মিয়া আবদুল হান্নান : ৩০ জুন বিশিষ্ট নাট্যকার, অভিনতা ও লেখক বহুগুণের প্রতিভাবান খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম ৭২ তম শুভ জন্মদিন চিরতরুণ সদালাপী খন্দকার আনোয়ারুল ইসলামের জন্ম ১৯৫৩ সালের ৩০ জুন, ঢাকা জেলায় জন্ম গ্রহন করেন। তৎকালীন বৃহত্তর ঢাকা সদর দক্ষিণ নবাবগঞ্জ উপজেলায় নবাবগঞ্জ থানার পুলিশ কোয়ার্টারে। পুলিশ কর্মকর্তা পিতা খন্দকার মতিউর রহমান এবং গৃহবধূ মা মোসাম্মৎ হালিমা খাতুনের ৬ ছেলে ৩ মেয়ে ৯ সন্তানের মধ্যে খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম ২য় এবং ছেলেদের মধ্যে সবার বড় । শৈশবের ৫ বছর কেটেছে চট্টগ্রামে-পুলিশ বিভাগে চাকরিরত নিঃসন্তান বড় কাকার কাছে। তারপর মায়ের স্নেহের টানে ফিরে আসতে হয় মা-বাবার কাছে রাজধানী ঢাকার সেগুন বাগিচার বাসভবনে।
প্রথম স্কুলে পা রাখেন ১৯৬০ সালে দয়াগঞ্জ প্রাইমারী স্কুলে তারপর নারিন্দা গভর্মেন্ট হাইস্কুলে। ১৯৭০ সালে মেট্রিক পাস করেন গেন্ডারিয়া হাইস্কুল থেকে। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর সোহরাওয়ার্দী কলেজ থেকে ইন্টারমিডিয়েট এবং জগন্নাথ কলেজ থেকে বাণিজ্য শাখায় স্নাতক ডিগ্রী অর্জন করেন।
খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম, বুলবুল ললিতকলা একাডেমি অফ ফাইন আর্টস (বাফা) থেকে নজরুল সংগীতের সার্টিফিকেট কোর্স, ইনস্টিটিউট অফ ভিজুয়াল আর্ট (ইভা) থেকে টেলিভিশন অভিনয় রীতি ও পদ্ধতি বিষয়ে সার্টিফিকেট কোর্স করেছেন। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি আয়োজিত ৭ দিনব্যাপী "নাট্যরচনা বিষয়ে ভাবনা বিনিময় ওয়ার্কসপ" অংশগ্রহণ করেছেন। উপরন্তু` বিভিন্ন সংগঠন আয়োজিত, দেশ এবং বিদেশের অনেক গুণী প্রশিক্ষকের নাট্য বিষয়ক কর্মশালায় অংশগ্রহণ করেছেন। শৈশব থেকে মঞ্চে নাটক দেখতেন ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউট হলে। সেই সময় তাঁর একজন নিকট আত্মীয় আলোকসজ্জার কাজ করতেন ঐ হলে তাঁর আমন্ত্রণে। বড় হয়ে তিনিও অভিনয় করবেন এমন একটি বাসনা তাঁর মধ্যে কাজ করতে থাকে।
প্রথম বড় কোন মঞ্চে অভিনয় করবার সুযোগ পান ১৯৭৪- সালে, কেরানীগঞ্জের শুভাঢ্যা গ্রামের বাৎসরিক নাটকে।"কুয়াশা কান্না" নাটকের একটি রোমান্টিক নায়কের চরিত্রে অভিনয় করার মাধ্যমে। তৎকালীন সময়ে পরিচালক ছিলেন, বিশিষ্ট চলচিত্র পরিচালক, অভিনেতা, নাট্যগুরু কালিদাস বাবু। প্রথম মঞ্চ নাটক নির্দেশনা দিয়েছেন ১৯৭৭ সালে শুভাঢ্যায়, যুবক ছেলেদের নিয়ে ফয়েজ আহমেদের "বোবাকান্না" নাটকটি। স্বরচিত নাটক নির্দেশনা শুরু প্লাটফর্ম নাটক দিয়ে। তারপর কেরানীগঞ্জ উপজেলার শুভাঢ্যা সমাজকল্যাণ সংঘের বাৎসরিক নাটক "ইতিহাস কথা বলে”। নাটকের প্রধান অতিথি ছিলেন ড. মিজানুর রহমান শেলী। নাটকটি দেখে তিনি খুবই খুশি হন অনেক প্রশংসা করলেন এবং সমাজ সচেতনতা মূলক কিছু ছোট ছোট ডকুমেন্টারি নাটক লেখার জন্য ফরমায়েশ দিলেন। ১৯৭৮ সালে তিনি আদমজী জুট মিলে আইন, কর, এবং নিরীক্ষা বিভাগে চাকরিতে যোগ দেন এবং একই বছর বিয়ে করেন গৌরনদী, বরিশালে। অবসর সময় বিভিন্ন সংগঠনের সাথে পুরাতন ঢাকার কিছু মঞ্চে বিনোদন মূলক নাটকে অভিনয় করতেন। তারপর ৮০`র দশকের গোড়ার দিকে শাঁখারী বাজারের প্রতিদ্বন্দ্বী ক্লাবে যোগদিয়ে নাট্যজন পরেশ আচার্য এর হাত ধরে গ্রুপ থিয়েটার চর্চা শুরু করেন। সেখানে তিনি ফুলেশ্বরী, বর্বর বাঁশী, সাজান হাই গাড়ীর হেডলাইট, হবু রাজার সুখ নিদ্রা, নিলাচলে মহাপ্রভু, বাবা সম্মেলন সহ বিভিন্ন নাটকে সম্মানের সাথে অভিনয় করেন। ১৯৮৫ সালে বিটিভিতে সালেক খানের প্রযোজনায়, এস এম হুদা রচিত "বাবা সম্মেলনে নাটকটি জিও মঞ্চে ধারণ হয়ে প্রচারিত হয়, এটাই ছিল তাঁর প্রথম টিভি পার্টন ৮৮ সালে প্রতিদ্বন্দ্বী ক্লাবের অভ্যন্তরীন ঝামেলায় নাটকর্তা বন্ধ প্রতি সেই সময় তিনি যোগ দেন লোকনাট্য দলে। চাকরির বিভিন্নই কিছুদিন থাকার পর আবার নাট্য চর্চায় ব্যাঘাত ঘটে। থেমে থাকতে পারেনা। নিজের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে এলাকার একঝাঁক যুবক ছেলেমেয়ে নিয়ে কর্মশালার মাধ্যমে শিখিয়ে পড়িয়ে তৈরি করে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মাঠে, উন্মুক্ত ময়দানে সফলতার সাথে চলে পথনাটকের প্রদর্শনী। চলমান -২
|