মিয়া আবদুল হান্নান : ফ্যাসিস্টের প্রেতাত্মারা চক্রান্ত করছে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। রাজধানী ঢাকার নয়াপল্টনে আন্তর্জাতিক গণতন্ত্র দিবস উপলক্ষে বিএনপির সমাবেশে নেতাকর্মীদের ঢল নেমেছে। রাজধানীর প্রতিটি ওয়ার্ড ও থানা থেকে মিছিল নিয়ে সমাবেশে এসেছেন বিএনপি এবং এর অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। স্লোগানে স্লোগানে প্রকম্পিত হচ্ছে পুরো নয়াপল্টন এলাকা। গতকাল মঙ্গলবার বেলা আড়াইটায় নয়াপল্টনস্থ বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের মধ্যে দিয়ে এ সমাবেশ শুরু হয়। এতে লন্ডন থেকে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। বেলা ১২টার আগে থেকেই ঢাকায় বিভিন্ন ওয়ার্ড ও থানা বিএনপি এবং এর অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের হাজার হাজার নেতাকর্মীরা খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে আসতে শুরু করেন। তারা হাতে দলীয় ও জাতীয় পতাকা, ব্যানার এবং ফেস্টুন নিয়ে অংশ নেন। মাথায় হলুদ ও লাল রঙের ক্যাপ পরেও নেতাকর্মীরা সমাবেশে আসেন। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নয়াপল্টন ও এর আশপাশের এলাকায় বিএনপি নেতাকর্মীদের উপস্থিতিতে সরগরম হয়ে উঠে। বিকেলে ও খন্ড খন্ড মিছিল নিয়ে আসছেন তারা। সমাবেশ কেন্দ্র করে কার্যালয়ের সামনে অস্থায়ী মঞ্চ সমাবেশ হয়েছে।
সরজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, তীব্র রৌদ উপেক্ষা করে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে আসছেন নেতাকর্মীরা। মাথায় জাতীয় পতাকা বেঁধে উল্লাস করেন অঙ্গ-সংগঠনের নেতাকর্মীরা। নয়াপল্টনে আশপাশের এলাকা ও অলিগলিতে অবস্থান করছেন রাজধানীর আশপাশের জেলা থেকে আসা হাজার হাজার নেতাকর্মীরা।
ওদিকে বিএনপির সমাবেশকে কেন্দ্র করে নয়াপল্টন, কাকরাইল, মালিবাগ, শান্তিনগর, বিজয়নগর, ফকিরাপুল ও আরামবাগ এলাকায় তীব্র যানজট দেখা গেছে।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, প্রশাসনে এখনও আওয়ামী লীগের লোকেরা রয়ে গেছে। আবার কেউ গণতন্ত্রকে রুদ্ধ করতে চাইলে রুখে দাঁড়াতে হবে। বুকের রক্ত দিয়ে হলেও গণতন্ত্রকে রক্ষা করতে হবে। মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) রাজধানী ঢাকার নয়াপল্টনে আন্তর্জাতিক গণতন্ত্র দিবস উপলক্ষে বিএনপির সমাবেশে সভাপতির বক্তব্য তিনি এসব কথা বলেন। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উদ্দেশ্যে বলেছেন, আপনারা নানা সংস্কারের কথা বলছেন। কিন্তু সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভোট সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে অনুরোধ করতে চাই, অবিলম্বে ভোটের ব্যবস্থা করতে হবে। জনগণ ভোট দিয়ে তাদের প্রতিনিধি সংসদে পাঠাবে। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, খালেদা জিয়া কঠিন মুহূর্তেও দেশ ছাড়েননি, নেতাকর্মীদের ছেড়ে যাননি। অথচ আওয়ামী লীগ প্রধান শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে গেছে। এখন বলে চট করে চলে আসবে, ষড়যন্ত্র করছে।মির্জা আব্বাস বলেন, এই দেশের জনগণ শেখ হাসিনার বিচার করবে। সকল খুন গুমের বিচার হবে।
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি বলেছেন, যে লড়াইয়ে আমরা অবতীর্ণ হয়েছিলাম সেই গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার আদায়ের লড়াই এখনো শেষ হয়নি। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস অত্যন্ত সম্মানিত ব্যক্তি। আপনার কাছে আহ্বান- যারা গত ১৫ বছরে গুম, খুন ও লুটপাটে জড়িত ছিল, তাদের বিচার করতে হবে।রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে অনুষ্ঠিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সভাপতিত্বে সভা পরিচালনা করছেন বিএনপির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্য সচিব আমিনুল হক ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সদস্য সচিব তানভীর আহমেদ রবিন।
সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য, ড. আবদুল মঈন খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল, , আব্দুস সালাম আজাদ প্রমুখ।চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী সাইয়েদুল আলম বাবুল, মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক রাজীব আহসান, কৃষকদলের সভাপতি হাসান জাফির তুহিন। এ সময় সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, গণশিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক অধ্যাপক ড. মোর্শেদ হাসান খান, ঢাকা বিভাগের সহসাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদ, কেন্দ্রীয় নেতা প্রকৌশলী আশরাফ উদ্দিন বকুল, ঢাকা বিভাগের বিভিন্ন জেলা ছাড়াও বিএনপি ও বিএনপির বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের হাজারো নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
|