মিয়া আবদুল হান্নান : নব্বইয়ের গণ অভ্যুথ্থান ও কিছু কথা। শিক্ষার্থীদের ওপর হামলায় ৯০ এর ডাকসু ও সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্যের নিন্দ মিয়া আবদুল হান্নান : সেই দিন ছিলো মঙ্গলবার চানখাঁরপুল আহত এক শিক্ষার্থী ঢাকা মেডিকেলে নেন সহপাঠীরা
কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর সোমবার ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে সরকার দলীয় ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীদের বর্বরোচিত হামলা, শত শত ছাত্র-ছাত্রীর হতাহত হওয়ার ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ৯০’র ডাকসু ও সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্যের নেতৃবৃন্দ।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এক বিবৃতিতে দেশবাসীকে এহেন ঘৃণ্য পাশবিকতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদমুখর হওয়ার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন ‘৯০ এর ডাকসু ও সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্যের নেতারা।
বিবৃতিতে সাক্ষর করেছিলেন ডাকসু ভিপি আমান উল্লাহ আমান, হাবিবুর রহমান হাবীব, খায়রুল কবির খোকন, ফজলুল হক মিলন, নাজিম উদ্দিন আলম, মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল, খোন্দকার লুৎফর রহমান এবং আসাদুর রহমান খান আসাদ। বিবৃতিতে ডাকসুর নেতৃবৃন্দ বলেন, কোটা সংস্কারের ন্যায়সঙ্গত যৌক্তিক দাবিতে দেশের ছাত্রসমাজের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকে দমন করার জন্য প্রকাশ্যে ঘোষণা দিয়ে সরকার দলীয় ছাত্র সংগঠনের সন্ত্রাসীরা আগ্নেয়াস্ত্রসহ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে গতকাল সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েছে। সন্ত্রাসীদের নির্বিচার আক্রমণের শিকার হয়েছেন পাঁচ শতাধিক ছাত্র-ছাত্রী। সন্ত্রাসীরা ছাত্রী শিক্ষার্থীদেরও রাজপথে ফেলে বেধড়ক পিটিয়ে রক্তাক্ত করেছে, তারা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে যাওয়া আহত শিক্ষার্থীদের ওপর দফায় দফায় পৈশাচিক হামলা চালিয়েছে। তাদের হিংস্র ছোবলের হাত থেকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির বাসভবনে আশ্রয় নেওয়া শিক্ষার্থীরাও রেহাই পায়নি। সরকার প্রধানের প্রত্যক্ষ মদদে পরিচালিত ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীদের গতকালের এহেন নারকীয় হামলা ঢাকা বিশ্বিদ্যালয়ের ওপর ৭১’র ২৫ মার্চের হানাদার বাহিনীর নৃশংস হামলাকে মনে করিয়ে দেয় উল্লেখ করে ডাকসুর নব্বইয়ের আমান উল্লাহ আমান বলেন, দীর্ঘসময় ধরে পরিচালিত হামলা বন্ধ এবং সন্ত্রার্সীদের হাত থেকে শিক্ষার্থীদের রক্ষায় গতকাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নির্বিকার ভূমিকা ছিল প্রশ্নবিদ্ধ। তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে তারা বলেছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের এ ধরণের দলকানা দায়িত্বহীন প্রশাসনের দায়িত্ব পালন করে যাওয়ার আর কোনো সুযোগ থাকতে পারে না। নিজেদের শরীরের রক্ত ঝরিয়ে ছাত্রলীগ সন্ত্রাসীদের হিংস্র হামলা মোকাবিলা করে সাধারণ শিক্ষার্থীরা অসম সাহসিকতার পরিচয় দেওয়ায় তাদেরকে অভিবাদন জানিয়ে দেশবাসীকে সঙ্গে নিয়ে আন্দোলনের পাশে থাকবার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন তারা। ডাকসু নেতা আমান উল্লাহ আমান বলেন, হামলা করে রক্ত ঝরিয়ে হতাহত করে অতীতে ছাত্রসমাজ ও জনগণের ন্যায়সঙ্গত আন্দোলন কখনই স্তব্ধ করা যায়নি, এবারও যাবে না। ছাত্রসমাজ তার অমিত তেজ আর বিপুল প্রাণশক্তি নিয়ে অন্যায় অবিচারের বিরুদ্ধে ন্যায়ের পক্ষে দাবি আদায়ে আবারো রাজপথে নেমে এসেছে, তাদের বিজয় অনিবার্য।
(নব্বইয়ের গণ অভ্যুথ্থান ও কিছু কথা বই থেকে) চলমান-৩
|