আব্দুল খালেক খোন্দকার : জ্বালানি গ্যাস বাংলাদেশের জন্য এক অমূল্য সম্পদ। এই ছোট্র দেশে তেমন প্রাকৃতিক সম্পদ নেই বললেই চলে। তবে দেশের বিভিন্ন স্থানে গ্যাস মওজুদ আছে এবং এই গ্যাস উত্তলোন ও সরবরাহের মাধ্যমে দেশে জ্বালানীর চাহিদা পূরণের ব্যবস্থা করা হয়ে থাকে। এই গ্যাসের মওজুদ সীমাবদ্ধ। এমন নয় যে, এই প্রকৃতিক সম্পদ কখনও ফুরাবে না।
জরুরী এই উপাদান নিয়ে বাংলাদেশে জালিয়াতি ও দুর্নীতির প্রচুর অভিযোগ রয়েছে, এবং তা পুরোপরি সত্যও প্রমানিত হচ্ছে। অবৈধ সংযোগ দিয়ে গ্যাস চুরির অভিযোগ আছে গ্যাস সরবরাহকারী কোম্পানির বিরুদ্ধে। এসব চুরিকে ‘গ্যাস কারিগরি তির সিস্টেম লস’ নামে অপচয় ধরে চালিয়ে দেওয়া হয়। এ তির পরিমাণ বাড়ছে। এখন এর কিছুটা ভাগ করে চাপানো হয়েছে সঞ্চালন লাইনে।
এ বিষয়ে এশিয়া বাণীর প্রধান উপদেষ্টা ও বিশ্লেষক মোঃ তাজুল ইসলাম বলেন, যেখানে গ্যাস নাই বা যেখানে চুরি করে গ্যাস দেয়া-নেয়া হয়, সে সব জায়গায় সরকার যদি গ্যাস সংযোগ প্রদান করে তবে সরকার সিষ্টেম লসের নামে কোটি-কোটি টাকার লোকসান খাওয়া থেকে বাঁচতে পার। অনিয়মের কারনে সীমিত প্রাকৃতিক সম্পদ গ্যাসের যে অপচয় হচ্ছে তা বৈধ সংযোগ প্রদানের ফলে সেই অপচয়ের কুফল থেকে সরকার ও দেশবাসি রেহাই পেতে পারে।
জনাব ইসলাম বলেন, গ্যাস একটি সীমিত সম্পদ। এটার অপচয় ও অপব্যবহার অবশ্যই বন্ধ করতে হবে। অবৈধ সংযোগ ও নিরবচ্ছিন্ন চুরির মাধ্যমে গ্যাসের যে পরিমান তি হচ্ছে ঐ গ্যাস বৈধ্য সংযোগ ও সরবরাহের মাধ্যমে সরকার আরও লাভবান হতে পারে।
তিনি বলেন, পেট্রোবাংলার হিসাবে বিতরণ খাতে কারিগরি তির নামে অপচয় হয়েছে গত অর্থবছরে (২০২২-২৩) ৯৮ কোটি ঘনমিটার। খোলাবাজার থেকে প্রতি ঘনমিটার এলএনজি আমদানির খরচ প্রায় ৮০ টাকা। এ হিসাবে রাষ্ট্রের অপচয় হয়েছে ৭ হাজার ৮৪০ কোটি টাকা। এই বিপুল তি পুষিয়ে ওঠার একমাত্র উপায় গ্রাহকেদের বৈধ উপায়ে গাসের সংযোগ প্রদান করা। যাদর গ্যাসের চাহিদা আছে অথচ গ্যাসের সংযোগ পাচ্ছেন না তাদের কাছেই অসাধু কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা জালিয়াতির মাধ্যমে গ্যাস সরবরাহ করে অবৈধ টাকার পাহাড় গড়ছে। অথচ সরকার একপয়সাও পাচ্ছে না, বরং অবৈধ সরবরাহের কারনে এই গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ গ্যাসের যত্র-তত্র অপচয় হচ্ছে যা দেশের জন্য মারাত্নক তির বিষয়।
কারিগরি তি হতেই পারে। গ্যাস অপচয়ে পাইপলাইনে লিকেজ (ছিদ্র) একটা বড় কারণ। তবে চুরি বা অপচয় যাতে না হয়, সেটা নজরদারি করা বেশী গুরুত্বপূর্ণ । দো যায় অভিযান চালিয়ে অবৈধ লাইন বিচ্ছিন্ন করলেও আবার তা বসানো হয়। আবাসিক সংযোগ চালু রেখে এটা নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন।
একটি সমীায় দেখা যায়, চুরি, অনিয়ম ও অবৈধ গ্যাস ব্যবহার বন্ধে নিয়মিত অভিযান চালাচ্ছে দেশের সবচেয়ে বড় গ্যাস বিতরণ কোম্পানি তিতাস। গত অর্থবছরে প্রায় আড়াই লাখ অবৈধ চুলার সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেছে প্রতিষ্ঠানটি। কিন্তু এতে কোন স্থায়ী সমাধান পাওয়া যাচ্ছে না। একটি খবরে জানা যায়,ডোবা দিয়ে নেওয়া হত অবৈধ গ্যাস সংযোগ।
চুরি, অনিয়ম ও অবৈধ গ্যাস ব্যবহার বন্ধে নিয়মিত অভিযান চালাচ্ছে দেশের সবচেয়ে বড় গ্যাস বিতরণ কোম্পানি তিতাস। গত অর্থবছরে প্রায় আড়াই লাখ অবৈধ চুলার সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেছে প্রতিষ্ঠানটি। আগের বছর এটি ছিল পৌনে তিন লাখ। এর বাইরে শিল্প, সিএনজি ও বাণিজ্যিক মিলে ছয় শতাধিক অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে গত বছর। তবুও অপচয় কমানো যাচ্ছে না।
বিশ্লষক জনাব তাজুল আরও বলেন, সরকার উচ্চ পর্য্যায়ের একটি অনসন্ধান কমিটি গঠণ করতে পারেন। এই অনুসন্ধান টিমের মাধ্যমে দেখবেন যে কোন কোন স্থানে গ্যাস সংষোগ নাই। সে সকল স্থানে বৈধ ভাবে গ্যাস সংযোগের ব্যবস্থা নাই সে সকল স্থানে বৈধভাবে গ্যাস সংযোগ লাইন প্রদান করলে পকৃত গ্রাহক অবৈধভাবে গ্যাস সংযোগ পেতে বিরত থাকবেন। ফলে সরকার প্রতি মাসে বিপুল পরিমানে অর্থ আয় করতে পারবেন এবং মহামূল্যবান এই জ্বালানি সম্পদেরও অপচয় বন্ধ হবে।।
|