কক্সবাজারে টানা বৃষ্টি অব্যাহত পানিবন্দি লাখো মানুষ
মিয়া আবদুল হান্নান : আবহাওয়া অধিদপ্তরের হিসাবে, গত ২১ আগস্ট ফেনীতে রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টি হয়। ওই দিন ২৪ ঘণ্টায় ৩১২ মিলিমিটার বৃষ্টির সঙ্গে ভারতের ত্রিপুরার রেকর্ড বৃষ্টি যোগ হয়। ফলে ওই এলাকায় তিন যুগের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যা দেখা দেয়।
এর একমাস না যেতেই ফের অস্বাভাবিক বৃষ্টি দেখলো দেশ। এবার কক্সবাজারে টানা বৃষ্টি অব্যাহত লাখোলাখো মানুষ পানি বন্ধী বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টা থেকে শুক্রবার বিকেল ৩টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় কক্সবাজারে ৫০১ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে; যা ওই অঞ্চলে ১৯৪৮ সালের পর সর্বোচ্চ রেকর্ড। বাংলাদেশে সর্বোচ্চ বৃষ্টি হয়েছিল শ্রীমঙ্গলে ১৯৮১ সালের ১৮ জুলাই, ৫২০ মিলিমিটার। পাহাড়ি ঢল আর ভারী বৃষ্টিতে কক্সবাজারের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। জেলা সদরসহ নয় উপজেলার অধিকাংশ নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। বৃষ্টি অব্যাহত থাকায় বন্যার আশঙ্কা করছে আবহাওয়া অধিদফতর। পাশাপাশি দেখা দিয়েছে পাহাড়ধসের শঙ্কাও। কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ ও নেটওয়ার্ক বিচ্ছিন্ন হয়েছে।ভারী বৃষ্টিতে পর্যটন এলাকা কলাতলী, পৌর এলাকার অধিকাংশ ওয়ার্ড, চকরিয়া, পেকুয়া, কুতুবদিয়া, রামু, উখিয়া, টেকনাফ, ঈদগাঁও, কক্সবাজার সদরের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এরই মধ্যে জেলা শহর ও উপজেলাগুলোর লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। সড়ক-উপসড়কে পানি উঠে যানবাহন চলাচল বিঘ্নিত হচ্ছে। শহরের হাজারও বসতবাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে পানি ঢুকে নষ্ট হয়ে গেছে লাখ লাখ টাকার মালামাল। কলাতলীতে অবস্থিত পাঁচ শতাধিক হোটেল মোটেলে অবস্থান নেওয়া পর্যটক আটকা পড়েছেন। বিগত ৫০ বছরে শহরজুড়ে এমন জলাবদ্ধতা দেখেননি জানিয়ে কক্সবাজার হোটেল গেস্টহাউস মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম সিকদার দৈনিক এশিয়া বাণীকে বলেন, অপরিকল্পিত সড়ক উন্নয়ন, ঠিকমতো নালা পরিষ্কার না করা এবং শহরের পাহাড় নিধন বন্ধ না হওয়ায় এমন জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে। এছাড়া জেলার অন্যান্য উপজেলায় বন্যায় ক্ষতির মুখে পড়েছে বীজতলা, পানের বরজ এবং সবজি ক্ষেত। এসব এলাকায় দুর্ভোগে পড়েছেন লাখো মানুষ। কয়েকদিন ধরেই ভারী বৃষ্টিপাত অব্যাহত আছে কক্সবাজারে। বিশেষ করে গত বৃহস্পতিবার দুপুর ৩টা থেকে শুক্রবার দুপুর ৩টা পর্যন্ত কক্সবাজার জেলায় মোট ৫০১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে, যা চলতি মৌসুমের সর্বোচ্চ রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টিপাত। এর আগে ২০১৫ সালে ৪৬৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছিল সর্বদক্ষিণের জেলাটিতে। ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাতের রেকর্ডটি ১৯৮১ সালের। ওই বছরের ১৮ জুলাই নোয়াখালীতে ৫২০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাতের হিসাব জানাচ্ছে আবহাওয়া অধিদফতর। ১৯৭৬ সালের ৭ সেপ্টেম্বর তৎকালীন মৌলভীবাজার মহকুমার শ্রীমঙ্গলে ৫১৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছিল। আর ১৯৮৩ সালের ৪ আগস্ট চট্টগ্রামে ৫১১ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়।
প্রধান সম্পাদক ও প্রকাশক : মো: তাজুল ইসলাম
প্রধান কার্যালয়: ২১৯ ফকিরের ফুল (১ম লেন, ৩য় তলা), মতিঝিল, ঢাকা- ১০০০ থেকে প্রকাশিত ।
ফোন: ০২-৭১৯৩৮৭৮ মোবাইল: ০১৮৩৪৮৯৮৫০৪, ০১৭২০০৯০৫১৪
Web: www.dailyasiabani.com ই-মেইল: [email protected]