আজ ১১ রবিউস সানি, বড় পির আবদুল কাদের জিলানি (রহ.)-এর ওফাত দিবস বা ফাতেহা-ই-ইয়াজদাহম। মূলত, তার মৃত্যুর দিনটিকেই ‘ফাতেহা-ই-ইয়াজদাহম’ হিসেবে পালন করা হয়।
ফাতেহা-ই-ইয়াজদাহম মুসলিম ধর্মীয় সম্প্রদায়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠান, যা বিশেষভাবে সুফি প্রথার সঙ্গে সম্পর্কিত। ইসলামের অন্যতম সম্মানিত ব্যক্তি এবং মহান আধ্যাত্মিক নেতাদের একজন হজরত আবদুল কাদের জিলানি (রহ.)-এর পবিত্র আত্মার মাগফিরাতের জন্য এবং তার জীবনের শিক্ষা ও আধ্যাত্মিক নির্দেশনা স্মরণ করে এই দিনটি উদযাপিত হয়।
হজরত আবদুল কাদের জিলানি (রহ.) হজরত আবদুল কাদের জিলানি (রহ.) ছিলেন একজন মহান ইসলামী পণ্ডিত, সুফিসাধক এবং আধ্যাত্মিক নেতা; যিনি ১১১৬ সালে বাগদাদে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ইসলামের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব এবং বিশেষত সুফিবাদে তার অবদান ও আধ্যাত্মিক শিক্ষার জন্য বিখ্যাত। তাকে ‘গাউসুল আজম’ বা ‘সর্বোচ্চ সাহায্যকারী’ হিসেবেও ডাকা হয়। তার শিক্ষা অনুসারে, আল্লাহর প্রতি গভীর বিশ্বাস, বিনম্রতা এবং মানবতার সেবা ছিল জীবনের মূল লক্ষ্য।
ফাতেহা-ই-ইয়াজদাহম উদযাপন ফাতেহা-ই-ইয়াজদাহম হিজরি বর্ষপঞ্জির ১১তম মাস রবিউস সানির ১১ তারিখে অনুষ্ঠিত হয়। ‘ফাতেহা’ শব্দটির অর্থ হলো মৃত ব্যক্তির আত্মার জন্য বিশেষ প্রার্থনা বা দোয়া করা, এবং ‘ইয়াজদাহম’ অর্থ ১১। সুতরাং, ফাতেহা-ই-ইয়াজদাহম হলো তার মৃত্যুবার্ষিকীর ১১তম দিন উপলক্ষে করা ফাতেহা বা দোয়া।
এই দিনে মুসলিম সম্প্রদায় বিশেষ করে সুফি তরিকায় বিশ্বাসীরা, কুরআন তেলাওয়াত করে, হজরত জিলানি (রহ.)-এর প্রতি সম্মান জানিয়ে বিভিন্ন দোয়া ও মোনাজাত করে। তার আধ্যাত্মিক শিক্ষা এবং জীবনের দৃষ্টান্তকে স্মরণ করে, অনেক মসজিদ এবং খানকাহে বিশেষ মাহফিলের আয়োজন করা হয়। এছাড়া দান-খয়রাত, গরিবদের মাঝে খাদ্য বিতরণ এবং মানবতার সেবা করার বিশেষ উদ্যোগ নেয়া হয়।
ফাতেহা-ই-ইয়াজদাহমের গুরুত্ব ফাতেহা-ই-ইয়াজদাহম শুধুমাত্র একটি স্মরণীয় অনুষ্ঠান নয়, এটি আত্মশুদ্ধি ও আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের একটি সুযোগ হিসেবে দেখা হয়। হজরত আবদুল কাদের জিলানি (রহ.)-এর আধ্যাত্মিক শিক্ষা ও নীতি অনুসরণ করা, বিশেষ করে তার বিনম্রতা, আল্লাহর প্রতি গভীর আস্থা এবং মানবতার প্রতি তার ভালোবাসা, মুসলিমদের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে আছে।
ফাতেহা-ই-ইয়াজদাহম ইসলামী সংস্কৃতির একটি অংশ যা মুসলিমদের আধ্যাত্মিক জীবন ও ইসলামী ঐতিহ্যকে জীবিত রাখে। এটি শুধুমাত্র ধর্মীয় প্রার্থনা নয়, বরং একত্রিত হয়ে আল্লাহর পথে জীবন পরিচালনা করার একটি শিক্ষা। হজরত আবদুল কাদের জিলানি (রহ.)-এর শিক্ষা এবং তার জীবনধারার প্রতি সম্মান প্রদর্শনের মাধ্যমে মুসলিম সম্প্রদায় তার স্মৃতিকে চিরস্মরণীয় করে রাখে।
|