অনলাইন ডেস্ক : এমপিওভুক্ত বেসরকারি উচ্চ মাধ্যমিক, মাধ্যমিক ও নিম্ন বিদ্যালয়ে ‘ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা’ বিষয়ের শিক্ষক নিয়োগে যোগ্যতা ও বেতন গ্রেড নিয়ে নতুন নিয়ম করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এতে ইসলাম শিক্ষা বিষয়ের সহকারী শিক্ষককে ১১তম গ্রেড এবং হিন্দু ধর্ম শিক্ষা শিক্ষককে দশম গ্রেড দেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে আপত্তি তুলেছেন শিক্ষকরা।
রোববার (৭ ডিসেম্বর) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ থেকে জারি করা এক প্রজ্ঞাপনে নতুন এমপিও নীতিমালা প্রকাশ করা হয়। নীতিমালার পরিশিষ্ট-ঘ-তে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীদের জন্য নিয়োগ-যোগ্যতা, অভিজ্ঞতা ও বেতন স্কেল বিষয়ক অংশে এ নিয়ে বিস্তারিত উল্লেখ রয়েছে।
ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা বিষয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে ইসলাম ও হিন্দু ধর্ম শিক্ষক নিয়োগ দিতে হবে। ইসলাম ধর্মের ক্ষেত্রে প্রার্থীকে স্বীয় ধর্মের অনুসারী হতে হবে। প্রার্থীর শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকতে হবে ফাজিল ডিগ্রি বা ন্যূনতম ৩০০ নম্বরের আরবি বা ইসলামি শিক্ষাসহ স্নাতক ডিগ্রি।
প্রার্থীর বয়স হতে হবে অনূর্ধ্ব ৩৫ বছর। এসব যোগ্যতা নিয়ে নিয়োগ পাওয়া ইসলাম শিক্ষা বিষয়ের সহকারী শিক্ষকের বেতন গ্রেড হবে ১১তম (১২৫০০-৩০২৩০ টাকা)।
হিন্দু ধর্ম শিক্ষা বিষয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রেও প্রার্থীকে স্বীয় ধর্মের অনুসারী হতে হবে। তবে এক্ষেত্রে দুই ধরনের যোগ্যতাসম্পন্ন প্রার্থীকে নিয়োগ দেওয়া যাবে। দুই ধরনের প্রার্থীর বেতন গ্রেডও ভিন্ন। ক. উপাধি ডিগ্রিসহ স্নাতক ডিগ্রি/সমমান। আর খ. সংস্কৃত বিষয়সহ স্নাতক ডিগ্রি/সমমান।
ক ধারায় বর্ণিত উপাধি ডিগ্রিসহ স্নাতক ডিগ্রি/সমমান যোগ্যতাসম্পন্ন প্রার্থী পাবেন দশম গ্রেড। আর খ ধারায় বর্ণিত সংস্কৃত বিষয়সহ স্নাতক ডিগ্রি/সমমান যোগ্যতায় নিয়োগ পাওয়া প্রার্থী পাবেন ১১তম গ্রেড।
একই পদে দুই ধরনের বেতন গ্রেড রাখায় ক্ষোভ জানিয়েছেন শিক্ষক নেতারা। তারা এটিকে বৈষম্য হিসেবে অভিযোগ তুলছেন। এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণপ্রত্যাশী জোটের সদস্যসচিব অধ্যক্ষ দেলাওয়ার হোসেন আজিজী এ বৈষম্য দূর করতে নতুন এমপিও নীতিমলা সংশোধন করে দুই ধর্মের শিক্ষককেই দশম গ্রেড দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।
অধ্যক্ষ দেলাওয়ার হোসেন আজিজী বলেন, সহকারী শিক্ষক (ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা) ইসলাম ধর্মের শিক্ষকের ক্ষেত্রে ১১তম গ্রেড এবং হিন্দু ধর্মের শিক্ষকের ক্ষেত্রে দশম গ্রেড দেওয়া হয়েছে। এটি চরম বৈষম্য। এটি মুসলিম অধ্যুষিত রাষ্ট্র। বাংলাদেশে ইসলাম ধর্মের শিক্ষকের প্রতি এ অবহেলা কেন? অবিলম্বে বৈষম্য দূর করে নীতিমালা সংশোধন করতে হবে। সকল সহকারী শিক্ষকদের দশম গ্রেড দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি আমরা।
বাংলাদেশ ইসলামিক স্টাডিজ সোসাইটির আহ্বায়ক মো. রাশেদুল আলম বলেন, নতুন নীতিমালা ইসলাম শিক্ষা ও ধর্ম শিক্ষার সহকারী শিক্ষকের বেতন গ্রেডে যে বৈষম্য করা হয়েছে, তা রীতিমতো সরকারকে বিপদে ফেলার পাঁয়তারা বলেই প্রতীয়মান হয়। তা না হলে এ নীতিমালা প্রণয়নের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কীভাবে এমন হঠকারী সিদ্ধান্ত নিতে পারে? আমরা এর যথাযথ ব্যাখ্যাসহ অবিলম্বে এমন সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছি।