাদের পায়ের নিচে মাটি নেই। তারা গণশত্রুতে পরিণত হয়েছে। তারা এখন পুরোপুরি গণবিচ্ছিন্ন।
আবদুল্লাহ আল নোমান বলেন, তারেক রহমান বীরের বেশে বাংলাদেশে ফিরে আসবেন এবং গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার আন্দোলনের নেতৃত্ব দিবেন। তাকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। আবদুল্লাহ আল নোমান আরও বলেন, শেখ হাসিনার লোকজনের লুটপাট ও চুরি ঠেকাতে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে এই সরকারকে পতন ঘটাতে হবে। জনগণের প্রত্যাশা পূরণে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের কোনো বিকল্প নেই। এই আন্দোলনে আমাদের সঠিক নেতৃত্ব দিচ্ছেন দেশনায়ক তারেক রহমান। সেজন্য সারাদেশে আমাদের সমাবেশে লোকজন ঝাঁপিয়ে পড়ছে। আমাদেরকে আরো সংঘবদ্ধ হয়ে লড়াই চালিয়ে যেতে হবে। আবদুল্লাহ আল নোমান বলেন, আমরা বর্তমানে সরকার উৎখাতের সংগ্রামে আছি। তারেক রহমানের পরিচয় তার কর্মকান্ডেই মিলবে। তারেক রহমান যে প্রকৃত রাষ্ট্রনায়ক সেটা তার কর্মকান্ডেই মিলবে। আমাদেরকে বাঁচতে হলে লড়াইয়ের কোনো বিকল্প নেই। বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেন, তারেক রহমানের জন্মদিন পালন করি তাৎপর্যপূর্ণ হিসেবে। তারেক রহমান দেশের ক্রান্তিকালে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। যেমনটি তার মা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া দেশের হাল ধরেছিলেন। আমরা জাঁকজমকপূর্ণভাবে তারেক রহমানের জন্মদিন পালন করিনা। বিশেষ করে ২০১৮ সালে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া কারাবন্দী হওয়ার পর থেকে আমরা জাঁকজমকপূর্ণভাবে তার জন্মদিন পালন করিনা। কারণ একজন রাষ্ট্র নায়কের যে দৃষ্টি সেটি তারেক রহমানের রয়েছে। তারেক রহমান বর্তমানে ক্রান্তিকালে তার জন্মদিন উপলক্ষে কোনো ধরনের কেক কাটা বা আনন্দময় অনুষ্ঠান করতে বারণ করেছেন। এটিই হচ্ছে একজন রাষ্ট্র নায়কের দূরদর্শিতা। কারণ তারেক রহমান দেশের মানুষের মনের কষ্ট বোঝেন। নেতাকর্মীদের কষ্ট বোঝেন। রুহুল কবির রিজভী আরও বলেন, আমাদের অনেক সাথী হারিয়ে যাচ্ছে। যে কারণে আমরা শোকাহত পরিবেশে তারেক রহমানের জন্মদিন পালন করছি। আমরা আশা করছি তারেক রহমানের যোগ্য নেতৃত্বে আগামীদিনে পরিবর্তন সাধন করতে পারবো ইনশাআল্লাহ। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নানরকম কল্যাণমূলক কর্মকান্ড আমরা দেখেছি। যেগুলো সচরাচর প্রকাশ্যে হয়না। অনেক নেতাকর্মীর হাত, পা বা অন্য অঙ্গ প্রতিস্থাপন করা হয়েছে জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে। তিনি সমাজসেবা ও জনকল্যাণমূলক কাজের মাধ্যমে তিনি রাজনীতি করছেন। সেজন্য তারেক রহমানের ওপর নিপীড়ন নির্যাতনের খড়গ নেমে আসে। বিগত ১৪ বছর ধরে আওয়ামী লীগের দ্বারা বিরোধী দলের নেতাকর্মীরা নিপীড়ন নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় ব্যাক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এরপরই তারেক রহমান নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তার দক্ষতাপূর্ণ নেতৃত্ব নেতাকর্মীদের ব্যাপকভাবে উজ্জীবিত করছে। তারেক রহমান আমাদের আস্থার জায়গা। আজকে শেখ হাসিনা বলেন দুর্ভিক্ষের কথা। এটা কোনো রাষ্ট্র নায়ক বলতে পারেন? আসলে তাকে কারো কাছে জবাবদিহি করতে হয় না। সেজন্যই এসব বলেছেন। তিনি তো অবৈধ প্রধানমন্ত্রী।
|