মিয়া আবদুল হান্নান : আল্লাহর গুণবাচক নাম সমূহের মধ্যে একটি নাম হলো, ‘যুল জালালি ওয়াল ইকরাম’ অর্থ মহামহিম ও মহানুভব; যিনি পরিপূর্ণ মহত্ত্ব ও পরিপূর্ণ সম্মানের মালিক। আল্লাহ ছাড়া বিশ্বজগতে আর কোনো সত্ত্বা এই গুণ বা বৈশিষ্ট্যের অধিকারী হতে পারে না। আল্লাহর এই গুণবাচক নামটি এসেছে পবিত্র কোরআনে। আল্লাহ তাআলা বলেন,
তোমার রবের নাম বরকতময়, যিনি মহামহিম ও মহানুভব। (সুরা আররাহমান: ৭৮)
এই নামে আল্লাহকে ডাকার জন্য বলতে হবে ‘ইয়া যাল জালালি ওয়াল ইকরাম’ অর্থ হে মহামহিম ও মহানুভব! হাদিসে আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এই নামে আল্লাহকে ডাকার নির্দেশ দিয়ে বলেছেন, আপনারা ‘ইয়া জাল জালালি ওয়াল ইকরাম’ কে অপরিহার্য করে নিন অর্থাৎ সব সময় এই নামে আল্লাহকে ডাকুন। (সুনানে তিরমিজি)
নামাজের পর নবিজি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়সাল্লাম) যে দোয়া পড়তেন বলে বর্ণিত রয়েছে, তাতে থাকতো আল্লাহর এই বরকতময় নামটি। নবিজি (সা.) নামাজের পর তিনবার ইস্তেগফার পড়ে বা মুসল্লিদের দিকে ফিরে পড়তেন,
উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা আনতাস সালাম ওয়া মিনকাস সালাম তাবারাকতা ইয়া জাল জালালি ওয়াল ইকরাম। অর্থ: হে আল্লাহ! আপনি শান্তিময় এবং আপনার থেকে শান্তি আসে। আপনি কল্যাণময় এবং সম্মান ও প্রতিপত্তির অধিকারী। (সহিহ মুসলিম: ১২২২)
এক সাহাবির দোয়া শুনে নবিজি (সা.) বলেছিলেন, তিনি আল্লাহকে ‘ইসমে আজমের’ সাথে ডেকেছেন। ওই দোয়ায় আল্লাহর অন্যান্য নামের সাথে ‘যুল জালালি ওয়াল ইকরাম’ও অন্তর্ভুক্ত ছিল। আনাস (রা.) বলেন, একদিন আমি নবিজির (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) সাথে মসজিদে নববিতে বসে ছিলাম। তখন জনৈক সাহাবি নামাজ আদায় করছিলেন। নামাজের পর তিনি দোয়া করলেন,
উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকা বিআন্না লাকাল হামদু লা ইলাহা ইল্লা আনতাল হান্নানুল মান্নানু বাদীউস সামাওয়াতি ওয়াল আরদি ইয়া যাল জালালি ওয়াল ইকরামি ইয়া হাইয়ু ইয়া কাইয়ুমু আসআলুকা
অর্থ: হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে প্রার্থনা করছি। কারণ আপনারই জন্য সব প্রশংসা। আপনি ছাড়া প্রকৃতপক্ষে কোন মাবুদ নেই। আপনি সবচেয়ে বড় দয়ালু, বড় দাতা। আপনিই আসমান-জমিনের স্রষ্টা। হে সম্মান ও প্রতিপত্তির অধিকারী! হে চিরঞ্জীব, হে প্রতিষ্ঠাতা! আমি আপনার কাছে প্রার্থনা করছি।
তখন নবিজি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, যে আল্লাহকে ইসমে আজমের সাথে ডাকে তিনি তাতে সাড়া দেন এবং যখন তাঁর কাছে প্রার্থনা করা হয় তখন তিনি তা দান করেন। (সুনানে আবু দাউদ: ১৪৯৫)
|