মিয়া আবদুল হান্নান : ১৯৮১ সালে জিয়াউর রহমান আগানগর (সংযুক্ত জিঞ্জিরা) বাবুবাজার বুড়িগঙ্গা নদী উপর বাবুবাজার ( মিটফোর্ড হাসপাতাল সংলগ্ন) সেতুর ভিত্তি প্রস্তুর উদ্বোধন করেন। বাংলাদেশের ৮ম রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ১৯৮১ সালের ৩০ মে চট্টগ্রামে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একদল কর্মকর্তা কর্তৃক নিহত হন। জিয়া তার রাজনৈতিক দল, বিএনপির স্থানীয় নেতাদের মধ্যে সংঘটিত একটি সংঘর্ষের মধ্যস্থতা করতে চট্টগ্রামে যান। ৩০ মে রাতে একদল সেনা কর্মকর্তা চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজ অধিকার করে জিয়াউর রহমানসহ আরও কয়েকজনকে গুলি করে। যার ফলশ্রুতিতে, জিয়া নিহত হন।জিয়াউর রহমান ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করলেও তিনি কিন্তু ব্রিজ করতে পারেননি। পথভ্রষ্ট ঘাতকদের হাতে নিহত হওয়ার পর উন্নয়নের ধামাচাপা পড়ে যায়। পরবর্তীেত ডাকসু ভিপি আমান উল্লাহ আমান বিশেষ অনুরোধে বিএনপির চেয়ারপারসন দেশ নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া বুড়িগঙ্গা নদী বাঁশের চাটাই দিয়ে তৈরিকৃত একটি বাঁশের চাটাই দিয়ে বানানো বাঁশের ভেলা দিয়ে তৈরিকৃত সেতু দিয়ে পায়ে হেঁটে কেরানীগঞ্জ এসে ছিলেন দেশ নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া। আমান উল্লাহ আমানের বিশেষ আবদার তিনি ওয়াদা বদ্ধ ছিলেন। শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান যে ব্রীজটির ফাইন্ডেশন করে গিয়েছিলেন। সেটি বেগম খালেদা জিয়া বুড়িগঙ্গা নদী উপর সেতুটি করে দিবেন।এবং তিনি কেরানীগঞ্জ উপজেলার ওয়াসপুর - বসিলা ও আলিপুর -ঢালী কান্দি ব্রীজ ২ টি ও করে দিয়েছিলেন। রাজধানী ঢাকার সঙ্গে সড়কপথে যোগাযোগের জন্য অবহেলিত জনগোষ্ঠীর জনপথ বাতির নীচে অন্ধকার এ অপবাদ গুছিয়ে কেরানীগঞ্জ ঢেলে সাজানো জন্য একাধিক ব্রীজ কালভার্ট তিনি করে দিয়েছিলেন।
একটি উল্লেখযোগ্য বিষয় আলহাজ আমান উল্লাহ আমান বলেন, ১৯৯২ সালে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া জাতিসংঘের অধিবেশনে অংশ গ্রহন করতে যাবেন, অধিবেশন শেষ করে তিনি লন্ডন আসবেন। লন্ডনের খোলা মাঠে তিনি একটি জনসভা করবেন। তৎকালীন সময়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী লেফটেন্যান্ট কর্লেন(অব.) মোস্তাফিজুর রহমান আমাদের বললেন,দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া তোমাদের একটি দায়িত্ব দিয়েছেন। আমান উল্লাহ আমান , ইলিয়াস আলী ও কামরুজ্জামান রতনকে লন্ডন যেতে হবে এবং দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া লন্ডনে আসার পর যে সমাবেশটি হবে, সেটির বিষয় তোমাদের বিভিন্ন স্টেটে গিয়ে গণসংযোগ করতে হবে। তখন আমান উল্লাহ আমান জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের আহ্বায়ক, ডাকসুর ভিপি, তিনি জাতীয় সংসদের সর্বকনিষ্ঠ সংসদ সদস্য। পররাষ্ট্রমন্ত্রী লেফটেন্যান্ট অব মোস্তাফিজুর রহমান আমাদের বললেন, তোমরা কম সময়ে লন্ডন চলে যাও। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া জাতিসংঘ থেকে লন্ডন আসবেন। আমান উল্লাহ আমান, ইলিয়াস আলী ও কামরুজ্জামান রতন দ্রুতই লন্ডন চলে গেলেন। লন্ডন গিয়ে প্রত্যেকটা স্টেটেই তারা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার জনসভার দাওয়াত পৌঁছাতে লাগলেন। বিভিন্ন স্টেটে ঘুরতে ঘুরতে তাঁদের হটাৎ চোখে পড়লো, টেমস নদীর উপর ট্যানেলসহ ১৭টি ব্রিজ, আর লন্ডন শহর এই পাড়ে আরেকটি শহর এবং টেমস নদীর ১৭ টি ব্রিজের মাধ্যমে নদীর ও-ই পাড়ে আরেকটি লন্ডন শহর গড়ে উঠেছে। হটাৎ চোখে পড়ল আমান উল্লাহ আমান বললেন, আমার মাথায় জেগে উঠলো আমার কেরানীগঞ্জ আজ অনেক অবহেলিত। যদি রাজধানীর ঢাকা শহর থেকে এভাবে ব্রিজ করে নদীর ওপাড়ে সংযোগ তৈরি করা হয়। তাহলে তো এই লন্ডন শহরের মতো আমার কেরানীগঞ্জ উন্নত হতে থাকবে। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা, ঢাকা সদর দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ আর উত্তর প্রান্তে রাজধানী ঢাকার শহর মাঝেই বুড়িগঙ্গা নদী। এতো অবহেলা থাকতে পারে না।এই কেরানীগঞ্জ উপজেলাকে লন্ডন শহরের মতো গড়ে তুলতে হলে, টেমস নদীর উপরে যে-ভাবে ১৭ টি ব্রিজ, বুড়িগঙ্গা নদীর উপরও একাধিক ব্রিজ করতে হবে। ঢাকাকে কেরানীগঞ্জের কাছে নিয়ে যেতে হবে। আমান উল্লাহ আমান ঢাকা -৩ আসনের সাংসদ সেখানে তিনি ২২ দিন অবস্থান করছিলেন। ডাকসুর ভিপি`র মাথায় প্রতিনিয়ত এই কথাটি ঘুরপাক খাচ্ছিলো। ম্যাডাম লন্ডন আসলেন খুব সফল জনসভা হলো।সমাবেশ শেষ করে স্থানীয় বাংলাদেশিদের সঙ্গে মতবিনিময় করে আমারা ঢাকার উদ্দেশ্য রওনা দিলেন। আমান উল্লাহ আমান এমপি বলেন , এরোপ্লেনে উঠে আমি ম্যাডামের খুব কাছাকাছি থাকার চেষ্টা করলাম। খুব সফল জনসভা হয়েছে। স্থানীয় বিপুল সংখ্যক বাংলাদেশি জনসভায় অংশ গ্রহণ করেন। তারা ম্যাডামকে সমর্থন দিয়েছেন, তাদের অংশ গ্রহণ ছিল ব্যাপক। ম্যাডাম খুবই খুশি হয়েছেন। আমি আসার পথেই ম্যাডামকে কিছু বলবো বলে পেছনে দাঁড়ালাম। ম্যাডাম চা পান করছিলেন। বললাম ম্যাডাম আমার একটু অনুরোধ ছিলো। ম্যাডাম আমাকে লন্ডনে জনসভা অর্গানাইজ করার জন্য দায়িত্ব দিয়েছিলেন। সেখানে আমরা আমাদের দায়িত্ব সঠিক ভাবে পালন করেছি। ইলিয়াস আলী ও কামরুজ্জামান রতনসহ। টেমস নদীর ওপারে আরেকটি লন্ডন শহর তৈরি হয়েছে। ম্যাডাম বললেন, তুমি কী বলতে চাচ্ছ? আমি বললাম ম্যাডাম টেমস নদীর উপর যদি ১৭টি ব্রিজ তৈরি হতে পারে, বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার পাশে কেরানীগঞ্জ ১৭টি ব্রিজ বুড়িগঙ্গা, বালু নদীর উপর কেন ব্রিজ হতে পারে না? ম্যাডাম বললেন, তুমি কী বলতে চাও খোলামেলা বলো।আমি বললাম, ম্যাডাম ১৭টি ব্রিজ না হোক, আমার কেরানীগঞ্জ একাধিক ব্রিজের প্রয়োজন। বাবুবাজার - জিঞ্জিরা ব্রিজ, আপনি কথা দিয়েছিলেন , করতে হবে। মোহাম্মদপুরের পাশে ওয়াসপুর- বসিলা ব্রিজ, দ্রুত করতে হবে। আরো কয়েকটি ব্রিজ করতে হবে।ম্যাডাম বললেন, ঠিক আছে, ঢাকায় আসো দেখি আমি কী করতে পারি। (নব্বইর গণ- গণঅভ্যুত্থান ও কিছু কথা বই থেকে) চলমান - ৬
|