মির্জা আব্দুর রব বুলবুল, স্টাফ রিপোর্টার : বাংলাদেশের ঐতিহাসিক চলনবিল সারা দেশের মানুষের কাছে শস্য ভান্ডার ও মৎস্য ভান্ডার হিসেবে সু-পরিচিত। চলনবিলের ৯টি উপজেলায় ৯টি পৌরসভা রয়েছে, উপজেলাগুলো হ’ল তাড়াশ, উল্লাপাড়া, শাহজাদপুর, ফরিদপুর, ভাঙ্গুড়া, চাটমহর, গুরুদাসপুর, সিংড়া ও আত্রাই উল্লেখযোগ্য। পৌরসভা এলাকার মানুষকে বিভিন্ন নাগরিক সেবা দেওয়ার কথা, বিশেষ পানি, বিদ্যুৎ ও পরিস্কার পরিচ্ছনতা, রাস্তাঘাট উন্নয়ন, পয়ঃনিষ্কাশনের ব্যবস্থা,বাসাবাড়ী ময়লা ফেলার জন্য প্রয়োজনীয় ডাস্টবিন, মশা নিধনের জন্য নিয়মিত স্প্রে করা সহ নানা রকমের সেবা দেওয়ার কথা থাকলেও নাগরিকগণ দিনের পর দিন তাদের কাংখিত এ সকল সেবা থেকে বঞ্চিত রয়েছেন যা দেখার কেউ নেই। চলনবিলের ৯টি পৌরসভা হচ্ছে, তাড়াশ পৌরসভা, উল্লাপাড়া পৌরসভা, শাহজাদপুর পৌরসভা, ফরিদপুর পৌরসভা, ভাঙ্গুড়া পৌরসভা, চাটমহর পৌরসভা, গুরুদাসপুর পৌরসভা, সিংড়া পৌরসভা ও আত্রাই পৌরসভা। পৌরসভা প্রতিষ্ঠার সময়ে নানা রকমের নাগরিক সেবা দেওয়ার কথা থাকলেও বাস্তবে তা দেওয়া হচ্ছে না। অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় হ’ল এ সকল পৌরসভা নাগরিক সেবা দেওয়া তো দুরের কথা পৌরসভার কর্মকর্তা/কর্মচারীদের নিয়মিত বেতন ভাতা পরিশোধ করতে পারছে না বলে অনেকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শর্তে এ প্রতিবেদককে বলেন। বেশিরভাগ পৌরসভাতে পানির লাইন স্থাপন করা হয়নি। পৌরসভার রাস্তাঘাটে রাত্রে লাইটিং করার কথা থাকলেও তা যথাযথভাবে লাইটিং ব্যবস্থা পুরাপুরি চালু হয়নি। পৌরসভার রাস্তাঘাটগুলো নিয়মিত পরিস্কার পরিচ্ছন করার কথা থাকলেও তা করা হচ্ছে না। অথচ পরিস্কার পরিচ্ছন কর্মীগণ অহেতুক দিনের পর দিন বিল নিচ্ছেন। বাসা বাড়ির ময়লার ফেলার জন্য নিদিষ্ট কোন স্থান নির্ধারণ বা ড্রাম দেওয়া হচ্ছে না। এতে করে পৌরসভায় বসবাসরত নাগরিকগণ না অসুবিধায় ভূগছেন। সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে দেখা যায় যে, চলনবিলের বেশিরভাগ পৌরসভাগুলোতে পানি সরবরাহ দেওয়ার ব্যবস্থা নেই। এছাড়া ৯টি পৌরসভার রাস্তাঘাটে আলোকায়নে আংশিক এলাকায় লাইটিংয়ের ব্যবস্থা রয়েছে। পৌরসভার পরিচ্ছন কর্মীরা পৌরসভার অফিস ও দুই একটি বাজার পরিস্কার কার্যক্রম পরিচালনা করে। অথচ গণহারে পরিচ্ছন কর্মীদের বিল নাগরিকদের থেকে আদায় করা হয়। তাড়াশ পৌরসভার কহিত গ্রামের বাসিন্দা মোঃ শফিকুল ইসলাম বলেন আমি গরীব মানুষ পৌরসভা এলাকার মধ্যে আমার বাড়ি আমাদের গ্রামে পৌরসভার লাইটিং ব্যবস্থা নেই বললেই চলে, মানুষ যাতায়াতের রাস্তা তেমন কোন উন্নয়ন হচ্ছে না, মরা মারার স্প্রে দেওয়া হচ্ছে না, পানির লাইনের ব্যবস্থা নেই বলতে গেলে আমরা নাগরিক সুবিধা পাচ্ছিনা বললেই চলে। শুষ্কমৌসুমে এলকায় পানির বড় অসুবিধা হয়। গুরু-মহিষ পালনের জন্য ও নিজেদের সাংসারিক কাজে পানির বিশেষ প্রয়োজন হয়। আমি গরীব মানুষ নিজস্ব টাকায় মোটর বসাতে পারি নাই। এজন্য ভীষণ কষ্টের মধ্যে দিয়ে দিন কাটাতে হচ্ছে বলে জানান। চলনবিলের ৯টি পৌরসভায় এ ধরণের সমস্যা রয়েছে, যা দেখার কেউ নেই। চলনবিল এলাকার মানুষের প্রাণের দাবী বিল এলাকায় গড়ে উঠা সকল পৌরসভা বিলুপ্তি করা হোক। এ ব্যাপারে চলনবিলের ৯টি পৌরসভার স্ব-স্ব প্রশাসকদের সাথে সরাসরি যোগাযোগ করা হলে তারা অত্যন্ত আন্তরিকতার সাথে বলেন নাগরিক সেবা নিশ্চিত করার বিষয়টি নিয়ে আমরা সবখানে কথা বলেছি। কিন্তু পৌরসভার আর্থিক সীমাবদ্ধতার কারণে সেবাগুলো পুরাপুরিভাবে দিতে পারছি না। তবে বেশিভাগ পৌরসভার সেবা নিশ্চিত করতে না পারার পেছনে দুটি কারণ রয়েছে একটি পৌরসভার আয় বাড়াতে পারছি না অপরদিকে এটা এক্সপোজও করতে পারছি না বলে এ প্রতিবেদককে জানান।
|