ডা. নার্গিস মার্জান এমবিবিএস
পরিচালক, হামদর্দ ল্যাবরেটরীজ (ওয়াকফ) বাংলাদেশ এবং সহযোগী অধ্যাপক, হামদর্দ বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ। আধুনিক চিকিৎসায় উচ্চতর ডিগ্রি অর্জনের পরও অল্টারনেটিভ চিকিৎসায় যুক্ত থেকে এর আধুনিকায়ন ও উৎকর্ষতায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন।
প্রশ্নঃ মানুষ এক সময় তারে রোগ নিরাময়ের জন্য প্রকৃতির উপরই নির্ভর করত। কিন্তু পরবর্তীতে তারা ক্রমান্বয়ে সিন্থেটিক ওষুধ ব্যবহার শুরু করে। বর্তমানে তারা কেন আবার প্রাকৃতিক ওষুধের দিকে ঝুঁকে পড়ছে?
উত্তরঃ দেখুন একটি সময় ছিল যখন গাছ-পালা, শিকর-বাকর দিয়ে প্রদত্ত চিকিৎসাই ছিল একমাত্র চিকিৎসা ব্যবস্থা। মানব জাতির আবির্ভাবের পূর্ব হতেই রোগ নিরাময়ে এসকল প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এসময় প্রকৃতিতে বিচরণকারী কোন কোন প্রাণী কোন কারণে অস্বস্থি বোধ করলে কিংবা অসুস্থ হয়ে পড়লে তারা তাদের আশে-পাশে বিদ্যমান লতা-গুল্ম, পাতা, ফুল, ফল, ছাল-বাকল, গাছ-পালা সেবন করত। কখনো কখনো তারা সুফল পেত আবার কখনো কখনো তারা সুফল পেত না। সুফল পেলে ঐসকল প্রাণী মনে রাখতো তারা কোন গাছ সেবন করে সুফল পেয়েছে। পরবর্তীতে তারা অসুস্থ হয়ে পড়লে ঐ গাছের শরণাপন্ন হতো। পৃথিবীতে মানব জাতির আবির্ভাবের পরে ঠিক এভাবেই মানুষ রোগ মুক্তির জন্য গাছ-পালা নির্বাচন করেছে। আপনি নিশ্চয়ই শুনে থাকবেন, জঙ্গলে সাপ ও বেজির লড়াইয়ে সাপ বেজিকে দংশন করলে বেজি অতি দ্রুত জঙ্গলের গভীরে চলে যায় এবং নির্দিষ্ট গাছের পাতা সেবন করে, যারফলে বেজির শরীরে সাপের বিষের কোন প্রভাব পড়ে না। এছাড়াও মাঝে মাঝে বিড়াল ঘাস খায়। ঘাস বিড়ালের দৃষ্টিশক্তি অক্ষুন্ন রাখে বলেই বিড়াল ঘাস খায়। ইতিহাস থেকে জানা যায় প্রায় পাঁচ হাজার বছর আগে এই উপ-মহাদেশে প্রাকৃতিক চিকিৎসার চর্চা শুরু হয়ে ব্যাপক সমৃদ্ধশালী হয়। এসময় হামান-দিস্তাই ছিল এসকল ওষুধ তৈরীর একমাত্র উপায়। আধুনিক ওষুধের মত সিরাপ, অয়েন্টমেন্ট, ট্যাবলেট কিংবা ক্যাপসুল এর মত কোন ডোসেজ ফর্মে এই ওষুধ তৈরী হত না। প্রাকৃতিক এই ওষুধের সবচেয়ে বড় ইতিবাচক দিক হলো এর কোন ধরনের পাশর্^-প্রতিক্রিয়া নেই। তাই বছরের পর বছর পরম নির্ভরতায় শতভাগ আস্থার সহিত মানুষ এওষুধ সেবন করে আসছে।
প্রযুক্তির উৎকর্ষের ফলে শিল্প বিপ্লব সংঘটিত হয়। জেমস ওয়াটের আবিষ্কৃত বাষ্প চালিত যন্ত্রের ব্যবহারের ফলে বড় বড় ফ্যাক্টরি গড়ে উঠে এবং শিল্পোৎপাদনের হার বৃদ্ধি পায়। এসময় শিল্প কারখানায় সিন্থেটিক বিভিন্ন আকর্ষণীয় পণ্য উৎপাদিত হতে থাকে। নতুনত্বের প্রতি মানুষের প্রবল আগ্রহের ফলে মানুষ এসকল সিন্থেটিক পণ্য ব্যবহারে আগ্রহী হয়ে উঠে। বাণিজ্যিক প্রচারণা ও ঔপনিবেশিক শাসনের ফলে ধীরে ধীরে হারিয়ে যেতে থাকে হাজার বছরের ঐতিহ্যে লালিত এই চিকিৎসা পদ্ধতি, তদস্থলে প্রতিষ্ঠিত হয় সিন্থেটিক মেডিসিনের প্রভাব। থমকে দাঁড়ায় আমাদের দেশীয় চিকিৎসার ধারা।
সময়ের পরিক্রমায় বিভিন্ন প্রতিকূলতা পেরিয়ে ন্যাচারাল মেডিসিন আজ উচ্চমাত্রায় অবস্থান করছে। গত কয়েক দশকে এর উন্নতিতে বিশ^ব্যাপী এক বিস্ময়কর আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। বিশ্বব্যাপী মানুষ পুনরায় ন্যাচারাল মেডিসিনের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়ছে। এর কারণ হলো- মানুষ এখন অনেক অনেক বেশি স্বাস্থ্য সচেতন। তারা এমন একটি স্বাস্থ্য সেবা চায় যেখানে সফল রোগ নিরাময়ের পাশাপাশি স্বাস্থ্য নিরাপত্তার বিষয়টিও প্রাধান্য পাবে। জ্ঞান-বিজ্ঞানের উৎকর্ষ এবং অবাদ তথ্যের এই যুগে মানুষ সিন্থেটিক ওষুধের ক্ষতিকর মারাত্মক পাশর্^-প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে জানতে পেরেছে, জানতে পেরেছে প্রাকৃতিক ওষুধের পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া নেই বললেই চলে। থাকলেও তা তুলনামূলকভাবে কম এবং প্রাকৃতিক ওষুধ দীর্ঘমেয়াদী ও অত্যন্ত কার্যকরী। একারণেই মানুষ পুনরায় প্রাকৃতিক ওষুধের প্রতি আস্থাশীল হয়ে পড়ছে।
তাছাড়াও প্রাকৃতিক চিকিৎসায় রোগ নিরাময়ে শুধুমাত্র রোগীর লক্ষণের উপর গুরুত্বারোপ না করে রোগীর দেহ, মন, আত্মার, সামাজিক, পারিপার্শ্বিক এবং পরিবেশগত বিভিন্ন দিক বিচার-বিশ্লেষণ করে রোগের মূল কারণ খুজে বের করে রোগটি সমূলে উপশমের জন্য চিকিৎসা প্রদান করা হয়। এতে রোগী দীর্ঘমেয়াদী উপকার লাভ করে। ফলে রোগী সাধারণ ক্রমান্বয়ে প্রাকৃতিক চিকিৎসার দিকে ঝুকে পড়ছে।
এছাড়াও প্রাকৃতিক চিকিৎসা ব্যবস্থায় মানুষের রোগের চিকিৎসার চেয়ে রোগ প্রতিরোধের উপর অধিক গুরুত্বারোপ করা হয়। এতে মানুষের খাদ্য, পথ্য, পুষ্টি, ব্যায়াম এবং লাইফস্টাইল পরিবর্তনের মাধ্যমে সুস্থতার উপর জোড় দেওয়া হয়ে থাকে। বিশ্বব্যাপী বর্তমান জেনারেশনের নিকট এই চিকিৎসা পদ্ধতি অধিক গ্রহণযোগ্য ও ফলপ্রসূ বিবেচিত হওয়ায় তারা অধিকহারে প্রাকৃতিক চিকিৎসকদের দ্বারস্থ হচ্ছেন। এছাড়াও অ্যান্টিবায়োটিকস বিভিন্ন সিন্থেটিক ওষুধ রেজিস্ট্যান্ট হওয়ায়, সিন্থেটিক ওষুধের প্রতি রোগীর নির্ভরতা (আসক্তি সৃষ্টি) সৃষ্টি হওয়া, ওষুধের দুষ্প্রাপ্যতা এবং চিকিৎসার ব্যয়বহুলতার জন্যও মানুষ ধীরে ধীরে প্রাকৃতিক ওষুধের প্রতি আকৃষ্ট হচ্ছে।
প্রশ্নঃ আপনিতো অল্টারনেটিভ মেডিসিনের উন্নয়নে অসামান্য অবদান রেখে চলেছেন। আপনার এই কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ কোনো সম্মাননা বা পদক পেয়েছেন কী?
উত্তরঃ ধন্যবাদ আপনাকে। খেুন আমি এই চিকিৎসা ব্যবস্থার উপর যাই করছি, তা সম্পর্ণ প্রাকৃতিক ওষুধের প্রতি ব্যক্তিগত আগ্রহের কারণেই করছি। কারণ আমি পারিবারিকভাবেই খুব ছোট বয়স থেকেই এই চিকিৎসা ব্যবস্থার উপর জ্ঞান লাভ করি। এরপর উচ্চমাধ্যমিক পর্যায় শেষে কিন্তু আমি প্রথমেই অল্টারনেটিভ চিকিৎসা ব্যবস্থার ডিইউএমএস কোর্সে ভর্তি হই। যদিও পরবর্তীতে এমবিবিএস ডিগ্রি অর্জন করি। এর মধ্যে আমি ডিইউএমএস কোর্সে এত বেশি ইন্টারেস্ট পাই যে রেকর্ড পরিমাণ নম্বর পেয়ে আমি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হই। এতে আমাকে গোল্ড মেডেল প্রদান করা হয়। পরবর্তীতে আমি অল্টারনেটিভ মেডিসিনের বিভিন্ন গ্রন্থ রচনার জন্য ‘বাংলাদেশ দেশীয় চিকিৎসক সমিতি’ কর্তৃক প্রদত্ত ‘বেস্ট রাইটার অ্যাওয়ার্ড’ লাভ করি। এছাড়াও ইউনানী এবং আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা বিজ্ঞানে অসামান্য অবদানের জন্য হামর্দ ল্যাবরেটরীজ ওয়াক্ফ বাংলাদেশ আমাকে ইউনানী এন্ড আয়ুর্বেদিক মেডিসিনাল অ্যাওয়ার্ড প্রদান করেন।
প্রশ্নঃ অল্টারনেটিভ চিকিৎসা ব্যবস্থা কী? বাংলাদেশে কী কী অল্টারনেটিভ চিকিৎসা ব্যবস্থা প্রচলিত রয়েছে? কোনো একটি দেশে সমসাময়িককালীন বহুল প্রচলিত চিকিৎসা ব্যবস্থার পাশাপাশি বিদ্যমান অন্য সকল চিকিৎসা ব্যবস্থাকে বিকল্প চিকিৎসা ব্যবস্থা হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়ে থাকে। বাংলাদেশে বর্তমানে সরকার অনুমোদিত চার পদ্ধতির চিকিৎসা ব্যবস্থা প্রচলিত রয়েছে। যেমন- (১) অ্যালোপ্যাথিক চিকিৎসা ব্যবস্থা (২) ইউনানী চিকিৎসা ব্যবস্থা (৩) আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা ব্যবস্থা এবং (৪) হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা ব্যবস্থা। তন্মধ্যে ইউনানী, আয়ুর্বেদিক ও হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা ব্যবস্থাকে অল্টারনেটিভ চিকিৎসা ব্যবস্থা হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। অল্টারনেটিভ চিকিৎসা ব্যবস্থায় মূলতঃ উদ্ভিজ্জ, প্রাণীজ, খনিজসহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক উপাদান, খাদ্য, পথ্য, আবহাওয়া পরিবর্তন এবং জীবনযাত্রার পরিবর্তনের মাধ্যমে মানুষের রোগ উপশম করা হয়। অল্টারনেটিভ চিকিৎসা পদ্ধতিতে চিকিৎসক প্রধানতঃ রোগীর আতœনিরাময় শক্তিকে পুনরুদ্ধার এবং তার শরীরের ভারসাম্য পুনঃপ্রতিষ্ঠার মাধ্যমে রোগ উপশমের লক্ষ্য নিয়ে চিকিৎসা সেবা প্রদান করেন।
তবে উপরোক্ত তিনটি পদ্ধতি ছাড়াও বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন প্রকার অল্টারনেটিভ বা বিকল্প চিকিৎসা পদ্ধতি প্রচলিত রয়েছে। যেমন- কাপিং থেরাপী, আকু প্রেসার, আকুপাংচার, লিচ থেরাপী, মেডিটেশন, রেজিমেন্টাল থেরাপী, মিউজিক থেরাপী, হাইড্রো থেরাপী, অ্যারোমা থেরাপী, সানবাথ, স্টিমবাথ, কায়রো-প্র্যাক্টিস, ব্যাচ ফ্লাওয়ার থেরাপী, হিপনো থেরাপী, ম্যাসাজ থেরাপী, রিফ্লেক্সোলজি, মাইন্ড-বডি থেরাপী, ইত্যাদি।
প্রশ্নঃ দেশে-বিদেশে অল্টারনেটিভ চিকিৎসা ব্যবস্থার বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে আপনার ধারনা কী? বিগত কয়েক দশকে অল্টারনেটিভ চিকিৎসা ব্যবস্থার ওষুধ উচ্চ শিখরে তার অবস্থান অধিষ্ঠিত করেছে। অল্টারনেটিভ চিকিৎসা পদ্ধতি প্রাগৈতিহাসিক কালের প্রেক্ষাপটে বিজ্ঞানের কষ্টি পাথরে যাচাই হয়ে সুপ্রতিষ্ঠা লাভ করেছে। বিগত কয়েক দশকে অল্টারনেটিভ চিকিৎসা ব্যবস্থা সারা বিশ্বে মহা আলোড়ন ও নবজাগরণ সৃষ্টি করেছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডঐঙ) বিশ্বব্যাপী অল্টারনেটিভ চিকিৎসা ব্যবস্থার যৌক্তিক ব্যবহারের লক্ষ্যে এর পরবর্তী উন্নয়ন ও সম্প্রসারনকে জোরালো সমর্থন জানিয়েছে। তারা বলেছে এই ব্যাপারে কোন সন্দেহের অবকাশ নাই যে চিকিৎসা বিজ্ঞানের এই শাখাটি সবার জন্য স্বাস্থ্য বিষয়ক আমাদের কাংখিত লক্ষ্য অর্জনের ক্ষেত্রে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে এবং রাখবে। আজ তাই সচেতন জনগণঅল্টারনেটিভ ওষুধকে নিরাপদ ও নির্ভরযোগ্য মনে করছে। তাই বর্তমানে বিশ্বব্যাপী অল্টারনেটিভ চিকিৎসা ব্যবস্থার নবজাগরনের জোয়ার সৃষ্টি হয়েছে।
প্রশ্নঃ বাংলাদেশে অল্টারনেটিভ চিকিৎসা ব্যবস্থার শিক্ষা পদ্ধতির বর্তমান চিত্র সম্পর্কে আমাদের একটু বলুন।
ব্যাচেলর ডিগ্রী পর্যায়ের শিক্ষার বর্তমান চিত্র- দেশে বর্তমানে ৮টি প্রতিষ্ঠান শিক্ষার্থীদের অল্টারনেটিভ পদ্ধতির ব্যাচেলর ডিগ্রী প্রদান করছে। তন্মধ্যে ইউনানী/আয়ুর্বেদিক বিষয়ে ব্যাচেলর ডিগ্রী প্রদান করছে ৪টি প্রতিষ্ঠান (যেমন- সরকারী ইউনানী এন্ড আয়ুর্বেদিক ডিগ্রী কলেজ, হামদর্দ ইনস্টিটিউট অব ইউনানী এন্ড আয়ুর্বেদিক মেডিসিন, রওশন জাহার ইস্টার্ন মেডিকেল কলেজে ও হাসপাতার, লক্ষীপুর এবং হামদর্দ ইউনানী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল, বগুড়া) এবং ৪টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা পদ্ধতির ব্যাচেলর ডিগ্রী প্রদান করছে।
ডিপ্লোমা পর্যায়ের শিক্ষার বর্তমান চিত্র- দেশে ডিপ্লোমা ইউনানী মেডিকেল কলেজ ১৭ টি, ডিপ্লোমা আয়ুর্বেদিক মেডিকেল কলেজ ১০টি এবং ডিপ্লোমা হোমিওপ্যঅথিক মেডিকেল কলেজ ৫৯ টি রয়েছে।
বাংলাদেশে অল্টারনেটিভ চিকিৎসা ব্যবস্থার ওষুধ শিল্প প্রতিষ্ঠানের বর্তমান চিত্র- দেশে অল্টারনেটিভ চিকিৎসা পদ্ধতিতে চিকিৎসকগণ উদ্ভিজ্জ, প্রাণীজ, খনিজ এবং অন্যান্য ওষুধি উপকরণ সমূহ ঔষধ হিসেবে মূলতঃ তিনভাগে ব্যবহৃত হয়ে করে থাকেন। যেমন- (১)ঔষুধি উপাদান সরাসরি ঔষধ হিসেবে। (২) আংশিক প্রক্রিয়াজাতকরণের পর ঔষধ হিসেবে এবং (৩) বিভিন্ন শিল্প কারখানায় ঔষধি উপাদানসমূহ সম্পূর্ণ প্রক্রিয়াজাতকরণের মাধ্যমে প্রস্তুতকৃত বিভিন্ন ডোসেস ফর্মের ঔষধ হিসেবে।বাংলাদেশে বর্তমানে প্রায় ৪৫০টি ইউনানী/আয়ুর্বেদিক ঔষধ শিল্প প্রতিষ্ঠান এবং হোমিওপ্যাথিক ল্যাবরেটরি রয়েছে প্রায় ১০০। যার মাধ্যমে সিরাপ, ট্যাবলেট, ক্যাপসুল, অয়েন্টমেন্টসহ বিভিন্ন আধুনিক পরিবেশনায় ঔষধ উৎপাদন ও বিপণন হয়ে আসছে।
প্রশ্নঃ বাংলাদেশে অল্টারনেটিভ চিকিৎসা পেশায় নিয়োজিত চিকিৎসকদের পেশাগত অবস্থার বর্তমান চিত্র কেমন? দেশে বিভিন্ন সরকারী হাসপাতালে ২৫০ জনের মতো অল্টারনেটিভ উচ্চশিক্ষিত চিকিৎসক কর্মতর রয়েছে। এছাড়াও দেশের প্রায় ৫৫০টি অল্টারনেটিভ ওষুধ শিল্প প্রতিষ্ঠানে উক্ত অল্টারনেটিভ চিকিৎসকগণ ওষুধ উৎপাদনের সাথে জড়িত। হামদর্দ দেশব্যাপী প্রায় ৩০০ চিকিৎসা কেন্দ্র স্থাপন করেছে। এর প্রতিটিতেই অল্টারনেটিভ চিকিৎসা ব্যবস্থার (ইউনানী/আয়ুর্বেদিক) চিকিৎসকগণ চিকিৎসা সেবা প্রদান করছেন। এছাড়াও দেশের অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের চিকিৎসা কেন্দ্রে এবং ব্যক্তিগত চেম্বারে অসংখ্য অল্টারনেটিভ চিকিৎসক দেশব্যাপী রোগীদের চিকিৎসা সেবা প্রদান করে যাচ্ছেন এবং উন্নত জীবন-যাপন করছেন। ফলশ্রুতিতে বর্তমানে দেশের মেধাবী শিক্ষার্থীগণ অধিক হারে অল্টারনেটিভ চিকিৎসা ব্যবস্থার প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠছে। তার এই পদ্ধতির শিক্ষা এবং গবেষণায় আতœনিয়োগ করছে। এইধারা চলতে থাকলে অচিরেই বাংলাদেশে অল্টারনেটিভ চিকিৎসা ব্যবস্থার অভূতপূর্ব সাফল্য অর্জিত হবে।
প্রশ্নঃ আপনার দীর্ঘ অভিজ্ঞতা থেকে আমাদের বলবেন কি অল্টারনেটিভ চিকিৎসায় কোন্ রোগসমূহে অধিক সফলতা পাওয়া যাচ্ছে, অর্থাৎ কোন্ রোগীরা চিকিৎসা গ্রহণের জন্য অধিক হারে অল্টারনেটিভ চিকিৎসকদের নিকট আসছেন? অল্টারনেটিভ চিকিৎসকগণ তাদের প্রতিদিনের প্র্যাক্টিসে ডায়াবেটিস, হৃদরোগসহ বিভিন্ন জটিল ও কঠিন রোগে সাফল্যজনকভাবে চিকিৎসা প্রদান করছেন। রোগীগণও আস্থার সাথে ওষুধ সেবন করছেন এবং কোন প্রকার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া ছাড়াই উপকার পাচ্ছেন। এমতাবস্থায় অল্টারনেটিভ চিকিৎসায় কোনো বিশেষ রোগের ক্ষেত্রে বেশি নির্ভর করা উচিত সেভাবে বিষয়টি বলা কষ্টকর বলে আমি মনে করি। তবে বর্তমানে পরিপাকতন্ত্র, শ্বসনতন্ত্র, হেপাটোবিলিয়ারি সিস্টেম, ইউরিনারি সিস্টেম, পুরুষ এবং স্ত্রী প্রজননতন্ত্র এবং অপুষ্টি ও বাত-ব্যথার রোগীগণ অধিক হারে অল্টারনেটিভ চিকিৎসকদের নিকট চিকিৎসার জন্য আসছেন এবং চিকিৎসা গ্রহণ করে ভাল ফলাফল পাচ্ছেন।
প্রশ্নঃ বর্তমানে অল্টারনেটিভ মেডিসিনের বিশ্ববাজার সম্পর্কে আপনার মতামত কী? বিগত কয়েক দশকে বিশ্বব্যাপী হার্বাল ওষুধের এক নবজাগরণের জোয়ার সৃষ্টি হয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, বর্তমানে সারা বিশ্বের প্রায় ৮০ ভাগ মানুষ কোন না কোন ভাবে হার্বাল ওষুধ ব্যবহার করছে। ১৯৮০ সালে হার্বাল মেডিসিনের বিশ্ববাজার ছিল ৪.৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। ১৯৯০ সালে ১৫.৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার (১০ বছরে প্রবৃদ্ধির হার ২৪৫%)। ২০০০ সালে ৭০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার (১০ বছরে প্রবৃদ্ধির হার ৩৫১%)ও ২০১০ সালে তা বেড়ে দায়িয়েছে ৪০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার (১০ বছরে প্রবৃদ্ধির হার ৪৭১%)।বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা পূর্বাভাস দিয়েছে ২০৫০ সালে হার্বাল প্রোডাক্টের বিশ্ব বাজার দাঁড়াবে ৫ (পাঁচ) ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার (৪০০ লক্ষ কোটি টাকা প্রায়)।(তথ্যসূত্র-ড. হাকীম রফিকুল ইসলাম)।এমনকি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বর্তমানে ডায়াবেটিস, হাইপারটেনশন, অ্যাজমা, ক্যান্সার, এইডসসহ বিভিন্ন জটিল ও কঠিন সংক্রামক ব্যাধির অল্টারনেটিভ ওষুধ উদ্ভাবনের খবর পাওয়া যাচ্ছে। পার্শ্ববর্তী দেশসমূহে হার্বাল ঔষধ ইন্হেলার, ইন্জেকশন ও স্প্রে ইত্যাদি অত্যাধুনিক ফর্মের উৎপাদন ও বাজারজাত হচ্ছে।
প্রশ্নঃ বাংলাদেশে অল্টারনেটিভ মেডিসিনের বর্তমান ও ভবিষ্যত বাজার সম্পর্কে একটু বলুন? কনভেনশনাল অ্যলোপ্যাথিক ওষুধের ব্যাপক পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া, ব্যয়বহুলতা এবং সহজলভ্য না হওয়ায় বর্তমানে মানুষ অ্যালোপ্যাথিক চিকিৎসা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে। পক্ষান্তরে অল্টারনেটিভ চিকিৎসা নিরাপদ, কার্যকরী, অপেক্ষাকৃত সাশ্রয়ী মূল্য এবং সহজলভ্য হওয়ায় এটি মানুষের আস্থা ফিরে পেতে সক্ষম হয়েছে। বর্তমানে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাসহ বিশ্বের অসংখ্য দেশে অসংখ্য গবেষণাগারে এই ওষুধের উপর ব্যাপক গবেষণা শুরু হয়েছে। বর্তমানে অনেক জটিল ও কঠিন রোগের হার্বাল ওষুধ আবিষ্কৃত হয়েছে। বাংলাদেশেও হামদর্দ বিশ্ববিদ্যালয়ে ইউনানী/আয়ুর্বেদিক ইনস্টিটিউট স্থাপনের মাধ্যমে গবেষণার নতুন দ্বার উন্মুচিত হয়েছে। মেধাবী শিক্ষার্থীরা এই পদ্ধতির প্রতি আগ্রহী হচ্ছে, উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ ও গবেষণায় মনোনিবেশ করছে। পাশাপাশি এই ব্যবস্থার ওষুধের গুণগত মান বৃদ্ধি পেয়েছে এবং আধুনিক ও উন্নত পরিবেশনায় ওষুধ উৎপাদন ও বাজারজাত হচ্ছে। আমি আশাবাদি এই ধারা অব্যহত থাকলে অচিরেই দেশের চাহিদা পূরণ করে আমরা বিদেশে ওষুধ রপ্তানী করে একদিকে যেমন হাজার হাজার কোটি টাকার বিদেশী মুদ্রা আয় করতে সক্ষম হবো, পাশাপাশি দেশের বেকারত্ব ও দারিদ্র দূরীকরণেও অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে অল্টারনেটিভ চিকিৎসা ব্যবস্থা। বাংলাদেশে বিগত ১৯৮০ সালে ছিল ১ কোটি টাকা। ১৯৯০ সালে ৮ কোটি টাকা (১০ বছরে প্রবৃদ্ধি ৭০০%)। ২০০০ সালে ৮০ কোটি টাকা (১০ বছরে প্রবৃদ্ধির হার ৯০০%)। ২০১০ সালে বেড়ে দাড়ায় ১০০০ কোটি টাকা (১০ বছরে প্রবৃদ্ধি ১১৫০%)।বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা পূর্বাভাস মতে ২০৫০ সালে হার্বাল প্রোডাক্টের বিশ্ব বাজার দাঁড়াবে ৫ (পাঁচ) ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার (৪০০ লক্ষ কোটি টাকা প্রায়)। আমরা যদি সেই সুযোগ গ্রহণ করতে পারি তবে বাংলাদেশের জনসংখ্যা বিশ্বের মোট জনসংখ্যার প্রায় ২.৫% হারে বিশ্ব হার্বাল বাজারে নিজেদের শেয়ার নিশ্চিত করা গেলে ২০৫০ সালে বাংলাদেশে হার্বাল প্রোডাক্ট দিয়ে ১০ লক্ষ কোটি টাকা আয় করতে পারবো।
প্রশ্নঃকি কি কারণে বাংলাদেশ অল্টারনেটিভ চিকিৎসা বিজ্ঞানের জন্য অধিক সম্ভাবনাময় দেশ হিসেবে পরিগণিত? বাংলাদেশের মানুষ বংশানুক্রমিকভাবেই অল্টারনেটিভ চিকিৎসা ব্যবস্থার প্রতি আস্থাশীল। যুগযুগ ধরেই আমাদের পূর্ব পুরুষগণ তাদের জটিল ও কঠিন সকল রোগব্যাধীতে অল্টারনেটিভ চিকিৎসাই গ্রহণ করে সুস্থতা লাভ করেছেন। এমনকি বিগত ৯০ এর দশকের পূর্ব পর্যন্ত যখন অ্যলোপ্যাথিক ঔষধ এতটা পরিচিতি পায়নি তখন পর্যন্তও অল্টারনেটিভ চিকিৎসা ব্যবস্থাই ছিল রোগ নিরাময়ের একমাত্র উপায়। এছাড়াও নি¤œলিখিত বিভিন্ন কারণে বাংলাদেশ অল্টারনেটিভ চিকিৎসা ব্যবস্থার জন্য অনেক সম্ভাবনাময় একটি দেশ। যেমন- ১। এদেশে রয়েছে ওষুধি উদ্ভিদের এক বিশাল প্রাকৃতিক ভান্ডার। বাংলাদেশে প্রায় ৫০০০ (পাঁচ হাজার) উদ্ভিদ প্রজাতির মধ্যে বিভিন্ন রোগে কার্যকরী ১০০০ (এক হাজার) এরও অধিক মূল্যবান ওষুধি উদ্ভিদের এক বিশাল সম্ভার রয়েছে। ২। বাংলাদেশের ভূমি যথেষ্ট উর্বর এবং বৈচিত্রময় ঔষধি উদ্ভিদ চাষাবাদের জন্য আবহাওয়াও অত্যন্ত অনুকূল। ৩। আমাদের দেশে অন্যান্য দেশের তুলনায় উৎপাদন খরচ কম। কারণ এখানে অপেক্ষাকৃত কম মজুরিতে শ্রমিক পাওয়া যায়। ৪। আমাদের দেশে উন্নতমানের হার্বাল ঔষধ তৈরী হয়, দেশে-বিদেশে যার ব্যাপক গ্রহণ যোগ্যতা রয়েছে। ৫। আমাদের দেশে চমৎকার বিধিবদ্ধভাবে ঔষধ প্রশাসনের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে রাসায়নিক ঔষধের ন্যায় হার্বাল ঔষধ নিয়ন্ত্রণ হয়ে থাকে যা পৃথিবীর কম দেশেই বিদ্যমান। ৬। প্রচুর সংখ্যক শিল্পোদ্যোক্তা রয়েছে এদেশে, যারা অল্টারনেটিভ তথা হার্বাল মেডিসিনের গবেষণা, উন্নয়ন এবং উৎপাদনে বিনিয়োগে আগ্রহী। ৭। এদেশে কনভেনশনাল অ্যালোপ্যাথিক উচ্চশিক্ষিত চিকিৎসকগণ তাদের প্রতিদিনের প্র্যাক্টিসে অ্যালোপ্যাথিক ওষুধের পাশাপাশি অল্টারনেটিভ ওষুধও প্রেসক্রাইব করে থাকেন। রোগীরাও অধিক আতœবিশ্বাসের সাথে এই ওষুধ সেবন করেন।
প্রশ্নঃ আপনি কি মনে করেন দেশে বর্তমান প্রেক্ষাপটে এই চিকিৎসা ব্যবস্থার কোনো সীমাবদ্ধতা আছে? বাংলাদেশে অল্টারনেটিভ চিকিৎসা ব্যবস্থায় অনেক উন্নতি সাধিত হয়েছে। তথাপিও আমি মনে করি এই চিকিৎসা ব্যবস্থায় এখনো অনেক সীমাবদ্ধতাও রয়েছে। যেমন- * যদিও হামদর্দ বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ-এ ইউনানী ও আয়ুর্বেদিক মেডিকেল ইনস্টিটিউট স্থাপনের ফলে এই চিকিৎসা ব্যবস্থায় গবেষণা ও উচ্চ শিক্ষা লাভের নতুন দ্বার উন্মুচিত হয়েছে। তথাপিও বর্তমানে বিশ্বব্যাপী অল্টারনেটিভ চিকিৎসা ব্যবস্থার যে অগ্রগতি সাধিত হয়েছে এবং ওষুধের ব্যাপক চাহিদা সৃষ্টি হয়েছে সেই তুলনায় বাংলাদেশে অর্জিত অগ্রগতি পর্যাপ্ত নয়। অল্টারনেটিভ মেডিসিনের ক্রমবর্ধমান বিশ্ব বাজারে প্রবেশ করে এর সুবিধা ভোগ করতে চাইলে দেশে বিশেষতঃ সরকারিভাবে এই চিকিৎসা ব্যবস্থায় উচ্চ শিক্ষা ও গবেষণার সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে। * হামদর্দ কর্তৃক পরিচালিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো শিক্ষার যথাযথ মান বজায় রেখেই শিক্ষা প্রদান করছে। এছাড়াও দেশে অল্টারনেটিভ চিকিৎসা ব্যবস্থার অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও যেন শিক্ষার মান বজায় রাখতে পারে সেই লক্ষ্যে সরকারিভাবে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে পৃষ্ঠপোষকতা প্রদান করতে হবে। শিক্ষকদের জন্য বেসরকারী স্কুল-কলেজের ন্যায় বেতন-কাঠামোর প্রক্রিয়া চালু করতে হবে। * অল্টারনেটিভ চিকিৎসদের কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে হামদর্দ সাধ্যানুযায়ী কাজ করে যাচ্ছে। দেশব্যাপী প্রায় ৩০০ চিকিৎসা কেন্দ্র, কারখানাসহ বিভিন্ন বিভাগ/সেকশনে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছে। সরকারীভাবে চাকুরীর কিছু সুযোগ সৃষ্টি হলেও এটি পর্যাপ্ত নয়। পাশাপাশি ডিপ্লোমা ডিগ্রীধারীদেরকেও সরকারী চাকুরীতে সুযোগ করে দিতে হবে। * ডায়াবেটিস, হাইপারটেনশন, অ্যাজমাসহ কিছু রোগের পর্যাপ্ত চিকিৎসা দিতে হলে ফর্মুলেশন উন্নত করতে হবে। পার্শ্ববর্তী দেশসমূহে ইন্হেলার, ইন্জেকশন ও স্প্রে ফর্মে হার্বাল ওষুধ উৎপাদন হলেও আমাদের দেশে এখনো সম্ভব হয়নি। * আমাদের দেশে সম্প্রতি এই ব্যবস্থার ওষুধের চাহিদা যতটা বৃদ্ধি সাথে এর কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহৃত ওষুধি উদ্ভিদের উৎপাদন বাড়েনি। আমদানীর উপর অনেকাংশে নির্ভর করতে হয়। এতে উৎপাদন ব্যয় বেড়ে যায়। সাশ্রয়ী মূল্যে ওষুধ সরবরাহ সম্ভব হয়না। তাই দেশে সরকারী ও বেসরকারী উদ্যোগে ওষুধি উদ্ভিদের উৎপাদন আরো বাড়াতে হবে।
প্রশ্নঃআপনার মতে অল্টারনেটিভ চিকিৎসা পদ্ধতির কোন কোন দিকে আরোও উন্নয়ন করা উচিত? অল্টারনেটিভ চিকিৎসার উন্নয়নে নিম্মোক্ত বিষয়ে কাজ করা উচিৎ বলে আমি মনে করি- ১. এই পদ্ধতির শিক্ষার সম্প্রসারণ ও শিক্ষা কারিকুলাম পূণঃমূল্যায়ন ও আরোও উন্নয়ন করা প্রয়োজন। ২. সরকারী ও বেসরকারী পর্যায়ে উচ্চ শিক্ষা ও গবেষণার আরো অধিক সুযোগ সৃষ্টি করা প্রয়োজন। ৩. ডিগ্রী অর্জনের পর অল্টারনেটিভ পদ্ধতির চিকিৎসকগণের কর্মসংস্থান নিশ্চয়ত করণের ব্যবস্থাকরা প্রয়োজন। ৪. সরকারী বিভিন্ন হাসপাতাল ও মেডিকেল কলেজসমূহে আরও অধিক হারে চাকুরীর সুযোগ সৃষ্টি করা দরকার। ৫. দেশে ওষুধি উদ্ভিদ চাষাবাদের প্রতি অধিক গুরুত্ব দেওয়া উচিত যাতে ওষুধি উদ্ভিদের জন্য বিদেশী নির্ভরতা কমে এবং আরো সাশ্রয়ী মূল্যে ওষুধ সরবরাহ প্রদান করা সম্ভব হয়। ৬. হাকীম, কবিরাজ, ফার্মাসিস্ট, বোটানিস্ট, কেমিস্ট, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় এবং হার্বাল বিশেষজ্ঞ ব্যক্তিদের নিয়ে সম্মিলিতভাবে কাজ করা।
|