কামরুল হাসান : মানিকগঞ্জে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগ, শান্তিপূর্ণ সমাবেশে উত্তেজনা ও পরবর্তী সংঘর্ষকে কেন্দ্র করে উদ্ভূত উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতিতে আলেম-ওলামা ও তাওহিদী জনতার উদ্যোগে এক গুরুত্বপূর্ণ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। জাতীয় পর্যায়ে রাজনৈতিক উত্তাপ এবং সামাজিক সংবেদনশীলতার প্রেক্ষাপটে এই সংবাদ সম্মেলন স্থানীয়ভাবে বিশেষ গুরুত্ব বহন করছে।
মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৩টায় মানিকগঞ্জ প্রেসক্লাব মিলনায়তনে জেলার বিভিন্ন মাদ্রাসা, মসজিদ, ইসলামি সংগঠন ও তাওহিদী জনতার প্রতিনিধিরা উপস্থিত হয়ে সাম্প্রতিক ঘটনাবলীর প্রেক্ষিতে তাদের মতামত তুলে ধরেন।
আলেম-ওলামারা দাবি করেন, বাউল শিল্পী আবুল সরকার সম্প্রতি একটি অনুষ্ঠানে “মহান আল্লাহকে নিয়ে অশালীন মন্তব্য” করেন, যা স্থানীয় মানুষের ধর্মীয় অনুভূতিতে তীব্র আঘাত হানে এবং ক্ষোভের সঞ্চার করে।
সংবাদ সম্মেলনের বক্তারা বলেন, অভিযোগের পর রবিবার একটি শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করা হয়। কিন্তু ওই সমাবেশে বাউল সম্প্রদায়ের কিছু সমর্থক উপস্থিত হয়ে “উসকানিমূলক আচরণ” করলে পরিস্থিতি দ্রুত উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।
ধাওয়া–পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষে উভয় পক্ষের চারজনসহ মোট আটজন আহত হন।
সংঘর্ষের ঘটনায় পরবর্তীতে বাউল পক্ষ থানায় একটি মামলা দায়ের করে। এ নিয়ে আলেম সমাজের পক্ষ থেকে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলা হয়—মামলার প্রক্রিয়াকে কেন্দ্র করে “কিছু নিরপরাধ আলেমকে হয়রানি করা হতে পারে”।
“বিচারের অধিকার সবার আছে, তবে সুষ্ঠু তদন্ত ছাড়া কাউকে হয়রানি করা যাবে না।”
তারা প্রশাসনকে নিরপেক্ষ তদন্ত পরিচালনা এবং উত্তেজনা প্রশমনে ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান।
বক্তারা বলেন, বাংলাদেশে ধর্মীয় বিষয় অত্যন্ত সংবেদনশীল। রাজনৈতিক অস্থিরতা, নির্বাচনমুখী পরিবেশ এবং সোশ্যাল মিডিয়ার দ্রুত উত্তেজনা ছড়িয়ে দেওয়ার ঝুঁকি বিবেচনায় সবাইকে সংযত ও দায়িত্বশীল হতে হবে।
ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগের সঠিক ও নিরপেক্ষ তদন্ত, অযথা হয়রানি বা প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপ থেকে বিরত থাকা, উত্তেজনা ও সহিংসতা পরিহার করে সামাজিক সম্প্রীতি রক্ষা করা,
প্রশাসনের ন্যায়সঙ্গত ও দৃঢ় অবস্থান নিশ্চিত করা।
রাজনৈতিক ও সামাজিক বিশ্লেষকদের মতে, বর্তমান দেশের সামগ্রিক পরিস্থিতিতে স্থানীয় পর্যায়ে সংঘটিত এ ধরনের ধর্মীয় উত্তেজনা দ্রুত বড় আকার নিতে পারে যদি বিষয়টি সংবেদনশীলভাবে মোকাবিলা না করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা একত্রে বলেন—“উস্কানি নয়, শান্তি চাই; বিশৃঙ্খলা নয়, ন্যায়বিচার চাই।”
তাদের বিশ্বাস, যথাযথ তদন্ত ও আইনগত প্রক্রিয়াই পরিস্থিতিকে শান্ত ও স্বাভাবিক রাখতে সক্ষম হবে।