স্বৈরাচারের পতন না হওয়া পর্যন্ত আমরা কেউ ঘরে ফিরে যাবো না : ডাকসুর ভিপি আমান উল্লাহ আমান
তারিখ
:
09-04-2025
মিয়া আবদুল হান্নান : বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭২ সালের ডাকসুর সহ সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত হন বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন থেকে মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম এবং সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন মাহবুবুর জামান। সর্বশেষ ১৯৯০-১৯৯১ সেশনের জন্য সহ-সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদক পদে যথাক্রমে নির্বাচিত হন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের আমান উল্লাহ আমান , খায়রুল কবির খোকন ও মোঃ নাজিম উদ্দীন আলম।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ। মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের কার্যালয়, ২০১৫ সংক্ষেপে ডাকসু গঠিত ১৯২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষ (ডুসু হিসেবে),১৯৫৩-৫৪ শিক্ষাবর্ষ (ডাকসু হিসেবে) সদরদপ্তর, ডাকসু ভবন অবস্থান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস-সদস্যপদ ৩৮৪৯৩ (সর্বশেষ, জানুয়ারি ২০১৯ এর হিসেব মতে) ডাকসু (দাপ্তরিক ওয়েবসাইট) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (সংক্ষেপে: ডাকসু হিসেবে পরিচিত) হচ্ছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ। এটি ১৯২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে `ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ` নামে প্রতিষ্ঠিত হয়। পরবর্তীতে ১৯৫৩ সালে গঠনতন্ত্র সংশোধনের মাধ্যমে পূর্বনাম পরিবর্তন করে বর্তমান নাম `ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ` গ্রহণ করা হয়। ঢাবি কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদকে বাংলাদেশের দ্বিতীয় সংসদ বলা হয়। বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক চেতনা ও স্বাধিকার আন্দোলনের অন্যতম সূতিকাগার হল এই ছাত্র সংসদ। প্রতিষ্ঠাকালীন সময় থেকেই বাংলাদেশের সামগ্রিক ইতিহাসে গৌরবময় ভূমিকা রাখে এই ছাত্র সংসদ। ৫২`র ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে পরবর্তীতে ৬২`র শিক্ষা আন্দোলন, ৬৯-এর গণ অভ্যুত্থান, ৭১-এর স্বাধীন বাংলাদেশ নির্মাণের লক্ষ্যে রক্তক্ষয়ী জাতীয় মুক্তি সংগ্রাম এবং পরবর্তীতে স্বাধীন বাংলাদেশে স্বৈরাচার ও সামরিকতন্ত্রের বিপরীতে দাঁড়িয়ে গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গঠনে সাহায্য করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ। প্রতিষ্ঠা ও ইতিহাস - প্রতিষ্ঠা থেকে ১৯৯০ ১৯২২ সালের ১ ডিসেম্বর কার্জন হলে অনুষ্ঠিত শিক্ষকদের একটি সভায় ১৯২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে `ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ` নামে একটি ছাত্র সংসদ গঠনের সিদ্ধান্ত হয়। ১৯২৩ সালের ১৯ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন নির্বাহী পরিষদ পূর্বোল্লিখিত শিক্ষক সভার সিদ্ধান্তকে অনুমোদন দেয়। ১৯২৫ সালের ৩০ অক্টোবর সংসদের সাধারণ সভায় খসড়া গঠনতন্ত্র অনুমোদন করা হয়। পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাহী পরিষদ অনুমোদন করলে তা কার্যকর হয়। প্রথমবার ১৯২৪-২৫ সালে সম্পাদক ছিলেন যোগেন্দ্রনাথ সেনগুপ্ত, পরের বছর অবনীভূষণ রুদ্র। ১৯২৯-৩০ সালে সম্পাদক নির্বাচিত হন আতাউর রহমান খান। পরবর্তীতে ১৯৫৩-৫৪ শিক্ষাবর্ষে গঠনতন্ত্র সংশোধনের মাধ্যমে পূর্বনাম পরিবর্তন করে বর্তমান নাম `ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ` গ্রহণ করা হয়। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭২ সালের ডাকসুর সহসভাপতি হিসেবে নির্বাচিত হন বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন থেকে মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম এবং সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন মাহবুবুর জামান। আমান উল্লাহ আমান ১৯৭৭ সালে দেশ ও জাতির স্বার্থে রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভাবে অংশগ্রহণ করেন। ১৯৭৭ সালে ঢাকা কলেজের ছাত্রাবাসে থাকা অবস্থায় শৃংখলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। ১৯৮২ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কবি জসিম উদ্দিন হলে ছাত্র সংসদ নির্বাচনে সমাজকল্যাণ সম্পাদক পদে সর্বোচ্চ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। একই সাল ১৯৮২ সালে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য নির্বাচিত হন। এরপর ১৯৮৩ সালে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির ক্রীড়া সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৮৬ সালে ছাত্রদলের যুগ্ম সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৮৭ সালের ১৪ মার্চে ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচিত হন। ১৯৮৭ সালে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৮২ সাল থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের সঙ্গে সক্রিয়ভাবে যুক্ত হয়ে স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন। বিবিসির বাংলাদেশের প্রতিনিধি সাংবাদিক আতাউস সামাদ,ভয়েস অব আমেরিকার বাংলাদেশের প্রতিনিধি সাংবাদিক গিয়াস কামাল চৌধুরীর নেতৃত্বে জাতীয় প্রেসক্লাবের মাধ্যমে ডাকসুর ভিপি, সাধারণ সম্পাদক, সাংগঠনিক সম্পাদক পদ সহ ২২টি ছাত্র সংগঠনের নেত্বব্ন্দকে জাতীয় বীর উপাধিতে ভূষিত করেন। ১৯৯০ সালের ১ এপ্রিলে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সংসদের আহবায়ক নির্বাচিত হন। ১৯৯০ সালে ৬ জুন ডাকসুর ভিপি হিসেবে নির্বাচিত হন। ১৯৯০ সালে ১০ অক্টোবর তৎকালীন সময়ে ডাকসুর ভিপি হিসেবে শপথবাক্য পাঠ করান।এতে ২২টি ছাত্রসংগঠনের নেতৃবৃন্দসহ সাধারণ ছাত্র সমাজ অংশগ্রহন করেন। শপথটি ছিলো স্বৈরাচারের পতন না হওয়া পর্যন্ত আমরা কেউ ঘরে ফিরে যাবো না। ১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর ছাত্র- জনতার গণঅভ্যুত্থানে মাধ্যমে স্বৈরশাসক হুসাইন মুহাম্মদ এরশাদ সরকারের পতন করেই আলহাজ আমান উল্লাহ আমান তবেই ঘরে ফিরেছে। এরপর রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে আলহাজ আমান উল্লাহ আমানের পিছনে তাকাতে হয়নি, আলহাজ আমান উল্লাহ আমান একটি নাম, একটি ইতিহাস সঞ্চয় করেন। ঢাকা সর্বশেষ ১৯৯০-৯১ সেশনের জন্য সহ-সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদক পদে যথাক্রমে নির্বাচিত হন। ছাত্রদলের আমান উল্লাহ আমান ও খায়রুল কবির খোকন ও মোঃ নাজিম উদ্দিন আলম। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের ১৯৯০ থেকে এ পর্যন্ত ৩৬ বার নির্বাচন হয়েছে। ১৯৯০ থেকে বর্তমান ডাকসুতে ক্ষমতাসীন দল বিরোধী ছাত্রসংগঠন জয়ী হতে পারে—এই আশঙ্কা থেকে ১৯৯১ থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির সরকার গঠন করেন। এরপর নব্য স্বৈরশাসক শেখ হাসিনা সরকার। পরবর্তী আওয়ামীলীগ সরকারগুলো এ নির্বাচন অনুষ্ঠানে অনীহ ছিলো। উপাচার্য একে আজাদ চৌধুরী ডাকসু নির্বাচনের উদ্যোগ নিলেও নানা মহলের চাপ ও বাধায় শেষ পর্যন্ত নির্বাচন আর হয়নি। নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার বয়স ও সুযোগ না থাকায় ক্ষমতাসীন দলের ছাত্রসংগঠনগুলোর আওয়ামী লীগের বড় নেতাদেরও অনাগ্রহ ছিল। ক্যাম্পাসে নিয়ন্ত্রিত পরিবেশ বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা থেকে নির্বাচন অনুষ্ঠানের অর্থবহ কোনো উদ্যোগ নেয়নি আওয়ামী লীগের সরকার–ঘনিষ্ঠ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনও। ফলে বিশ্ববিদ্যালয় ও হলগুলোয় ক্রমে ক্রমে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে আওয়ামীলীগ সরকারি দলের ছাত্রসংগঠনের একক আধিপত্য। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ফাহমিদুল হক বলেন, `ছাত্র সংসদ না থাকায় মাস্তানতন্ত্র প্রতিষ্ঠা পেয়েছিলো ।
(নব্বইর গণ- গণঅভ্যুত্থান ও কিছু কথা বই থেকে) চলমান - ৪
প্রধান সম্পাদক ও প্রকাশক : মো: তাজুল ইসলাম
প্রধান কার্যালয়: ২১৯ ফকিরের ফুল (১ম লেন, ৩য় তলা), মতিঝিল, ঢাকা- ১০০০ থেকে প্রকাশিত ।
ফোন: ০২-৭১৯৩৮৭৮ মোবাইল: ০১৮৩৪৮৯৮৫০৪, ০১৭২০০৯০৫১৪
Web: www.dailyasiabani.com ই-মেইল: [email protected]