ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় ‘গণহত্যার’ ঘটনায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচারকাজ আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু হয়েছে আজ। বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) আন্তজার্তিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে বিচারকাজ আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়। সদস্যরা হলেন- বিচারপতি শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মো. মহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
বেলা ১১টা ২০ মিনিটে ট্রাইব্যুনালের বিচারকাজ শুরু হয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন চিফ প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।
এর আগে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের এজলাস কক্ষে প্রবেশ করেন চেয়ারম্যানসহ তিন বিচারপতি। চেয়ারম্যান হিসেবে ট্রাইব্যুনালে রয়েছেন বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদার। পাশাপাশি সদস্য হিসেবে আছেন বিচারপতি শফিউল আলম মাহমুদ ও অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. মহিতুল হক এনাম চৌধুরী। মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) প্রথম দিন কাজে যুক্ত হওয়ার পর ট্রাইব্যুনালে পৌঁছে যোগদানপত্রে সই করেন তারা।
আওয়ামী লীগ সরকার আমলে সংঘটিত গুম-হত্যা এবং সাম্প্রতিক ছাত্র-জনতার আন্দোলন ঘিরে চালানো গণহত্যার বিচার করবে এই ট্রাইব্যুন্যাল। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ সাবেক ক্ষমতাসীন সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রী-কর্মকর্তাদের আসামি করে এখন পর্যন্ত ট্রাইবব্যুনালে অন্তত ৬০টি অভিযোগ দায়ের হয়েছে।
একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের জন্য ২০১০ সালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুবনাল গঠন করে আওয়ামী লীগ সরকার। এবার সেই ট্রাইব্যুনালেই ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সংঘটিত গুম-হত্যার অভিযোগে তাদেরই বিচারের উদ্যোগ নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কেন্দ্র করে গত জুলাই ও আগস্টে সংঘটিত গণহত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলার বিচার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে করার সিদ্ধান্ত নেয় অন্তর্বর্তী সরকার। এরই অংশ হিসেবে নতুন প্রসিকিউশন টিম ও তদন্ত সংস্থা গঠিত হয়েছে। বিচারের জন্য আইন সংশোধন ও ভবন মেরামতের কাজও চলমান। গণঅভ্যুত্থানের পর সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগ ও ১৪ দলের নেতা এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাবেক শীর্ষ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত গুম, হত্যা, গণহত্যাসহ ৬০টির বেশি অভিযোগ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে জমা পড়েছে।
স্বাধীনতার ৩৯ বছর পর একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্তদের বিচারের মুখোমুখি করতে ২০১০ সালে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠন করে। ওই বছরের ২৫ মার্চ ট্রাইব্যুনালের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়। পরে ২০১২ সালের ২২ মার্চ ট্রাইব্যুনাল-২ নামে আরেকটি ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়। তবে ২০১৫ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর দুটি ট্রাইব্যুনালকে একীভূত করা হয়। ফলে একটি ট্রাইব্যুনালে একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচারকার্য চলমান ছিল। আগের ত্রিশটি মামলা এখনো ট্রাইব্যুনালে চলমান।
|