রাজধানী ঢাকার সোহরাওয়ার্দী কলেজে বহিরাগতদের হামলা, ভাঙচুর ও সার্টিফিকেটে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এসময় ডিপার্টমেন্টের আলমারি ভেঙে নগদ অর্থ লুট করা হয়েছে বলে অভিযোগ জানিয়েছেন কলেজটির অধ্যক্ষ।
রোববার (২৪ নভেম্বর) রাতে সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. কাকলী মুখোপাধ্যায় স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে কলেজটিতে তাণ্ডবের এমন চিত্র তুলে ধরা হয়েছে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, রোববার দুপুর ১ টা ১৫ মিনিটে সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজে প্রথম বর্ষ স্নাতক সমাপনী পরীক্ষা চলাকালে ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজ (ডিএমআরসি) এবং অন্যান্য কলেজের সহস্রাধিক ছাত্রের একটি দল কলেজের প্রধান ফটক ভেঙে ছাত্র-শিক্ষক ও কর্মচারীদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। বার বার পুলিশ প্রশাসন ও সেনাবাহিনীকে ফোন দিয়ে সন্তোষজনক কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। বিষয়টি মাউশির ডিজি, মন্ত্রণালয় ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েও কোনো সহায়তা পাওয়া যায়নি। উত্তেজিত ছাত্ররা কলেজ ভাঙচুর করে এবং কেন্দ্রে পরীক্ষারত পরীক্ষার্থীদের আহত করে বের করে দেয়। তারা কলেজ ক্যাম্পাসে অবস্থিত শিক্ষকদের গাড়ি, মটরসাইকেল, কলেজের মাইক্রোবাস ভাঙচুর করে এবং কলেজের ১৭টি বিভাগের প্রতিটিতে হামলা চালায়।
এতে আরও বলা হয়, তারা কলেজের সব বিভাগ-শ্রেণিকক্ষের আসবাবপত্র, ফ্যান, কম্পিউটার, ল্যাপটপ, প্রিন্টার ও প্রতিটি বিভাগের আলমারি ভেঙে নগদ অর্থ লুট করে। প্রতিটি বিভাগের বুক সেলফ, শিক্ষার্থীদের মার্কশিট, সনদপত্র, ভর্তি ও ফরম পূরণের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র এবং বিভাগের বিভিন্ন বই-পুস্তক তছনছ করে এবং আগুন ধরিয়ে দেয়।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কলেজের অধ্যক্ষ বারবার ডিএমআরসির অধ্যক্ষকে বিষয়টি জানানোর জন্য ফোন দেন। কিন্তু তিনি ফোন ধরেননি এবং আগে থেকে জানা সত্ত্বেও তিনি একবারের জন্যও তার কোনো প্রতিনিধিকে দিয়ে খোঁজ নেওয়ারও প্রয়োজনবোধ করেননি। সোহরাওয়ার্দী কলেজের শান্তিপ্রিয় শিক্ষার্থীরা অঙ্গীকারাবদ্ধ যে, তারা কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে হামলা চালাবে না। যদি কোনো সন্ত্রাসী এই সুযোগের অপব্যবহার করে তবে এর জন্য সোহরাওয়ার্দী কলেজ প্রশাসন, শিক্ষক ও কর্মচারী এবং ছাত্র-ছাত্রীরা দায়ী থাকবে না।
বিজ্ঞপ্তিতে অধ্যক্ষ এবং প্রশাসনের কাছ থেকে কলেজের এই অপূরণীয় ক্ষয়-ক্ষতি ও ধ্বংসলীলার ক্ষতিপূরণ ও দায়ী ছাত্রদের চিহ্নিত করে বিচার দাবি করা হয়। সেই সঙ্গে কলেজের শিক্ষক, ছাত্র প্রতিনিধি, পুলিশের ডিসি (লালবাগ), ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং ডিএমআরসির অধ্যক্ষের প্রতিনিধি নিয়ে একটি জরুরি আলোচনায় বসার দাবি করা হয়।
এর আগে ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের শিক্ষার্থী অভিজিৎ এর চিকিৎসায় অবহেলার অভিযোগে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর গত বৃহস্পতিবার সোহরাওয়ার্দী ও কবি নজরুল কলেজের শিক্ষার্থীরা হামলা চালানোর অভিযোগ ওঠে। এছাড়া ঐদিনের হামলাকারীরা একটি রাজনৈতিক সংগঠনের সাথে জড়িত বলেও অভিযোগ ওঠে। এরই প্রেক্ষিতে রোববার ঢাকার কলেজগুলোর উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীরা একত্রিত হয়ে শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ ও কবি নজরুল সরকারি কলেজে ভাঙচুর চালায় ও অগ্নিসংযোগের চেষ্টা করে।
|