ছুটির দিনে মেট্রোরেল চলাচলের সময় বাড়লো
রাজধানীবাসীর কাছে জনপ্রিয় হয়ে ওঠা গণপরিবহন মেট্রোরেলের সময়সূচিতে পরিবর্তন আনা হয়েছে। এখন থেকে সাপ্তাহিক ছুটির দিন শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৩টার পরিবর্তে ৩টা থেকে মেট্রোরেল চলাচল শুরু হবে। সে হিসাবে ছুটির দিনে মেট্রোরেল চলাচলের সময় বেড়েছে। আগামীকাল ১৭ জানুয়ারি থেকে নতুন সময়সূচি কার্যকর হবে।
মেট্রোরেল পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) উপ-ব্যবস্থাপকের (প্রশাসন) সই করা নতুন সময়সূচি থেকে এ তথ্য জানা যায়। গতকাল বুধবার (১৫ জানুয়ারি) নতুন সময়সূচি দেওয়া হলেও সেটি গণমাধ্যমে আসে বৃহস্পতিবার।
নতুন সময়সূচিতে জানানো হয়, ১৭ জানুয়ারি থেকে প্রতি শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৩টার পরিবর্তে ৩টা থেকে মেট্রো চলাচল করবে। সে হিসেবে উত্তরা উত্তর স্টেশন থেকে প্রথম ট্রেন ছাড়বে বিকেল ৩টায় এবং সর্বশেষ ট্রেন ছাড়বে রাত ৯টায়।
অন্যদিকে, মতিঝিল থেকে প্রথম ট্রেন বিকেল ৩টা ২০ মিনিটে ছাড়বে এবং সর্বশেষ ট্রেন ছাড়বে রাত ৯টা ৪০ মিনিটে। উভয় দিকের চলাচলে প্রতি ট্রেনের মধ্যে বিরতি থাকবে ১০ মিনিট।
নতুন সূচি অনুযায়ী, উত্তরা উত্তর স্টেশন থেকে শুক্রবার দুপুর ২টা ৪৫ মিনিট থেকে এবং মতিঝিল স্টেশন থেকে দুপুর ৩টা ৫ মিনিটে একক যাত্রার টিকিট বিক্রি শুরু হবে। একই সঙ্গে র্যাপিড পাস কেনা এবং এমআরটি বা র্যাপিড পাসে টাকা প্রবেশ করানো যাবে।
মেট্রোরেল চলাচলের অন্য সব কার্যক্রম আগের মতোই অপরিবর্তিত থাকবে বলেও জানানো হয়েছে।
|
রাজধানীবাসীর কাছে জনপ্রিয় হয়ে ওঠা গণপরিবহন মেট্রোরেলের সময়সূচিতে পরিবর্তন আনা হয়েছে। এখন থেকে সাপ্তাহিক ছুটির দিন শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৩টার পরিবর্তে ৩টা থেকে মেট্রোরেল চলাচল শুরু হবে। সে হিসাবে ছুটির দিনে মেট্রোরেল চলাচলের সময় বেড়েছে। আগামীকাল ১৭ জানুয়ারি থেকে নতুন সময়সূচি কার্যকর হবে।
মেট্রোরেল পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) উপ-ব্যবস্থাপকের (প্রশাসন) সই করা নতুন সময়সূচি থেকে এ তথ্য জানা যায়। গতকাল বুধবার (১৫ জানুয়ারি) নতুন সময়সূচি দেওয়া হলেও সেটি গণমাধ্যমে আসে বৃহস্পতিবার।
নতুন সময়সূচিতে জানানো হয়, ১৭ জানুয়ারি থেকে প্রতি শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৩টার পরিবর্তে ৩টা থেকে মেট্রো চলাচল করবে। সে হিসেবে উত্তরা উত্তর স্টেশন থেকে প্রথম ট্রেন ছাড়বে বিকেল ৩টায় এবং সর্বশেষ ট্রেন ছাড়বে রাত ৯টায়।
অন্যদিকে, মতিঝিল থেকে প্রথম ট্রেন বিকেল ৩টা ২০ মিনিটে ছাড়বে এবং সর্বশেষ ট্রেন ছাড়বে রাত ৯টা ৪০ মিনিটে। উভয় দিকের চলাচলে প্রতি ট্রেনের মধ্যে বিরতি থাকবে ১০ মিনিট।
নতুন সূচি অনুযায়ী, উত্তরা উত্তর স্টেশন থেকে শুক্রবার দুপুর ২টা ৪৫ মিনিট থেকে এবং মতিঝিল স্টেশন থেকে দুপুর ৩টা ৫ মিনিটে একক যাত্রার টিকিট বিক্রি শুরু হবে। একই সঙ্গে র্যাপিড পাস কেনা এবং এমআরটি বা র্যাপিড পাসে টাকা প্রবেশ করানো যাবে।
মেট্রোরেল চলাচলের অন্য সব কার্যক্রম আগের মতোই অপরিবর্তিত থাকবে বলেও জানানো হয়েছে।
|
|
|
|
ঐক্য নষ্টের আশঙ্কায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে জুলাই অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র দিতে মানা করেছিলেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) জুলাই ঘোষণাপত্র তৈরির লক্ষ্যে রাজধানীর বেইলি রোডে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সর্বদলীয় ঐক্যের বৈঠকে সূচনা বক্তব্যে তিনি এ কথা জানান।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘মাঝে একদিন ছাত্ররা এসে বললো আমার উপস্থিতে তারা একটা ঘোষণা দেবে, প্রক্লেমেশন করবে। তখন এ বিষয়ে আমি বুঝতে চাইলাম। তাদের কাছ থেকে শুনে আমি বললাম, এটা হবে না। এটা আমার চাওয়াটাও ঠিক হবে না, তোমাদেরও করাটা ঠিক হবে না। তোমরা যদি ৫ অগাস্ট ফিরে যেতে চাও, তাহলে সেদিনের পরিপ্রেক্ষিতে যা হয়েছিল, সেটা রিক্রিয়েট করতে হবে। এটা একা করা যাবে না।’
তিনি বলেন, ‘সেদিনের দিনের পুরো অনুভূতিই ছিল এক হওয়ার অনুভূতি। কেউ বলেনি, তুমি অমুক, তুমি তমুক। কাজেই তোমরা যদি করতে চাও, স্পষ্ট সবাইকে নিয়ে করতে হবে। তাছাড়া করাটা ঠিক হবে না। তোমরা ৫ আগস্ট যে একতা দিয়ে সৃষ্টি করেছিলে, সেটার অবমাননা হবে।’
ড. ইউনূস বলেন, ‘ঐক্যবদ্ধভাবে করতে না পারলে উদ্দেশ্যে ব্যাহত হবে। ঐক্যের মাধ্যমে করলে সবার মনে সাহস আসবে। সবাই ভাববে আমরা এখনও জেগে আছি। আমরা ভোতা হয়ে যায়নি। আমরা জাতি হিসেবে ঐক্যবদ্ধ আছি। আমি যতদিন আছি, একতা নিয়েই থাকব। কাজেই সেই পথেই আমাদের চলতে হবে।’
রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘যখন নিজেরা নিজেরা কাজ করি, তখন একটু দুর্বল মনে করি। আবার যখন সবাই একসঙ্গে কাজ করি তখন মনের মধ্যে সাহস বাড়ে, একতাবদ্ধভাবে আছি। আপনাদের সঙ্গে দেখা হলে, বসতে পারলে খুব ভালো লাগে, মনে সাহস পাই।’
|
|
|
|
ভারতে মার্কিন বিদায়ী রাষ্ট্রদূত এরিক গারসেটি বলেছেন, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক নির্বাচন ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত দেখতে চায় দিল্লি-ওয়াশিংটন।
বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) ভারতের একটি টেলিভিশনে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে আমেরিকা ও ভারতের ভূমিকা প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা জানান তিনি।
এরিক গারসেটি বলেন, ‘আমরা দুই রাষ্ট্রই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বাংলাদেশে গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রতিষ্ঠিত দেখতে চাই। এটি বাংলাদেশকে তার পরবর্তী অধ্যায় খুলতে সাহায্য করতে পারে।’
‘ভারত ও মার্কিন সম্পর্কের জন্য বাংলাদেশ সম্ভবত একটি সমস্যা ছিল। শেখ হাসিনা সরকারের পতন ভারতের জন্য একটি ধাক্কা হিসেবে দেখা হয়। বাংলাদেশে জামায়াতে ইসলামীর উত্থানের পাশাপাশি চীনাদের দৌড়ঝাঁপ বেড়েছে। এসব বিষয় আপনারা কীভাবে দেখছেন?’
এসব প্রশ্নের জবাবে বিদায়ী মার্কিন রাষ্ট্রদূত সাংবাদিক সিদ্ধান্ত সিবালকে বলেন, ‘আমেরিকা-ভারত একটি শান্তিপূর্ণ, গণতান্ত্রিক দক্ষিণ এশিয়া দেখতে চায়। আমরা সেই নীতিগুলো ভাগ করি। আমরা এটি একসঙ্গে সমন্বয় করছি। আমরা স্পষ্টভাবে বলেছি, বাংলাদেশ হোক বা যেকোনো দেশ, ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের নির্যাতন করা উচিত নয় এবং আমি মনে করি আমাদের একটি সুযোগ আছে। আমরা দুই রাষ্ট্রই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বাংলাদেশে গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রতিষ্ঠিত দেখতে চাই। এটি বাংলাদেশকে তার পরবর্তী অধ্যায় খুলতে সাহায্য করতে পারে। এটি অতীত সম্পর্কে নয়, আমরা একসঙ্গে কী করতে পারি তা নিয়ে।’
|
|
|
|
আলোচিত জুলাই গণ-অভ্যুত্থান ঘোষণাপত্রের খসড়ায় বর্তমান সংবিধান সংশোধন বা প্রয়োজনে বাতিল করার কথা বলা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) বিকেলে জুলাই ঘোষণাপত্র চূড়ান্ত করতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের নিয়ে বৈঠক করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বৈঠকে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামীসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা অংশ নেন। এ ছাড়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির নেতারাও বৈঠকে অংশ নেন।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থান ঘোষণাপত্রের খসড়ায় তুলে ধরা হয় এই ভূখণ্ডের মানুষের স্বাধীনতা অর্জনের জন্য যুগের পর যুগ সংগ্রামের প্রসঙ্গ। এ ছাড়া পাকিস্তান আন্দোলনের মাধ্যমে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসন থেকে ১৯৪৭ সালে স্বাধীনতা অর্জন, ১৯৭১ সালে রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার কথাও খসড়ায় তুলে ধরা হয়। এরপর বিভিন্ন প্রেক্ষাপট তুলে কীভাবে ছাত্র-জনতার উত্তাল গণবিক্ষোভ গণ-অভ্যুত্থানে রূপ নেয় ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে যান, সে প্রসঙ্গও রয়েছে।
খসড়ায় বলা হয়, আমরা, ছাত্র-জনতা সেই অভিপ্রায়বলে আত্মমর্যাদা, সাম্য ও সামাজিক ন্যায়বিচারের যে আদর্শে মুক্তিযুদ্ধ পরিচালিত হয়েছে, সেই আদর্শ বাস্তবায়নের জন্য সার্বভৌম জনগোষ্ঠী হিসেবে নিজেদের সংগঠিত করলাম। আমরা, প্রহসনের নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত সংসদ ভেঙে দেওয়ার আহবান জানাচ্ছি এবং ছাত্র-জনতার পক্ষ থেকে রাষ্ট্রের নিরাপত্তা, স্থিতিশীলতা ও অখণ্ডতা রক্ষার্থে ড. মুহাম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের আহ্বান জানালাম। আমরা সুশাসন ও সুষ্ঠু নির্বাচন এবং ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার পুনরাবৃত্তি রোধ নিশ্চিত করার জন্য অন্তর্বর্তী সরকার প্রয়োজনীয় সংস্কার সম্পন্ন করবে, এই অভিপ্রায় ব্যক্ত করলাম।
আমরা ফ্যাসিবাদ ও স্বৈরাচারকে লালন করার দলিল ১৯৭২ সালের সংবিধান সংশোধন বা প্রয়োজনে বাতিল করার অভিপ্রায় ব্যক্ত করলাম। আমরা জুলাই গণ-অভ্যুত্থানকালে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকার কর্তৃক সংগঠিত গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ এবং রাষ্ট্রীয় সম্পত্তি লুটপাটের অপরাধগুলোর উপযুক্ত বিচার করা হবে, এই অভিপ্রায় ব্যক্ত করলাম।
আমরা এই ঘোষণা করলাম যে, ১৯৭২ এবং ১/১১ কালের রাজনৈতিক বন্দোবস্তের পরিবর্তন ঘটানোর জন্য আমাদের একটি নতুন জনতন্ত্র (রিপাবলিক) প্রয়োজন, যা রাষ্ট্রে সকল ধরনের নিপীড়ন, শোষণ ও বৈষম্যর অবসান ঘটাবে এবং এ দেশের তরুণসমাজের প্রত্যাশাকে ধারণ করতে পারবে। আমরা এই অভিপ্রায় ব্যক্ত করলাম যে এই ঘোষণাপত্রকে উপযুক্ত রাষ্ট্রীয় ও সাংবিধানিক স্বীকৃতি দিতে হবে।
উল্লেখ্য, গত ৩১ ডিসেম্বর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র প্রকাশ করতে চেয়েছিল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি। তখন এই ঘোষণাপত্র নিয়ে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে নানা আলোচনা তৈরি হয়। পরে ৩০ ডিসেম্বর রাতে জরুরি প্রেস ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব জানান, অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের একটি ঘোষণাপত্র তৈরির উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।
এ ঘটনার পরে ওই রাতেই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি বৈঠক করে ৩১ ডিসেম্বর শহীদ মিনারে ‘মার্চ ফর ইউনিটি’ নামে কর্মসূচি ঘোষণা করে। ওই কর্মসূচি থেকে জুলাই ঘোষণাপত্র প্রকাশ করতে অন্তর্বর্তী সরকারকে ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়।
|
|
|
|
দেশে খাদ্যপণ্যের মজুদ বাড়ানোর লক্ষ্যে ভারত ও পাকিস্তান থেকে ৫০ হাজার টন করে এক লাখ চাল আমদানির আলাদা দুটি প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে সরকার।
বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) সচিবালয়ে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয়-সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটির বৈঠকে এই অনুমোদন দেওয়া হয়।
এদিন ‘রাষ্ট্রীয় জরুরি প্রয়োজনে’ উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে আন্তর্জাতিক বাজার থেকে তিন লাখ টন চাল আমদানির একটি প্রস্তাবেও সায় দেয় অর্থনৈতিক বিষয়-সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটি। দেশে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির পাশাপাশি টিসিবির মাধ্যমেও সুলভ মূল্যে চাল বিক্রি করে সরকার। এর ফলে চালের মজুদ কমে গেছে।
খাদ্য মন্ত্রণালয়ের বৃহস্পতিবারের হিসাবে, সরকারের কাছে ১২ লাখ ৪১ হাজার টন খাদ্যপণ্য মজুদ রয়েছে। এর মধ্যে চাল রয়েছে ৮ লাখ ৪০ হাজার টন।
চলতি অর্থবছরের ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত সরকারিভাবে চাল আমদানি হয় ৩৫ হাজার টন চাল। আগের অর্থবছরে চাল আমদানি করতে হয়নি। এবারের আমন মৌসুমে সাড়ে ৬ লাখ টন চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করে সরকার। তবে সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে অগ্রগতি কম। গত ১৭ নভেম্বর থেকে শুরু হওয়া এই ক্রয় অভিযান ১০ মার্চের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা। এখন পর্যন্ত দুই লাখ ৬৮ হাজার ৪৩৬ টন সেদ্ধ চাল ও ৪৬ হাজার ৬০৬ টন আতপ চাল সংগ্রহ করা গেছে।
বৃহস্পতিবারের বৈঠকের আলোচ্যসূচি থেকে জানা যায়, ভারতের গুরুদেও এক্সপোর্ট করপোরেশনের কাছ থেকে ৫০ হাজার টন সেদ্ধ চাল কেনা হবে। খরচ পড়বে ২৭৭ কোটি ২ লাখ ৫৪ হাজার টাকা। পাকিস্তানের কাছ ৫০ হাজার টন আপত চাল কিনতে খরচ পড়বে ৩০৪ কোটি ৩৯ লাখ টাকা।
এছাড়াও বৈঠকে ফেব্রুয়ারি মাসের জন্য দুই কার্গো এলএনজি কেনার প্রস্তাবও পাস হয়। সংযুক্ত আরব আমিরাতের ওকিউ ট্রেডিংয়ের কাছ থেকে প্রতি ইউনিট ১৪ দশমিক ৪৪ ডলার এবং সিঙ্গাপুরের ভিটল এশিয়ার কাছ থেকে ১৩ দশমিক ৮২ ডলার দরে কেনা হচ্ছে এবারের এলএনজি। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের জন্য ৯৭ দশমিক ৯১ টাকা কেজি দরে ১০ হাজার টন মসুর ডাল, ১১৭ দশমিক ৯০ টাকা দরে সিটি সুগার মিলের কাছ থেকে ৫ হাজার টন চিনি, মেঘনা সুগার মিলের কাছ থেকে ১১৫ টাকা ২৫ পয়সা দরে ১০ হাজার টন চিনি কেনার প্রস্তাবও অনুমোদন পেয়েছে। এছাড়া টিকে গ্রুপের কাছ থেকে ১৬২ টাকা ৯৫ পয়সা দরে দুই কোটি ২০ লাখ লিটার পরিশোধিত পাম তেল ও ১৭১ টাকা ৫০ পয়সা দরে এক কোটি ১০ লাখ লিটার সয়াবিন তেল কেনার প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে কমিটি।
|
|
|
|
রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব সরওয়ার আলমকে আহ্বায়ক করে প্রেস অ্যাক্রিডিটেশন নীতিমালা পুনর্মূল্যায়নের জন্য ১৭ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠন করেছে সরকার।
বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় থেকে এ-সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী প্রেস অ্যাক্রিডিটেশন নীতিমালা ২০২২ পুনর্মূল্যায়নের জন্য এ কমিটি গঠন করা হয়েছে। রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব সরওয়ার আলমকে কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে। আর সদস্য সচিব হয়েছেন তথ্য অধিদপ্তরের উপপ্রধান তথ্য অফিসার মোহাম্মদ কামরুজ্জামান ভূঁঞা।
কমিটির সদস্যরা হলেন, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব কাউসার আহাম্মদ, জননিরাপত্তা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব আতাউর রহমান খান, তথ্য অধিদপ্তরের প্রধান তথ্য অফিসার নিজামুল কবীর, চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খালেদা বেগম, প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের উপপ্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার, সিনিয়র সহকারী প্রেস সচিব ফয়েজ আহম্মেদ, বিএফইউজে-এর ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ওবায়দুর রহমান শাহীন, ডিইউজের সভাপতি শহিদুল ইসলাম, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি আবু সালেহ আকন, ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের সভাপতি দৌলত আক্তার মালা সভাপতি, ব্রডকাস্ট জার্নালিস্ট সেন্টারের ট্রাস্টি ইলিয়াস হোসেন, বাংলাদেশি জার্নালিস্টস ইন ইন্টারন্যাশনাল মিডিয়ার (বিজেআইএম) প্রতিষ্ঠাতা আহ্বায়ক শিকদার আবীর মাহমুদ (স্যাম) জাহান, ডিক্যাব এবং বিএসআরএফের সদস্য মুস্তাফিজুর রহমান, রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডারসের (আরএসএফ) বাংলাদেশ করেসপন্ডেন্ট সালিম সামাদ, বাংলাদেশ ফটোজার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ইন্দ্রজিৎ কুমার ঘোষ।
কমিটির কার্যপরিধিতে বলা হয়, প্রেস অ্যাক্রিডিটেশন নীতিমালা-২০২২ পুনর্মূল্যায়ন করে প্রয়োজনীয় সংযোজন, সংশোধন ও পরিমার্জনের বিষয়ে সুপারিশ প্রণয়ন করবে। কমিটি আগামী ১০ ফেব্রুয়ারির মধ্যে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর প্রতিবেদন দেবে।
|
|
|
|
২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে তাপমাত্রা বেড়েছে পঞ্চগড়ে। তবে উত্তরের হিমেল হাওয়া অব্যাহত থাকায় কমেনি শীতের প্রকোপ।
বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) সকাল ৬টায় পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১০ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিতেন্দ্রনাথ রায়।
সরেজমিনে বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, তাপমাত্রা কিছুটা বাড়লেও কনকনে ঠান্ডার পাশাপাশি ঘন কুয়াশায় ঢাকা পথঘাট। শীতের কারণে খেটে খাওয়া মানুষদের দৈনন্দিন কাজকর্মে ব্যাঘাত ঘটছে। স্থানীয় প্রশাসন ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলো শীতার্তদের মাঝে কম্বল বিতরণের উদ্যোগ নিয়েছে।
এ বিষয়ে তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিতেন্দ্রনাথ রায় বলেন, ‘মৃদু থেকে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহে কেটে গিয়ে তাপমাত্রা বাড়লেও শীতের প্রকোপ এখনো কেটে যায়নি। প্রয়োজনীয় সতর্কতা অবলম্বনের জন্য স্থানীয় বাসিন্দাদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।
এর আগে বুধবার (১৫ জানুয়ারি) সকাল ৬টায় তেঁতুলিয়ায় দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৯ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গত মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হয় তেঁতুলিয়ায় ৯ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
|
|
|
|
জেলা প্রতিনিধি : গাজীপুর মহানগরীর কোনাবাড়ি পারিজাত এলাকায় ঝুটের গোডাউনে অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে। আগুন নিয়ন্ত্রণে দমকল বাহিনীর চারটি ইউনিট কাজ করে। বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) ভোর ৪টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
কোনাবাড়ি মডার্ন ফায়ার সার্ভিসের ওয়ার হাউজ ইন্সপেক্টর মো. সাইফুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তবে এ ঘটনায় কেউ হতাহত হয়নি।
স্থানীয় বাসিন্দা ও দমকল বাহিনী জানায়, ভোর ৪টার দিকে পারিজাত এলাকার একটি ঝুট গোডাউনে আগুন লাগে। প্রথমে স্থানীয়রা আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। পরে খবর পেয়ে কোনাবাড়ি মডার্ন ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট ও পরে সারাবো মডার্ন ফায়ার সার্ভিসের আরও দুটি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে। সকাল ৯টার দিকে নিয়ন্ত্রণে রয়েছে আগুন। তবে দমকল বাহিনী ডাম্পিংয়ের কাজ করছে।
কোনাবাড়ি মডার্ন ফায়ার সার্ভিসের ওয়ার হাউজ ইন্সপেক্টর মো. সাইফুল ইসলাম জানান, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে। আগুন নিয়ন্ত্রণে এলেও এখনো নির্বাপণের কাজ চলমান। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এই মুহূর্তে বলা যাচ্ছে না। ডাম্পিং কাজ শেষে বিস্তারিত জানানো হবে।
|
|
|
|
অধ্যাপক আলী রীয়াজের নেতৃত্বাধীন সংবিধান সংস্কার কমিশন চায় বাংলাদেশের জনগণের নাগরিকত্ব হিসেবে ‘বাঙালি’ বাদ দিয়ে ‘বাংলাদেশি’ নাগরিকত্বের পরিচয়।
বুধবার (১৫ জানুয়ারি) সকালে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে। বিধান অনুযায়ী বর্তমানে ‘বাংলাদেশের জনগণ জাতি হিসেবে বাঙালি...’।
তাইতো সংবিধান সংস্কার কমিশন থেকে সুপারিশ করা হয়- বর্তমান অনুচ্ছেদ ৬ (২) ‘বাংলাদেশের নাগরিকগণ “বাংলাদেশি” বলে পরিচিত হবেন’ হিসেবে প্রতিস্থাপনের।
সুপারিশের মধ্যে আরও রয়েছে- রাষ্ট্র পরিচালনার চার মূলনীতির মধ্যে তিনটিই বাদ দেওয়ার। সেই সঙ্গে শুধু গণতন্ত্র বহাল রেখে রাষ্ট্র পরিচালনায় নতুন আরও চারটি মূলনীতি সংযুক্তিরও সুপারিশ করা হয়েছে প্রতিবেদনে। এ ছাড়া, সংবিধানে ‘গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ’-এর পরিবর্তে ‘জনগণতন্ত্রী বাংলাদেশ’ এবং ‘প্রজাতন্ত্রে’র পরিবর্তে ‘নাগরিকতন্ত্র’ শব্দ ব্যবহারের সুপারিশও করেছে কমিশন।
বর্তমানে সংবিধানে রাষ্ট্র পরিচালনার যে চার মূলনীতি রয়েছে সেগুলো হলো জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতা। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭২ সালে যে সংবিধান প্রণীত হয়েছিল, তাতে রাষ্ট্র পরিচালনার এই চার মূলনীতি গৃহীত হয়েছিল।
বর্তমানের এই চার মূলনীতির মধ্যে শুধু ‘গণতন্ত্র’ রাখা হয়েছে প্রস্তাবিত নতুন পাঁচ মূলনীতির মধ্যে। সঙ্গে নতুন মূলনীতি হিসেবে সাম্য, মানবিক মর্যাদা, সামাজিক সুবিচার ও বহুত্ববাদ সংযুক্তির সুপারিশ করা হয়েছে।
সংবিধান সংস্কার কমিশনের সুপারিশে বলা হয়েছে, ১৯৭১ সালের স্বাধীনতাযুদ্ধের মহান আদর্শ এবং ২০২৪ সালের গণ-অভ্যুত্থানের জন-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলনস্বরূপ সংবিধান ও রাষ্ট্রের মূলনীতি হিসেবে এই পাঁচটি নীতি প্রস্তাব করা হয়েছে।
সেইসঙ্গে তিন মূলনীতি বাদ দেওয়ার বিষয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সংবিধানের মূলনীতি ও রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি হিসেবে ধর্মনিরপেক্ষতা, সমাজতন্ত্র ও জাতীয়তাবাদ এবং এ সংশ্লিষ্ট সংবিধানের ৮, ৯, ১০ ও ১২ অনুচ্ছেদগুলো বাদ দেওয়ার সুপারিশ করছে কমিশন।
প্রতিবেদনের সারসংক্ষেপ তুলে ধরে সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান অধ্যাপক আলী রীয়াজ জানান, সংবিধান সংশোধনের ক্ষেত্রে গণভোটের সুপারিশ করা হয়েছে। এছাড়া দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদ চালুরও সুপারিশ করা হয়েছে তার কমিশনের পক্ষ থেকে।
সংবিধান সংস্কার কমিশন ছাড়াও প্রধান উপদেষ্টার কাছে নিজেদের সংস্কারের সুপারিশসংবলিত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে আরও তিনটি কমিশন। এগুলো হলো নির্বাচনব্যবস্থা, দুর্নীতি দমন কমিশন ও পুলিশ সংস্কার কমিশন।
সংস্কার কমিশনগুলোর সুপারিশ নিয়ে এখন রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করবে অন্তর্বর্তী সরকার। সেই আলোচনার মাধ্যমে যেসব বিষয়ে ঐকমত্য হবে, সেসব সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়ন করা হবে। ফেব্রুয়ারিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে এই আলোচনা হবে বলে বুধবার (১৫ জানুয়ারি) এক সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়েছে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের পক্ষ থেকে।
|
|
|
|
ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গীর বেউরঝাড়ি সীমান্ত থেকে আটক বাংলাদেশিকে ফেরত দিয়েছে ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)।
বুধবার (১৫ জানুয়ারি) সন্ধ্যা ৭টার দিকে বেউরঝাড়ি সীমান্তে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও বিএসএফের মধ্যে পতাকা বৈঠকের পর ওই ব্যক্তিকে বিজিবির কাছে হস্তান্তর করা হয়।
এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ঠাকুরগাঁও ৫০ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. তানজীর আহম্মদ বিষয়টি নিশ্চিত করেন। এর আগে মঙ্গলবার রাতে বালিয়াডাঙ্গীর আমজানখোর ইউনিয়নের বেউরঝাড়ি সীমান্তের ওপারে ভারতের ৩০০ গজ ভেতরে বড়বিল্লা এলাকা থেকে ওই ব্যক্তিকে আটক করে বিএসএফ। তার নাম শেখ আলীমুর রহমান (৩৮)। বাড়ি খুলনায়। তার বাবার নাম রহমান।
বিজিবি সূত্রে জানা যায়, গতকাল রাত ৮টার দিকে বালিয়াডাঙ্গীর বেউরঝাড়ি সীমান্তের ৩৮০ নম্বর মূল পিলারের ৪ নম্বর সাব-পিলার এলাকা দিয়ে ভারতের ভেতরে প্রবেশ করেন আলীমুর। পরে বিএসএফের ১৫২ বড়বিল্লা ক্যাম্পের টহল দল তাকে আটক করে নিজেদের ক্যাম্পে নেওয়া হয়। আটক আলীমুরকে ভারতের গোয়ালপুকুর থানায় হস্তান্তর করা হয়। এ ঘটনার পর আজ সন্ধ্যা সাতটার দিকে ১৫২ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের সঙ্গে ঠাকুরগাঁও ৫০ বিজিবির পতাকা বৈঠক হয়। এতে অংশ নেন ঠাকুরগাঁও ৫০ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. তানজীর আহম্মদ ও ১৫২ বিএসএফের কমান্ড্যান্ট। পতাকা বৈঠক শেষে বেউরঝাড়ি শূন্যরেখা দিয়ে আটক আলীমুরকে বিজিবির কাছে হস্তান্তর করা হয়।
লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. তানজীর আহম্মদ গণমাধ্যমকে বলেন, আটকের খবর শুনে বিএসএফের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। নিরলস চেষ্টার পর বিএসএফের হাতে আটক শেখ আলীমুরকে ফেরত আনতে পেরেছি।
|
|
|
|
রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ বাহিনী পুলিশকে প্রাণঘাতী অস্ত্র না দেওয়া, রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত করাসহ বেশ কিছু সুপারিশ করেছে পুলিশ সংস্কার কমিশন। বুধবার (১৫ জানুয়ারি) অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে জমা দেওয়া প্রতিবেদনে কমিশন এসব সুপারিশ করেছে।
আওয়ামী লীগ গত ১৫ বছরের শাসনামলে পুলিশকে ভিন্নমত দমনের হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করেছিল। দলের অনুগত কর্মীদের মতো কাজ করেন কিছু পুলিশ কর্মকর্তা। তাদের জন্য লোভনীয় পোস্টিং, যোগ্যদের পাশ কাটিয়ে পদোন্নতি ও দুর্নীতির সুযোগ করে দেওয়া হয়। জুলাই-আগস্টের বিক্ষোভের সময় নির্বিচারে প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার করে পুলিশ, যার ফলে ব্যাপক প্রাণহানি ঘটে। এজন্য প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার বন্ধে এ সুপারিশ করা হয়। এ ছাড়া পুলিশের নিয়োগ, পদোন্নতি এবং নজরদারি নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশ রয়েছে।
রাষ্ট্র সংস্কারের সুনির্দিষ্ট সুপারিশ নিয়ে এ দিন তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কাছে পুলিশ ছাড়াও, নির্বাচন ব্যবস্থা, দুদক ও সংবিধান সংস্কার কমিশন তাদের প্রতিবেদন পেশ করেছে।
পুলিশ সংস্কার কমিশনের প্রধান সফর রাজ বলেছেন, ভিড় বা জনসমাগম নিয়ন্ত্রণে বিশেষ কিছু নিয়মকানুন আছে। এটার ব্যপারে আমরা কোন আইডিয়া দেইনি। ইউরোপের মডেলটাই ফলো করতে বলেছি। সেটার ব্যপারে পুলিশ ডিপার্টমেন্টের পক্ষ থেকে ডিটেল একটা গাইডলাইন তৈরি করে দেওয়া হয়েছে।
‘অর্থাৎ ইউজ অব ফোর্স ৫টা স্তরে হবে। বেআইনি সমাবেশ, শোভাযাত্রা নিয়ন্ত্রণে যে শক্তি প্রয়োগ করা হয়, এ শক্তি প্রয়োগটা পরিস্কার হয়ে যাবে। ক্রাউডের ক্ষেত্রে কী কী করতে হবে। ভবিষ্যতেও যদি কোন ঘটনা ঘটে কেউ প্রাণহীন হবে না।’
জুলাই-অগাস্টে সরকার পতনের আন্দোলন দমাতে ছাত্র-জনতার উপর পুলিশের অতিরিক্ত শক্তি প্রয়োগের অভিযোগ উঠে। আন্দোলনে যারা প্রাণ হারিয়েছেন, তাদের পরিবারের কাছে পুলিশের তরফ থেকে ক্ষমা প্রার্থনাও করা হয়। আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলে অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় এসে রাষ্ট্রের বিভিন্ন পর্যায়ে সংস্কারের পাশাপাশি পুলিশ বাহিনীতে সংস্কার আনতে পুলিশ সংস্কার কমিশন গঠন করে।
প্রতিবেদনে পরোয়ানা ছাড়া গ্রেপ্তার এবং রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের বিষয়েও সুপারিশ করেছে এই কমিশন।
সফর রাজ হোসেন বলেন, দুটো ক্ষেত্রেই হাইকোর্ট এবং সুপ্রিম কোর্টের কিছু নির্দেশনা আছে, সেগুলো যদি বাস্তবায়ন করা যেত তাহলে হয়ত বা জনসাধরণের কষ্ট লাঘব হত। এক্সেসিভ ফোর্স ব্যবহার, নির্বিচারে কোন গ্রেপ্তার করতে পারত না। নির্দেশনা মানতে হত। কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে এটার একটা রিভিউ পিটিশন দেওয়া আছে, যার ফলে বাস্তবায়ন হচ্ছে না। অনুরোধ করেছি, সরকার যেন এটা উইথড্রো করে, তাহেলেই ওই নির্দেশনা বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে। এটার জন্য যেটা প্রয়োজন আইন মন্ত্রণালয় হয়ত করবেন।
এ ছাড়া প্রতিটি থানায় নারী পুলিশের জন্য যেন একটি ডেস্ক করার সুপারিশ করা হয়েছে।
‘ওই ডেস্ক ২৪ ঘণ্টা যেন একজন মহিলা সাব-ইন্সপ্রেক্টর থাকেন, এসআই থাকেন, কন্সটেবল থাকেন। যাতে মহিলা আসামিকে জেরা করা, কোর্টে আনা নেওয়া করা এবং মহিলা অভিযোগকারী যদি আসে এজন্য সুপারিশ করেছি। হয়ত দীর্ঘ সময় লাগবে কিন্তু বাসন্তবায়ন যোগ্য। এই সুপারিশগুলো অবিলম্বে, মধ্য মেয়াদী, দীর্ঘ মেয়াদী সময়ে বাস্তবায়ন যোগ্য বলে জানিয়েছেন সংস্কার কমিশনের প্রধান।’
তিনি বলেন, দীর্ঘ মেয়াদী সুপালিশগুলো বাস্তবায়নে আর্থিক ব্যবহার বা কোন কোন ক্ষেত্রে হয়ত আইন পরিবর্তন করতে হতে পারে। চাকরির জন্য পুলিশ ভেরিফিকেশনের বিষয়ে কমিশন যে সুপারিশ করেছে সেগুলো শিগগিরই বাস্তবায়ন করা সম্ভব বলে মনে করেন সফর রাজ প্রধান।
তিনি বলেন, এটার ক্ষেত্রে খুব ইজি করা সম্ভব। কারণ এখন ন্যাশনাল আইডি কার্ড হয়েছে। চাকরির সময় আত্মীয় স্বজন রাজনীতি করে কিনা এটা দেখা হত। এসবির সঙ্গে আলোচনা করেই আমরা সুপারিশ করেছি যাতে সহজ হয় ভবিষ্যতে। এবং এটা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব। তারা হয়ত আমাদের সুপারিশের প্রেক্ষিতে এটা পরিবর্তন করবেন। হোম উপদেষ্টা, তিনি তো রাজিই আছেন।
উল্লেখ্য, গেল বছরের ৩ অক্টোবর সাবেক সচিব সফর রাজ হোসেনের নেতৃত্বাধীন গঠিত এ কমিশনকে প্রধান উপদেষ্টার কাছে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য ৯০ দিন সময় দেওয়া হয়েছিল। সে হিসেবে ২ জানুয়ারির মধ্যে তাদের প্রতিবেদন জমার কথা ছিল। পরে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার মেয়াদ এক দফা বাড়িয়ে ১৫ জানুয়ারি নির্ধারণ করা হয়।
|
|
|
|
জাতীয় অথবা স্থানীয় সরকার যেকোনো নির্বাচনেই ৪০ শতাংশ ভোট না পড়লে আবারও ভোটগ্রহণ করতে হবে বলে সুপারিশ করেছে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন। এ ছাড়াও সরকারের সামনে আরও একগুচ্ছ সুপারিশ রাখা হয়েছে তাদের পক্ষ থেকে।
বুধবার (১৫ জানুয়ারি) প্রধান উপদেষ্টার কাছে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কারের জন্য বিভিন্ন সুপারিশ সংবলিত ৯ পৃষ্ঠার এক প্রতিবেদন জমা দিয়েছে ড. বদিউল আলম মজুমদার নেতৃত্বাধীন এ কমিশন।
প্রতিবেদনে যেসব সুপারিশ করা হয়েছে, সেগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো—
নির্বাচন ব্যবস্থা:
ক. নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের বিধান বাতিল করা।
খ. নির্বাচনকালীন সময়ের জন্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সংজ্ঞায় প্রতিরক্ষা বিভাগকে অন্তর্ভুক্ত করা ।
গ. কোনো আসনে মোট ভোটারের ৪০ শতাংশ ভোট না পড়লে পুনঃনির্বাচন করা।
ঘ. বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচন বন্ধ করা, রাজনৈতিক দলগুলোকে সৎ, যোগ্য এবং ভোটারদের কাছে গ্রহণযোগ্য প্রার্থী দেওয়া নিশ্চিত করার লক্ষ্যে জাতীয় নির্বাচনে ‘না-ভোটের’ বিধান প্রবর্তন করা। নির্বাচনে না-ভোট বিজয়ী হলে সেই নির্বাচন বাতিল করা এবং পুন:নির্বাচনের ক্ষেত্রে বাতিলকৃত নির্বাচনের কোনো প্রার্থী নতুন নির্বাচনে প্রার্থী হতে না পারার বিধান করা।
সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ জাতীয় সংসদ নির্বাচন:
ক. ঋণ-বিল খেলাপিদের প্রার্থী হওয়া থেকে বিরত রাখা।
খ. কোনো আদালত কর্তৃক ফেরারি আসামি হিসেবে ঘোষিত ব্যক্তিদের প্রার্থী হওয়া থেকে বিরত রাখা।
গ. বেসরকারি সংস্থার কার্যনির্বাহী পদে আসীন ব্যক্তিদের প্রার্থী হওয়ার ক্ষেত্রে ওই পদ থেকে তিন বছর আগে অবসর গ্রহণ সংক্রান্ত আরপিওর ধারা বাতিল করা।
ঘ. সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৬৬(২)(ঘ) এর অধীনে নৈতিক স্খলনজনিত অপরাধে বিচারিক আদালতে দোষী সাব্যস্ত ব্যক্তিকে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার শুরু থেকেই সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার অযোগ্য করা।
ঙ. আইসিটি আইনে (আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে) শাস্তি প্রাপ্তদের সংসদ নির্বাচনে দোষী সাব্যস্ত ব্যক্তিকে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার শুরু থেকেই সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার অযোগ্য করা।
চ. গুরুতর মানবাধিকার (বিচারবহির্ভূত হত্যা, গুম, অমানবিক নির্যাতন, সাংবাদিকদের/মানবাধিকারকর্মী ওপর হামলা, ইত্যাদি) এবং গুরুতর দুর্নীতি, অর্থপাচারের অভিযোগে গুম কমিশন বা দুর্নীতি দমন কমিশন বা আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত কর্তৃক অভিযুক্ত হলে তাদেরকে সংবিধানের ৬৬(২)(ছ) অনুচ্ছেদের অধীনে একটি বিশেষ আইন প্রণয়ন করে সংসদ সদস্য হওয়ার অযোগ্য করা। (সংসদ সদস্য হওয়ার যোগ্যতার মাপকাঠি উচ্চতর হওয়া দরকার এবং গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অপরাধের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা দরকার। এ ক্ষেত্রে ‘ট্রানজিশান্যার জাস্টিসের’ যুক্তিও উত্থাপন করা যেতে পারে।)
ছ. স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের পদত্যাগ না করে সংসদ সদস্য পদে প্রার্থী হওয়ার অযোগ্য করা।
জ. তরুণ, ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘু, শারীরিক প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য শতকরা ১০ ভাগ মনোনয়নের সুযোগ তৈরির বিধান করা।
ঝ. স্বতন্ত্র প্রার্থীদের ক্ষেত্রে ১ শতাংশ ভোটারের স্বাক্ষর জমা দেওয়ার বিধানের পরিবর্তে ৫০০ ভোটারের সম্মতির বিধান করা এবং এ ক্ষেত্রে একক কিংবা যৌথ হলফনামার মাধ্যমে ভোটারদের সম্মতি জ্ঞাপনের বিধান করা।
ঞ. একাধিক আসনে কোনো ব্যক্তির প্রার্থীর হওয়ার বিধান বাতিল করা।
ট. হাইকোর্ট বিভাগ কর্তৃক সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী বাতিলের প্রেক্ষাপটে আপিল প্রক্রিয়ায় অনুচ্ছেদ ১২৫(গ) বহাল রাখার উদ্যোগ গ্রহণ করা। কোনো আদালত, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হইয়াছে এরূপ কোনো নির্বাচনের বিষয়ে, নির্বাচন কমিশনকে যুক্তিসংগত নোটিশ ও শুনানির সুযোগ প্রদান না করিয়া, অন্তর্বর্তী বা অন্য কোনোরূপে কোনো আদেশ বা নির্দেশ প্রদান করিবেন না ।
ঠ. হলফনামায় মিথ্যা তথ্য দেওয়ার কিংবা তথ্য গোপনের কারণে আদালত কর্তৃক কোনো নির্বাচিত ব্যক্তির নির্বাচন বাতিল করা হলে ভবিষ্যতে তাকে নির্বাচনে অযোগ্য করার বিধান করা।
মনোনয়নপত্র:
ক. বাংলাদেশের অভ্যন্তরে আইনি হেফাজতে থাকা ব্যতীত সব প্রার্থীর সশরীরে মনোয়নপত্র জমা দেওয়ার বাধ্যবাধকতা তৈরি করা ।
খ. নির্বাচনী তফসিলে মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের সময় বৃদ্ধি করা, যাতে হলফনামা যাচাই-বাছাই করা ও আপিল নিষ্পত্তি জন্য পর্যাপ্ত সময় পাওয়া যায়। অন্যদিকে নির্বাচনী প্রচারণার সময় কমানো, যাতে প্রার্থীর নির্বাচনী ব্যয় সাশ্রয় হয়।
গ. প্রার্থিতা চূড়ান্তকরণের ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনের ক্ষমতা নিরঙ্কুশ করা। এ লক্ষ্যে আদালতের হস্তক্ষেপের বিষয়টি শুধু ‘কোরাম নন জুডিস’ ও ‘ম্যালিস ইন ল’-এর ক্ষেত্রে সীমিত করা।
ঘ. মনোনয়নপত্রের সঙ্গে ৫ বছরের আয়কর রিটার্নের কপি জমা দেওয়ার বিধান করা।
ঙ. নির্বাচনী তফসিলে মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের সময় বৃদ্ধি করা, যাতে হলফনামা যাচাই-বাছাই করা ও আপিল নিষ্পত্তি জন্য পর্যাপ্ত সময় পাওয়া যায়। অন্যদিকে নির্বাচনী প্রচারণার সময় কমানো, যাতে প্রার্থীর নির্বাচনী ব্যয় সাশ্রয় হয়।
২.৩ হলফনামা:
ক. প্রার্থী কর্তৃক মনোনয়নপত্রের সঙ্গে প্রত্যেক দল তার প্রার্থীদের জন্য প্রত্যয়নপত্রের পরিবর্তে দলের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক বা অনুরূপ পদধারী ব্যক্তি কর্তৃক হলফনামা জমা দেয়ার বিধান করা, যাতে মনোনীত প্রার্থীর নামের পাশাপাশি মনোনয়ন বাণিজ্য না হওয়ার ও দলীয় প্যানেল থেকে প্রার্থী মনোনয়ন প্রদানের বিষয়টি উল্লেখ থাকে।
খ. পরবর্তী নির্বাচনের আগে যেকোনো সময় নির্বাচন কমিশন নির্বাচিত ব্যক্তির হলফনামা যাচাই-বাছাই করতে এবং মিথ্যা তথ্য বা গোপন তথ্য পেলে তার নির্বাচন বাতিল করা।
নির্বাচনী ব্যয়:
ক. সংসদীয় আসনের ভোটার প্রতি ১০ টাকা হিসেবে নির্বাচনী ব্যয় নির্ধারণের বিধান করা।
খ. সব নির্বাচনী ব্যয় ব্যাংকিং ব্যবস্থা বা আর্থিক প্রযুক্তির (যেমন, বিকাশ, রকেট) মাধ্যমে পরিচালনা করা।
গ. নির্বাচনী আসনভিত্তিক নির্বাচনী ব্যয় নির্বাচন কমিশন কর্তৃক নিবিড়ভাবে নজরদারিত্ব করা।
ঘ. প্রার্থী এবং দলের নির্বাচনী ব্যয়ের হিসাবের রিটার্নের নিরীক্ষা এবং হিসাবে অসঙ্গতির জন্য শাস্তির বিধান করা।
২.৬ নির্বাচনী অভিযোগ ব্যবস্থাপনা:
ক. বিদ্যমান ‘নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটি`কে অনুসন্ধান বা তদন্ত করার ক্ষমতা প্রদানের পাশাপাশি বিচার-নিষ্পত্তির ক্ষমতা প্রদান করে’ ‘নির্বাচনী অনুসন্ধান ও বিচারিক কমিটি নামে একটি পূর্ণাঙ্গ বিচারিক সত্তা/বডি গঠন করা।’
খ. নির্বাচনী অনুসন্ধান ও বিচারিক কমিটির আওতায় প্রথম শ্রেণির জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটকে সদস্য করা। এর পরিপ্রেক্ষিতে উক্ত কমিটিকে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৯০ ধারা মতে বিচারার্থে অপরাধ আমলে নেওয়ার এবং সংক্ষিপ্ত বিচার পদ্ধতিতে অপরাধের বিচার করার ক্ষমতা অর্পণ করা।
গ. সংসদ নির্বাচন চলাকালে নির্বাচনী অনুসন্ধান ও বিচারিক কমিটিগুলোর কার্যাবলি তদারকি করার নিমিত্তে নির্বাচন কমিশনের অভ্যন্তরে একটি উচ্চ পর্যায়ের ‘নির্বাচনী অনুসন্ধান ও বিচারিক কার্যক্রম তদারকি কমিটি’ একজন নির্বাচন কমিশনারের সভাপতিত্বে গঠন করা।
ঘ. কার্যকালীন স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার স্বার্থে অনুসন্ধান ও বিচারিক কমিটিগুলো প্রশাসনিকভাবে নির্বাচনী অনুসন্ধান ও বিচারিক কার্যক্রম তদারকি কমিটির আওতায় আনা। বিচারিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে এগুলোকে স্বাধীন করা।
ঙ. হাইকোর্ট বিভাগে নির্বাচনি মামলার চাপ কমাতে এবং শুধু নির্বাচনি বিরোধ সংশ্লিষ্ট মামলা (ইলেকশন পিটিশন) দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য জেলা পর্যায়ে ‘সংসদীয় নির্বাচন ট্রাইব্যুনাল’ স্থাপন এবং ট্রাইব্যুনালের রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিলের সুযোগ রাখা।
নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন ছাড়াও প্রধান উপদেষ্টার কাছে নিজেদের সংস্কারের সুপারিশসংবলিত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে আরও তিনটি কমিশন। এগুলো হলো সংবিধান, দুর্নীতি দমন কমিশন ও পুলিশ সংস্কার কমিশন।
সংস্কার কমিশনগুলোর সুপারিশ নিয়ে এখন রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করবে অন্তর্বর্তী সরকার। সেই আলোচনার মাধ্যমে যেসব বিষয়ে ঐকমত্য হবে, সেসব সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়ন করা হবে। ফেব্রুয়ারিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে এই আলোচনা হবে বলে বুধবার (১৫ জানুয়ারি) এক সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়েছে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের পক্ষ থেকে।
|
|
|
|
একগুচ্ছ সুপারিশসহ প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের কাছে আজ বুধবার (১৫ জানুয়ারি) প্রতিবেদন জমা দিয়েছে অধ্যাপক আলী রীয়াজের নেতৃত্বাধীন সংবিধান সংস্কার কমিশন, যেখানে সরকারের সাংবিধানিক নামের পাশাপাশি রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতিতেও বড় ধরনের পরিবর্তন চেয়েছে তারা।
জানা গেছে, নিজেদের প্রতিবেদনে রাষ্ট্র পরিচালনার চার মূলনীতির মধ্যে তিনটিই বাদ দেওয়ার সুপারিশ করেছে অধ্যাপক আলী রীয়াজের কমিশন। সেইসঙ্গে শুধু গণতন্ত্র বহাল রেখে রাষ্ট্র পরিচালনায় নতুন আরও চারটি মূলনীতি সংযুক্তিরও সুপারিশ করা হয়েছে প্রতিবেদনে। এ ছাড়া, সংবিধানে ‘গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ’-এর পরিবর্তে ‘জনগণতন্ত্রী বাংলাদেশ’ এবং ‘প্রজাতন্ত্রে’র পরিবর্তে ‘নাগরিকতন্ত্র’ শব্দ ব্যবহারের সুপারিশও করেছে কমিশন।
বর্তমানে সংবিধানে রাষ্ট্র পরিচালনার যে চার মূলনীতি রয়েছে সেগুলো হলো জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতা। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭২ সালে যে সংবিধান প্রণীত হয়েছিল, তাতে রাষ্ট্র পরিচালনার এই চার মূলনীতি গৃহীত হয়েছিল।
বর্তমানের এই চার মূলনীতির মধ্যে শুধু ‘গণতন্ত্র’ রাখা হয়েছে প্রস্তাবিত নতুন পাঁচ মূলনীতির মধ্যে। সঙ্গে নতুন মূলনীতি হিসেবে সাম্য, মানবিক মর্যাদা, সামাজিক সুবিচার ও বহুত্ববাদ সংযুক্তির সুপারিশ করা হয়েছে।
সংবিধান সংস্কার কমিশনের সুপারিশে বলা হয়েছে, ১৯৭১ সালের স্বাধীনতাযুদ্ধের মহান আদর্শ এবং ২০২৪ সালের গণ-অভ্যুত্থানের জন-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলনস্বরূপ সংবিধান ও রাষ্ট্রের মূলনীতি হিসেবে এই পাঁচটি নীতি প্রস্তাব করা হয়েছে।
সেইসঙ্গে তিন মূলনীতি বাদ দেওয়ার বিষয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সংবিধানের মূলনীতি ও রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি হিসেবে ধর্মনিরপেক্ষতা, সমাজতন্ত্র ও জাতীয়তাবাদ এবং এ সংশ্লিষ্ট সংবিধানের ৮, ৯, ১০ ও ১২ অনুচ্ছেদগুলো বাদ দেওয়ার সুপারিশ করছে কমিশন।
প্রতিবেদনের সারসংক্ষেপ তুলে ধরে সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান অধ্যাপক আলী রীয়াজ জানান, সংবিধান সংশোধনের ক্ষেত্রে গণভোটের সুপারিশ করা হয়েছে। এছাড়া দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদ চালুরও সুপারিশ করা হয়েছে তার কমিশনের পক্ষ থেকে।
সংবিধান সংস্কার কমিশন ছাড়াও প্রধান উপদেষ্টার কাছে নিজেদের সংস্কারের সুপারিশসংবলিত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে আরও তিনটি কমিশন। এগুলো হলো নির্বাচনব্যবস্থা, দুর্নীতি দমন কমিশন ও পুলিশ সংস্কার কমিশন।
সংস্কার কমিশনগুলোর সুপারিশ নিয়ে এখন রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করবে অন্তর্বর্তী সরকার। সেই আলোচনার মাধ্যমে যেসব বিষয়ে ঐকমত্য হবে, সেসব সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়ন করা হবে। ফেব্রুয়ারিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে এই আলোচনা হবে বলে বুধবার (১৫ জানুয়ারি) এক সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়েছে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের পক্ষ থেকে।
|
|
|
|
জাতীয় নির্বাচনের তারিখটা এই মুহূর্তে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) হাতে নেই বলে মন্তব্য করেছেন নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ। তবে, চলতি বছরের ডিসেম্বরকে লক্ষ্যে রেখে নির্বাচনের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
বুধবার (১৫ জানুয়ারি) বিকেলে খুলনা জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভা শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা জানান নির্বাচন কমিশনার।
তিনি বলেন, প্রধান উপদেষ্টা ২০২৫ সালের ডিসেম্বর থেকে শুরু করে ২০২৬ সালের জুনের মাঝে নির্বাচনের কথা বলেছেন। আমরা প্রথম তারিখটাকে ধরে নিয়ে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছি। তারপরও রাজনৈতিক মতৈক্য যেখানে দাঁড়াবে, আমরা সেই মোতাবেক কাজ করব। নির্বাচনের তারিখটা এই মুহূর্তে নির্বাচন কমিশনের হাতে নেই। এখন একটি পরিবর্তিত পরিস্থিতি চলছে। এখানে রাজনৈতিক ঐক্যের বিষয় রয়েছে। সেই অনুযায়ী কাজ করব।
মো. সানাউল্লাহ বলেন, চলতি বছরের ডিসেম্বরকে লক্ষ্যে রেখেই জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এ জন্য ভোটার তালিকা হালনাগাদ ও বাড়ি বাড়ি গিয়ে যাচাইকরণ কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে। আগামী ২০ জানুয়ারি থেকে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটার তালিকা হালনাগাদে তথ্য সংগ্রহের কাজ শুরু হবে।
এ সময় ভুয়া ভোটার তালিকার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে নির্বাচন কমিশনার বলেন, সাধারণত তিন ধরনের ভোটার আমাদের কাছে বেশি বিবেচ্য। প্রথমটি হচ্ছে মৃত ব্যক্তি যাদের নাম এখনও বাদ যায়নি, তাদের নাম বাদ না দেওয়া। দ্বিতীয়টি হলো যারা বাংলাদেশের নাগরিক নন, প্রতারণার মাধ্যমে বাংলাদেশের নাগরিক হওয়ার চেষ্টা করেন। আর তৃতীয় হচ্ছে যদি কোনো কারণে দ্বৈত এনআইডি থাকে, যদিও বা এর সম্ভাবনা কম। এর বাইরেও বয়স হয়নি ভোটার হয়েছে। আমরা এই কারণেই এবার বাড়ি বাড়ি যাচ্ছি। ২ জানুয়ারি খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ হয়েছে। সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা অনুযায়ী, ২ মার্চ চূড়ান্ত ভোটার তালিকা হবে। এই তালিকা ছাড়াও হালনাগাদ ও যাচাইকরণ কার্যক্রম হাতে নিয়েছি।
তিনি বলেন, আগামী ২০ জানুয়ারি থেকে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটার তালিকা সংক্রান্ত যেসব সন্দেহ আছে, সেগুলো দূর করার চেষ্টা করবো। জুন মাসের শেষ নাগাদ আমরা এই কার্যক্রম শেষ করতে পারব। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ভোটার তালিকা সম্পর্কে বিভিন্ন ধরনের সন্দেহের অবকাশ আছে। যাচাইকরণের ফলে রিফাইন্ড তালিকা এসে যাবে, ফলে যারা বাদ পড়েছেন তারা সন্নিবেশিত হবেন।
এর আগে, মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে নির্বাচন কমিশনার বলেন, আপনারা সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে জনগণের ভোটার হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করার চেষ্টা করুন। কোনো প্রকার পক্ষপাতিত্ব না করে জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত করা আবশ্যক। সেইসঙ্গে ভোটার হওয়ার যোগ্য ব্যক্তিদের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হতে উৎসাহ দিতে হবে। নারীরা যেন তাদের বিভিন্ন নাগরিকসেবা থেকে বঞ্চিত না হয়, সেজন্য নারীদের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে বিশেষ নজর দিতে হবে। একইসঙ্গে দেশের একজন নাগরিক হিসেবে ভোটার হওয়ার গুরুত্বের দিকটি সবাইকে জানাতে হবে।
ভোটার তালিকা করা এবং এর সংরক্ষণ করা আমাদের দায়িত্ব উল্লেখ করে নির্বাচন কমিশনার আরও বলেন, ব্যক্তি যাতে নিয়ম অনুযায়ী ভোট প্রদান করতে পারে, সেজন্য সঠিক ভোটার তালিকা করা আপনার আমার সকলের কর্তব্য। কারণ একটি ভোটের মাধ্যমে নির্বাচনে জয়-পরাজয় নির্ধারিত হতে পারে।
মতবিনিময় সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের অতিরিক্ত সচিব কে এম আলী নেওয়াজ, খুলনার আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন কবির ও পুলিশ সুপার টি এম মোশাররফ হোসেন। এতে সভাপতিত্ব করেন খুলনার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম।
|
|
|
|
দেশের ভূখণ্ডকে বিভাজনের জন্য দেশের ভেতরে ও বাইরে বিভিন্ন ধরনের ষড়যন্ত্র হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বৈম্যবিষরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ।
বুধবার (১৫ জানুয়ারি) বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নির্বাহী সদস্য রুপাইয়া শ্রেষ্ঠা তঞ্চঙ্গাসহ অন্যান্য ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর শিক্ষার্থীর ওপর হামলাকে কেন্দ্র করে আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশে এ মন্তব্য করেন তিনি।
হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, দেশের ভূখণ্ড বিভাজনের জন্য দেশে ও বিদেশে বিভিন্ন রকম ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। এই বিভাজনের বিপক্ষে আপনাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। পাহাড়ের ভাই-বোনদের প্রতি আহ্বান থাকবে বিদেশি পৃষ্ঠপোষ্যের ফাঁদে আপনারা পা দেবেন না।
বৈম্যবিষরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক আরও বলেন, আমাদের মতপার্থক্য সমাধান করার জন্য গোলটেবিলের আলোচনা উন্মুক্ত রয়েছে। আলোচনার মাধ্যমেই আমরা সমাধানের পথ খুঁজব।
এ সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখপাত্র উমামা ফাতেমা বলেন, শেখ হাসিনার আমলে যে ধরনের ট্যাগিংয়ের রাজনীতি হতো, নিজেরা হামলা করে নিজেরা আহতের ভান ধরতো, জুলাই অভ্যুত্থানের মাত্র পাঁচ মাসের মাথায় আমরা একইরকম নাটক রচনা হতে দেখছি।
এছাড়া জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেন, আজকের এই হামলা অন্তর্বর্তী সরকারসহ দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও বিভিন্ন প্রশাসনের সীমাবদ্ধতাকে নির্দেশ করে। দুই সংগঠনের একই জায়গায় প্রোগ্রাম হচ্ছে এটা দেশের গোয়েন্দা সংস্থাকে আগে থেকেই জানা উচিত ছিল এবং সে বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়ার প্রয়োজন ছিলো।
|
|
|
|
আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস’র (এপি) ব্যুরো প্রধান জুলহাস আলম ও বাংলাদেশি বার্তাসংস্থা ইউএনবি’র উপদেষ্টা সম্পাদক ফরিদ হোসেনসহ মোট ১৪ সাংবাদিকের ব্যাংক হিসাবের তথ্য চেয়েছে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)।
একইসঙ্গে তাদের ব্যক্তি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাবের তথ্য দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে এ সংক্রান্ত নির্দেশনা পাঠিয়েছে সংস্থাটি।
বুধবার (১৫ জানুয়ারি) বিএফআইইউর সংশ্লিষ্ট এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আগামী সাত কর্মদিবসের মধ্যে এসব তথ্য পাঠাতে হবে বলে চিঠিতে জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থা বিএফআইইউ।
চিঠিতে বলা হয়, এ ১৪ সাংবাদিকের স্বামী বা স্ত্রী এবং পুত্র-কন্যাসহ তাদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাবের তথ্য যেমন হিসাব খোলার ফরম, কেওয়াইসি, লেনদেনের বিবরণীসহ আনুষঙ্গিক তথ্য পাঠাতে হবে।
তালিকায় থাকা অন্য সাংবাদিকেরা হলেন, বাংলাদেশ জার্নাল’র শাহজান সরদার, ঢাকা ট্রিবিউন’র স্টাফ রিপোর্টার আলী আসিফ শাওন, ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক নাদিম কাদির, ডিবিসি নিউজ’র সিনিয়র রিপোর্টার রাজীব ঘোষ ও ডেইলি পিপলস লাইফ’র সম্পাদক মো. আজিজুল হক ভুঁইয়া।
তালিকায় আরও আছেন, বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) স্পোর্টস ইনচার্জ স্বপন বসু, ডিবিসি নিউজের স্টাফ রিপোর্টার তাহমিদা সাদেক জেসি, চ্যানেল আইয়ের সিনিয়র রিপোর্টার নীলাদ্রি শেখর কুন্ডু, বাংলা টিভির নজরুল কবীর, গাজী টিভির বার্তা সম্পাদক ইকবাল করিম নিশান, গ্রিন টিভির সাজু রহমান ও চ্যানেল নাইনের সাবেক বার্তাপ্রধান আমিনুর রশীদ।
এর আগে, ৫ জানুয়ারি ২১ সাংবাদিকের ব্যাংক হিসাব তলব করা হয়। তার আগে গত বছরের ৩০ ডিসেম্বর ১২ সাংবাদিকের ব্যাংক হিসাবের তথ্য চেয়ে ব্যাংকগুলোকে চিঠি দিয়েছিল বিএফআইইউ।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন শেখ হাসিনা। এর মাধ্যমে টানা ১৬ বছরের আওয়ামী লীগের নজিরবিহীন দুঃশাসন ও স্বেচ্ছাচারিতার অবসান ঘটে। এরপর অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আসার পর আওয়ামী লীগ সরকারের অপকর্মের সহযোগী ও নানা অনিয়ম-দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত এমন সন্দেহে বেশকিছু পেশাজীবীদের ব্যাংক হিসাব তলব ও জব্দ করে বিএফআইইউ।
|
|
|
|
|
|
|
|