বহুল আলোচিত ও সমালোচিত সাবেক পুলিশ প্রধান বেনজীর আহম্মেদের সাভানা ইকো রিসোর্ট অ্যান্ড ন্যাচারাল পার্ক ও তার আশপাশে দখল নেওয়া জমি আয়ত্তে নিয়েছে দুই জেলার প্রশাসন। আদালতের নির্দেশে সম্পত্তি ক্রোক আদেশ বাস্তবায়ন কার্যক্রমের অংশ হিসেবে পার্কটি নিয়ন্ত্রণে নেয় গোপালগঞ্জ ও মাদারীপুরের জেলা প্রশাসন।
শনিবার (৮ জুন) দুপুরে মাদারীপুর ও গোপালগঞ্জের দুই জেলার দুর্নীতি দমন কমিশন, কৃষি কর্মকর্তা ও মৎস কর্মকর্তা এবং ভূমি কমিশনাররা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রে জানা গেছে, শনিবার দুপুরে বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে নিয়ে সাবেক পুলিশ প্রধান বেনজীর আহম্মেদের পার্কে আসেন মাদারীপুর ও গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা। এ সময় দুর্নীতি দমন কমিশনের দুই জেলার শীর্ষ কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন। প্রথমে তারা পার্ক ও তার আশপাশে দখলে নেওয়া জমি পরিদর্শন করেন। পরে সেখানকার সব সম্পত্তি তালিকাবদ্ধ করেন। আদালতের নির্দেশে সম্পত্তি ক্রোক আদেশ বাস্তবায়নের জন্য পার্কটি নিয়ন্ত্রণে নেওয়া হয়।
এ সময় পার্কের ভেতর থাকা পুকুরের ৫৯০ কেজি মাছ গোপনে বিক্রির দায়ে শফিকুল ইসলাম নামে একজনের বিরুদ্ধে গোপালগঞ্জ সদর থানায় মামলা করে দুদক।
জানা যায়, পুলিশের আইজিপি থাকাকালীন সময়ে গোপালগঞ্জ সদর ও মাদারীপুরের রাজৈরে কয়েকশ বিঘা জমি জোর করে দখলে নেন বেনজীর আহম্মেদ। এসব নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রচারের পর মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
দুর্নীতি দমন কমিশন মাদারীপুর জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. আতিকুর রহমান, দুর্নীতি দমন কমিশন গোপালগঞ্জ জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. মশিউর রহমান, মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলা ভূমি অফিসের সহকারী কমিশনার মো. সাইফুল ইসলাম, গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা ভূমি অফিসের সহকারী কমিশনার মিস বাবলী শবনমসহ অনেকেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
নাম না প্রকাশে স্থানীয় কয়েকজন বলেন, বেনজীর আহম্মেদের সব সম্পত্তি সরকার ক্রোক করায় আমরা অনেক খুশি। তবে এখানকার যেসব মানুষদের কাছ থেকে জোর করে জমি কিনে নিয়েছেন, সেই জমিগুলো তাদের ফেরত দেওয়া উচিত। এতে করে এইসব মানুষগুলো তাদের ফসলি জমিতে আবারো চাষাবাদ করে জীবিকা নির্বাহ করতে পারবেন।
দুর্নীতি দমন কমিশন মাদারীপুর জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. আতিকুর রহমান বলেন, আদালতের নির্দেশে পার্কটির বিভিন্ন স্থাপনা পরিদর্শন করা হয়। সেখানে দুই জেলার বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। আদালতের নির্দেশ মোতাবেক সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলা ভূমি অফিসের সহকারী কমিশনার মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, রাজৈর উপজেলা ভূমি অফিস থেকে যতগুলো জমির মিউটেশন করা হয়েছে সবগুলোই আমরা জেলা প্রশাসনের নির্দেশে আয়ত্তে নিয়েছি। আদালতের আদেশে প্রশাসন সব বিষয়ে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।
মাদারীপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মারুফুর রশিদ খান বলেন, ঢাকা থেকে নির্দেশনার চিঠি পেয়েছি। সেই অনুযায়ী কাজ করা হচ্ছে।
|