অনলাইন ডেস্ক : অমর একুশে বইমেলার সপ্তমদিনে নতুন বই এসেছে ১০৮টি। মেলার বিভিন্ন স্টলে পাওয়া যাচ্ছে এসব বই। মঙ্গলবার (৭ ফেব্রুয়ারি) বাংলা একাডেমির জনসংযোগ দপ্তর থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
সপ্তমদিনে আসা ১০৮ নতুন বইয়ের মধ্যে কবিতার বই ৩১টি, উপন্যাস ১৬টি, গল্প ১৩টি, প্রবন্ধ দুটি, গবেষণা দুটি, শিশুসাহিত্য দুটি, জীবনী পাঁচটি, ভ্রমণবিষয়ক একটি, ইতিহাস বিষয়ক একটি, রাজনীতি একটি, স্বাস্থ্যবিষয়ক একটি, অনুবাদ দুটি, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক তিনটি, বিজ্ঞানবিষয়ক তিনটি, সায়েন্স ফিকশন একটি ও অন্যান্য ১৩টি বই রয়েছে।
এদিন বিকেল ৪টায় বইমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় স্মরণ। এতে ‘মাহবুব তালুকদার’ শীর্ষক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন গাজী রহমান। ‘আলী ইমাম’ শীর্ষক আহমাদ মাযহার লিখিত প্রবন্ধ তার অনুপস্থিতিতে পাঠ করেন মোকারম হোসেন। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন ড. নিমাই মÐল, আমীরুল ইসলাম এবং ওমর কায়সার। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ফরিদুর রেজা সাগর।
প্রাবন্ধিকেরা বলেন, জীবনের বিচিত্র বিকাশে এবং ব্যক্তিত্বের বহুতর প্রকাশে মাহবুব তালুকদারের অবস্থান তার অবিচল দৃঢ়তা এবং আত্মবোধের প্রতিপূর্ণ আস্থাই প্রমাণ করে। তিনি বাংলাদেশের কথাসাহিত্যের অন্যতম প্রধান রূপকার ও ছোটোগল্পের পারঙ্গম লেখক।
অপরদিকে, পাঠ্যপুস্তকের নানা অনুশাসনের বাইরে শিশু-কিশোরদের অনাবিল আনন্দদান ও তাদের জ্ঞানতৃষ্ণা মেটানোর দায়িত্ব নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করে গেছেন আলী ইমাম। তার শিশুসাহিত্যপ্রীতি কেবল লেখালেখিতেই সীমাবদ্ধ ছিল না, বিস্তৃত ছিল বেতার-টিভির ছোটোদের অনুষ্ঠান পরিচালনা ও উপস্থাপনা থেকে শুরু করে শিশুসংগঠনের প্রতিষ্ঠা ও বিকাশ পর্যন্ত।
আলোচকরা বলেন, গভীর অনুভূতিসম্পন্ন সাহিত্যিক মাহবুব তালুকদারের লেখায় মানুষের জীবন, অন্তরের জগতের কথা উঠে এসেছে। অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে তিনি যেমন সমাজসচেতন ছড়া লিখেছেন, তেমনি আবার গভীর ভালোবাসার কবিতাও লিখেছেন। উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেও বাংলাসাহিত্যে তিনি তার প্রতিভার সাক্ষর রেখে গেছেন।
সাহিত্য-ব্যক্তিত্ব আলী ইমাম ছিলেন বহুমাত্রিক, চঞ্চল ও প্রাণবন্ত একজন মানুষ। বিজ্ঞানের এমন কোনো ক্ষেত্র নেই যেখানে তার আগ্রহ নির্দিষ্ট হয়নি। বাংলা শিশুসাহিত্যের অনন্য প্রাণবান লেখক আলী ইমাম যে-সাহিত্য সৃষ্টি করেছেন তা শিশুদের বিশ্ব নাগরিক হয়ে বেড়ে উঠতে সাহায্য করবে।
সভাপতির বক্তব্যে ফরিদুর রেজা সাগর বলেন, আলী ইমাম ও মাহবুব তালুকদার বাংলাসাহিত্যের উজ্জ্বল দুটি নাম। তারা তাদের চিন্তা, চেতনা ও সাহিত্যকর্ম দিয়ে আমাদের মধ্যে চিরকাল বেঁচে থাকবেন।
আজ লেখক বলছি অনুষ্ঠানে নিজেদের নতুন বই নিয়ে আলোচনা করেন আবুল কাসেম, সাকিরা পারভীন, জালাল ফিরোজ ও পলাশ মাহবুব।
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে কবিতা পাঠ করেন কবি জাহিদুল হক, গোলাম কিবরিয়া পিনু ও ইউসুফ রেজা। আবৃত্তি পরিবেশন করেন আবৃত্তিশিল্পী কাজী মাহতাব সুমন, নায়লা তারান্নুম চৌধুরী ও সংগীতা চৌধুরী। সংগীত পরিবেশন করেন শিল্পী তপন মজুমদার, মনোতোষ চক্রবর্তী, শামসেল হক চিশতি, এ এইচ এম সালাউদ্দিন, অণিমা মুক্তি গোমেজ, মো. মোখলেসুর রহমান ও মো. মুরাদ হোসেন। যন্ত্রাণুষঙ্গে ছিলেন দীপক কুমার দাস (তবলা), রবিনস্ চৌধুরী (কী-বোর্ড), রতন কুমার রায় (দোতারা), মো. হাসান আলী (বাঁশি) ও বিশ্বজিৎ সেন (মন্দিরা)।
|