বিশ্বনাথ (সিলেট) প্রতিনিধি : সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার তথা পৌর শহরের প্রাণ কেন্দ্র দিয়ে বহমান এককালের খড়স্্েরাতা ‘বাসিয়া নদী’র বর্জ্য পরিষ্কার পরিচ্ছন্নকরণ কার্যক্রম নিয়ে সর্বস্তরের জনসাধারণকে গণমাধ্যমের অবহিত করণের লক্ষ্যে সম্প্রতি গণমাধ্যম কর্মীর কাছে পৌর প্রশাসক ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) আলাউদ্দিন কাদের স্বাক্ষরিত একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তি প্রেরণ করা হয়েছে। বিশ্বনাথ পৌরসভার প্যাডে প্রেরিত সেই প্রেস বিজ্ঞপ্তি জনসাধারণের সামনে অবিকল তুলে ধরা হল।
পেস বিজ্ঞপ্তি লিখিত বক্তব্য অবিকল তুলে ধরা হলো, অত্যন্ত দুঃখজনক যে, বহু বছর ধরে সংকটে নিমজ্জিত বিশ্বনাথ উপজেলা তথা পৌর শহরের প্রাণকেন্দ্র দিয়ে প্রবাহিত ‘বাসিয়া নদী’ দখল-দূষণ ও অবহেলার কারণে প্রায় মৃত অবস্থায় পৌঁছে গেছে। বাসিয়া নদীতে প্রতিনিয়ত প্লাস্টিক, গৃহস্থলী বর্জ্য, পাশ্ববর্তী স্থাপনাসমূহ ও বাজার হতে পচনশীল ও অপচনশীল বর্জ্য ফেলা হচ্ছে।
সম্প্রতি বিশ্বনাথ পৌরসভার উদ্যোগে প্রাথমিকভাবে বাসিয়া নদীর দুই পাড় (উপজেলা কোর্ট পয়েন্ট হতে টিএন্ডটি মোড় পর্যন্ত) পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়। সিলেট সিটি কর্পোরেশনের কারিগরি সহায়তা ও পরামর্শ চাওয়া হলে তাদের সুপারভাইজার টিম দুইবার সরেজমিনে পরিদর্শন করেন। তারা শুধু নিজেদের লেবার দিয়ে পরিষ্কার বাবদ ১২ লাখ ৭৮ হাজার ৪৫০ টাকা এবং এক্সাভেটর ও লেবারের সমন্বয়ে পরিচ্ছন্নতা বাবদ ১৭ লাখ ১৮ হাজার ৪৫০ টাকার খসড়া প্রাক্কলন প্রস্তাব করেন। পরিকল্পনা মতে তারা নদীর প্রায় ৬ শত মিটার অংশের দুই পাড় ও দুটি ব্রীজের নীচ হতে প্রায় ২৫০ টন ময়লা অপসারণযোগ্য বলে উক্ত দুইটি পদ্ধতি প্রস্তাব করেন। পরবর্তীতে কারিগরি সীমাবদ্ধতা ও পৌরসভার আর্থিক সঙ্গতির কথা বিবেচনা করে পুনরায় পরিকল্পনা পেশ করার জন্য অনুরোধ করা হলে প্রায় ৬ লাখ ৪০ হাজার টাকার মধ্যে এক্সাভেটর ও লেবারের সমন্বয়ে টিএন্ডটি রোড হইতে বাসিয়া ব্রীজ পর্যন্ত কাজ করার পরিকল্পনা পাওয়া যায়। উল্লেখিত প্রস্তাবের আলোকে প্রথম ধাপে মার্চ মাসের ২২ থেকে ২৮ ইং পর্যন্ত পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। প্রতিদিন গড়ে ১০ থেকে ১২ ঘন্টা এক্সাভেটর ও লেবার দিয়ে পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম করা হয়। এ সময় ৭ দিনে এক্সাভেটর ও লেবারের সমন্বয়ে ট্রাকের মাধ্যমে প্রায় ৫০ টন ময়লা অপসারণ করা হয়। প্রথম ৩ দিন সিটি কর্পোরেশন তাদের ডাম্পিং স্টেশনে ময়লা নিয়ে যায় এবং পরবর্তীতে দ্রুত কাজের স্বার্থে ও ব্যয় সংকোচনের জন্য শেষ ৩ দিন পৌরসভার ডাম্পিং স্টেশনে ময়লা ফেলা হয়। ১ম পর্যায়ের এই পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রমে নদীর প্রায় ৪০০ মিটার অংশে ব্যয় হয়েছে প্রায় ৪ লাখ ৯২ হাজার টাকা। অবৈধ দখলদারদের কর্তৃক দায়েরকৃত দুইটি রিট পিটিশনে উচ্ছেদ নথির উপর মহামান্য হাইকোর্টের স্থগিতাদেশ থাকায় অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে আরও বৃহৎ পরিসরে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম গ্রহণ সম্ভব হয় নি। ভবিষ্যতে বিশ্বনাথবাসীর স্বার্থে এই বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম এবং একই সাথে পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক নদী পুনখনন বৃহৎ পরিসরে করার জন্য সরকারের কাছে পরিকল্পনা গ্রহণ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ এবং বরাদ্দ প্রদানের জন্য আবেদন করা হবে। কিন্তু এরই মধ্যে আমরা লক্ষ্য করছি যে, বাসিয়া নদীর দুই তীর ও ব্রীজের নিচে পরিষ্কারকৃত স্থানে পুনরায় ময়লা-আবর্জনা ফেলা হচ্ছে, যা খুবই দুঃখজনক। প্রাথমিকভাবে গৃহীত এই উদ্যোগ একটি বার্তা দেয়, পরিবেশ রক্ষা কেবল সরকার বা কোন সংস্থার একক দায়িত্ব নয়, বরং এটি আমাদের সকলের দায়িত্ব। তাই বাসিয়া নদী সংরক্ষণ, বর্জ্য ফেলার একটি নির্দিষ্ট স্থান নির্ধারণ এবং স্থানীয়দের সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য সকলের আন্তরিক সহযোগিতা একান্ত কাম্য।
প্রধান সম্পাদক ও প্রকাশক : মো: তাজুল ইসলাম
প্রধান কার্যালয়: ২১৯ ফকিরের ফুল (১ম লেন, ৩য় তলা), মতিঝিল, ঢাকা- ১০০০ থেকে প্রকাশিত ।
ফোন: ০২-৭১৯৩৮৭৮ মোবাইল: ০১৮৩৪৮৯৮৫০৪, ০১৭২০০৯০৫১৪
Web: www.dailyasiabani.com ই-মেইল: [email protected]