অনলাইন ডেস্ক : খুলনার জিরোপয়েন্টে ঝটিকা মিছিলে অংশগ্রহণকারী নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগ এবং যুবলীগ ও আওয়ামী লীগের ২৫ নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। রোববার (২০ এপ্রিল) রাতে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (মিডিয়া অ্যান্ড সিপি) মোহা. আহসান হাবীব এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি জানান, অন্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
সোনাডাঙ্গা মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আব্দুল হাই জানান, মিছিল করার অভিযোগে বিকেলে বয়রা কলেজ মোড় এলাকা থেকে মো. ওয়ালিদ হাসান ইমন নামে একজনকে আটক করা তিনি আফজালের মোড় এলাকার বাসিন্দা হাবিবুর রহমান মোল্লার ছেলে।
রোববার সকালে জিরো পয়েন্ট এলাকায় মিছিল করার পর দুপুরে সোনাডাঙ্গা থানা এলাকার মজিদ সরণি, বয়রা এলাকার মহিলা কলেজ সড়ক ও দৌলতপুরে ঝটিকা মিছিল করা হয়। এদিকে আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিলের ঘটনায় প্রশাসনের বিরুদ্ধে নীরব ভূমিকার অভিযোগ তুলে বিকেলে খুলনা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে এনসিপি। খুলনায় এনসিপির কোনো কমিটি না থাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির নেতারা সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেন।
আওয়ামী লীগকে ‘সন্ত্রাসী সংগঠন’ উল্লেখ করে আহমেদ হামীম ও আবদুল্লাহ চৌধুরী নামে দুই নেতা বলেন, গত ৫ আগস্টের পর ছাত্র-জনতা রাজপথে থাকায় সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে রাস্তায় নামার সাহস পায়নি। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে দায়িত্ব বুঝিয়ে দিয়ে ছাত্র-জনতা নিজেদের কাজে ফিরে যাওয়ার পর যে জিরো পয়েন্টে ছাত্ররা রক্ত দিয়েছে, সেখানে পরাজিত শক্তির এমন আস্ফালন আমাদের পীড়া দেয়। প্রশাসনের এ নির্লিপ্ততা, নিষ্ক্রিয়তা প্রশ্নবিদ্ধ ও নিন্দনীয়। এটি শুধু প্রশাসনের ব্যর্থতা নয়, বরং গোটা রাষ্ট্র ব্যবস্থায় নিয়োজিত প্রশাসনের দুর্বলতার প্রতিফলন। সংবাদ সম্মেলন থেকে আহমেদ হামীম ও আবদুল্লাহ চৌধুরী প্রশাসনের নীরবতার যথাযথ ব্যাখ্যা দাবি করেন। পাশাপাশি দেশের সব গণতান্ত্রিক, প্রগতিশীল ও দেশপ্রেমিক শক্তিকে মতপার্থক্য ভুলে জাতির বৃহত্তর স্বার্থে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে সম্মিলিত অবস্থান গড়ে তোলার আহ্বান জানান। আওয়ামী লীগের মিছিলে অংশ নেওয়া ব্যক্তিদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও আওয়ামী লীগের রাজনীতি নিষিদ্ধের উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়। অপরদিকে আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিলের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ, নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে খুলনা বিএনপি। রোববার খুলনা বিএনপি মিডিয়া সেল থেকে পাঠানো বিবৃতিতে নেতারা বলেন, হঠাৎ করে নগরের একাধিক জায়গায় আওয়ামী লীগের ব্যানারে ঝটিকা মিছিলের নেপথ্যে কারা মদদ দিচ্ছে এবং কাদের আশ্রয়-প্রশ্রয়ে তারা মাঠে নামছেন মোটা দাগে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে হাজারো শহীদের রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে আবার ফিরে আসার জানান দিচ্ছে আওয়ামী লীগ।
বিবৃতিতে নেতারা পুলিশ ও সিভিল প্রশাসনের মধ্যে ঘাপটি মেরে থাকা আওয়ামী দোসরদের চিহ্নিত করার আহ্বান জানিয়েছেন। পাশাপাশি অন্তর্বর্তী সরকার ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলোকে সতর্ক দৃষ্টি রাখতে এবং মিছিলকারীদের গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন।
বিবৃতিদাতারা হলেন- বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম, তথ্য সম্পাদক আজিজুল বারী, মহানগর বিএনপির সভাপতি শফিকুল আলম, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান, মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শফিকুল আলম, জেলা বিএনপির সদস্যসচিব আবু হোসেন প্রমুখ।
এছাড়া খুলনার বিভিন্ন স্থানে আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিলকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন খুলনা মহানগর ইসলামী আন্দোলনের নেতারা। একইসঙ্গে তারা প্রশাসনের নীরব ভূমিকার প্রতিবাদ জানান।
বিবৃতিদাতারা হলেন- ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ খুলনা মহানগরের সভাপতি মুফতি আমানুল্লাহ, সেক্রেটারি মুফতি ইমরান হুসাইন, সহ-সভাপতি শেখ মো. নাসির উদ্দিন, আবু তাহের, হাফেজ আব্দুল লতিফ, মাওলানা দ্বীন ইসলাম, মো. ইমরান হোসেন মিয়া, মাওলানা সাইফুল ইসলাম ভূইয়া, মো. তরিকুল ইসলাম কাবির, মেহেদী হাসান সৈকত, মো. হুমায়ুন কবির, মুফতি ইসহাক ফরীদি, গাজী ফেরদাউস সুমন, মো. মঈন উদ্দিন ভূইয়া, অ্যাডভোকেট কামাল হোসেন, মোল্লা রবিউল ইসলাম তুষার, কারী মো. জামাল উদ্দিন, মাওলানা নাসিম উদ্দিন, বীর মুক্তিযুদ্ধা জিএম কিবরিয়া প্রমুখ।
|