মিয়া আবদুল হান্নান : ১৯৯০ সালের জুন মাসের ৩০ তারিখ প্রতিষ্ঠা করলেন খন্দকার আনোয়ারুল ইসলামের ৭২ জন্মদিন পেরিয়ে ৭৩ বছরে পদার্পণ শুভ জন্মদিন উপলক্ষে "সুষম নাট্য সম্প্রদায় এবং ডিসেম্বর মাসে অংশগ্রহন করলেন ডাকসু আয়োজিত পথনাটক। উৎসবে-স্বরচিত ও নির্দেশিত "শেয়ালের বাম" নাটক নিয়ে। টিএসসি চত্ত্বরে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রথম মঞ্চায়ন হলো নাটকটির।
আয়োজক, বিশেষ অতিথি, দর্শক সবাই বেশ প্রশংসা করলেন। যা খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম এবং তাঁর স্বপ্নে গড়া সুষম নাট্য সম্প্রদায়কে সামনে এগিয়ে নেবার অনুপ্রেরণা জুগিয়েছিল। তারপর, সড়ক নাট্যদল এবং পথ নাটক পরিষদের উৎসবে যোগ দিয়ে আয়োজকদের খুশি করতে পেরে আরো একধাপ এগিয়ে গেল দলটি। এরপর "ইতিহাসে কলংক" লিখে যোগ দিলেন স্বাধীনতা একাডেমির বিজয় উৎসবে। তারপর লিখলেন মঞ্চ নাটক "শহরে নতুন" প্রথম মঞ্চায়ন হোল বেইলি রোডের গাইড হাউস মিলনায়তনে। মহিলা সমিতি মিলন-ায়তনে। এরপর লিখলেন "মামার বিয়ে ভঙ্গ" "গুণধর" সবকটি নাটকই দর্শক প্রিয়তা পেল। আর এ-কারণে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি আয়োজিত ঢাকা মহানগরীতে নাট্য চর্চারত সাতটি দল নিয়ে নাট্য উৎসবে "শহরে নতুন" নাটকটি মঞ্চায়নের জন্য ডাক পেল সুষম নাট্য সম্প্রদায়। আয়োজকদের কাছে নাটকটি সেরা নাটকের মর্যাদা পেয়েছিল। এর পর খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম পর্যায়ক্রমে নাটক লিখে মঞ্চে আনলেন: প্লাটফর্ম, চৌর্যবৃত্তির কর্মশালা, শেষকথা, কে ময়নার খুনি, মৃগতৃষা, আহ্লাদীর জন্মোৎসব, গয়না, নিখোঁজ মহাজনের সন্ধানে, মৌবনে কাক, সাধু সমাবেশ, হৃদয় খোঁড়া অনুভব-১৯৭১, এবং ভণ্ড পীরের খণ্ড চিত্র। তিনি তাঁর দলের সব নাটক নির্দেশনাও দিয়ে থাকেন।মঞ্চ নাটকের পাশাপাশি তিনি বেশকিছু টিভি সার্টকেও অভিনয় করেছেন এবং তাঁর লেখা অনেক নাটক বিটিভিতে মা ও শিশু, শীর্ষক স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা বিষয়ক অনুষ্ঠানে নিয়মিত প্রচারিত হয়েছে। এগুলো হলো সাজানো বাগান, জয়তুন বিধির নাতনী, বোধ, খেসারত, অবহেলা, মৌসুমীর বিয়ে, অপেক্ষা, একজন ময়নার গল্প। এইসব গণসচেতনতা মূলক নাটকের মধ্যে কিছু নাটক শতাধিক বারেরও বেশি প্রচারিত হয়েছে, বেশকিছু টিভি বিজ্ঞাপন চিত্রেও তিনি অভিনয় করেছেন। তিনি বেশকিছু দপ্তর এবং সংগঠনের নিজের এবং অন্য নাট্যকারের লেখা নাটকও নির্দেশনা দিয়েছেন। একসময় সুষম নাট্য সম্প্রদায় নানাবিধ কারণে চালিয়ে নেয়া কঠিন হয়ে যায়, তাই তিনি যোগ দেন থিয়েটারে (মমতাজউদদীনের দলে)। চাকরিতে ব্যস্ততার কারণে সেখানে যুক্ত থাকা খুব কঠিন হয়ে যায়। বছর খানেক বাদে পুনরায় নতুন পুরাতন নাট্যকর্মীদের নিয়ে শক্ত হাতে হাল ধরলেন সুষম নাট্য সম্প্রদায়ের এবং একের পর এক নতুন নাটক লিখে এবং নির্দেশনা দিয়ে গ্রুপ থিয়েটার চর্চায় দলটিকে একটি সম্মানের জায়গায় দাঁড় করাতে পেরেছেন বলা যায়। কাজের স্বীকৃতি হিসেবে তিনি বিভিন্ন সংগঠন থেকে সম্মাননাও পেয়েছেন। তিনি বিটিভির একজন তালিকা ভূক্ত নাট্যকার ও অভিনয় শিল্পী। খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বিয়ে করেছেন গৌরনদী বরিশালে, স্ত্রী: সাবিনা ইয়াসমিন। তিনি ১ ছেলে ও ২ সন্তানের জনক। ছেলে খন্দকার সাইফুল ইসলাম একজন সংগীত শিল্পী। ইংল্যান্ডের, নর্থ ইষ্ট ওয়েলস ইউনিভার্সিটি থেকে ডিপ্লোমা ইন সাউন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং পাস করে ঐ দেশেই স্বপরিবার বসবাস করছে। ২০১৪ সালে চ্যানেল আই সেরা কন্ঠ বাছাই অডিশনে সমগ্র ইউরোপ থেকে ১ম হয়েছিল। দেশে থাকাকালীন সে বিটিভি, এটিএন বাংলা, এবং চ্যানেল আইতে নিয়মিত গান গাইতো। শিশু শিল্পী হিসেবে একাধিকবার জাতীয় পুরস্কার পেয়েছে। চাকরির পাশাপাশি সে ঐদেশের বিভিন্ন বাংলা চ্যানেলে এবং বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে গান করে থাকে। বড় মেয়ে শামীমা নাজনীনের বিয়ে হয়েছে নয়াটোলা, ঢাকায়। স্বামী-নুরুল ইসলাম পাপ্পু। চলমান-৩
|