মঈন মাহমুদ : ১৬ দিন ব্যাপী আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ ২০২৪ পালন উপলক্ষে আজ ২৭ নভেম্বর বাংলাদেশ শিশু একাডেমীর সভাকক্ষে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। মহিলা ও শিশু বিষয়ক এবং সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। সংবাদ সম্মেলনে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মমতাজ আহমেদ এনডিসি, মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কেয়া খান, বাংলাদেশ শিশু একাডেমির মহাপরিচালক তানিয়া খান , যুগ্ম সচিব ড. প্রকাশ কান্তি চৌধুরী এবং মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বেতন কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ বলেন, ২৫ নভেম্বর থেকে ১০ ডিসেম্বর ২০২৪ পর্যন্ত ১৬ দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ ২০২৪ পালন উপলক্ষে গৃহীত বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন ও প্রচারে সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় বাংলাদেশ নারী ও কন্যাশিশু নির্যাতন মুক্ত হবে যা বৈষম্যহীন নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে সহায়ক হবে। এ সময় নারী ও কন্যাশিশুর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে গণমাধ্যম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, জুলাই বিপ্লব পরবর্তী বর্তমান প্রেক্ষাপট বিবেচনাপূর্বক এবারই প্রথম ব্যাপকভাবে তৃণমূল পর্যন্ত নারী ও কন্যাশিশু নির্যাতন, বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে নজরদারির মধ্যে আনতে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় , বিভাগ, দপ্তর, সংস্থা, বেসরকারি সংস্থা, ডেভেলপমেন্ট পার্টনার, সিভিল সোসাইটি অর্গানাইজেশন, স্যোসাল ওয়ার্কার, যুব ফোরাম, বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত উদীয়মান ইনফ্লুয়েন্সার, শিক্ষার্থী ও সমাজের সকল শ্রেণী পেশার মানুষকে সম্পৃক্ত করে দেশব্যাপী বিভিন্ন প্রচার-প্রচারণমূলক কার্যক্রমসহ বিভিন্ন কর্মসূচী গ্রহণ করা হয়েছে। এই পক্ষটির উদ্দেশ্য হচ্ছে, নারী ও কন্যা শিশুর প্রতি সহিংসতার বিরুদ্ধে গণসচেতনতা সৃষ্টি এবং নীতিগত ও সামাজিক ইতিবাচক পরিবর্তন সাধন। এবারের ১৬ দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ-এর গ্লোবাল থিম হলো- “Towards Beijing +30: Unite to End Violence Against Women and Girls” এবং জাতীয় পর্যায়ে বাংলা প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে- “নারী-কন্যার সুরক্ষা করি, সহিংসতা মুক্ত বিশ্ব গড়ি”। তিনি বলেন, মাঠ পর্যায়ে ১৬ দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ উদযাপন উপলক্ষ্যে কী কী কার্যক্রম পরিকল্পনা প্রণয়ন করা হয়েছে এবং কোথায় কোথায় ত্রুটি আছে তা নির্ধারণ করে বাস্তবায়নের উপর গুরুত্ব আরোপ করেন। ১৬ দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ উপলক্ষে উল্লেখযোগ্য কার্যক্রমসমূহ হলো: জেন্ডারভিত্তিক সহিংসতা প্রতিরোধ বিষয়ক সংলাপ, কর্মশালা, গোলটেবিল বৈঠক, সভা, সেমিনার আয়োজন,নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধে সচেতনতামূলক কার্যক্রম, ইলেক্ট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়া এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারণা, প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধমূলক একযোগে শপথবাক্য পাঠ, সকল মোবাইল অপারেটরদের মাধ্যমে সকল নাগরিককে নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধ বিষয়ে ক্ষুদে বার্তা প্রেরণ, ক্ষতিকর সামাজিক আচরণ,রীতিনীতি পরিবর্তনে ধর্মীয় নেতৃবৃন্দদের সাথে জেন্ডারভিত্তিক সহিংসতা প্রতিরোধ বিষয়ক সংলাপ, কর্মশালার আয়োজন, দেশের সকল মসজিদে জুমার খুৎবায় নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধে বিশেষ বয়ান, নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে গণপরিবহন, পাবলিক স্পেস ও কর্মস্থলে নারীবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিতকরণে প্রচারণা, মতবিনিময় সভা, নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে সচেতনতামূলক আর্ট প্রদর্শনী, পথনাটক, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন, শিক্ষার্থী ও যুব সমাজদের সম্পৃক্ত করে বিশেষ প্রচারণা কার্যক্রম পরিচালনা, স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান, উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা ও মাঠ পর্যায়ের বিভিন্ন দপ্তর, সংস্থা সম্পৃক্ত করে কমিউনিটি পর্যায়ে সচেতনতামূলক প্রচার-প্রচারনা, জুলাই বিপ্লবে নারীদের কীর্তিগাঁথা ও অবদানকে উপজীব্য করে প্রচারণামূলক বিশেষ কার্যক্রম পরিচালনা করা। উপদেষ্টা নারী ও কন্যাশিশুর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে গণমাধ্যমকে তাদের লেখনীর মাধ্যমে জনগণকে সচেতন করার উপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, ‘আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় বাংলাদেশ নারী ও শিশু নির্যাতন মুক্ত হবে যা বৈষম্যহীন নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে সহায়ক হবে।’
|