বিশ্ব নিউমোনিয়া দিবস আজ বুধবার (১২ নভেম্বর)। নিউমোনিয়া প্রতিরোধ ও চিকিৎসা সংক্রান্ত সচেতনতা বাড়াতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নানা আয়োজনে পালন করা হচ্ছে দিবসটি। এ বছরের প্রতিপাদ্য– ‘সুস্থ সূচনা, আশার ভবিষ্যৎ’।
দিবসটি উপলক্ষ্যে বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়েছে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান।
জানা গেছে, ফুসফুসের প্রদাহজনিত ভয়ংকর একটি রোগ নিউমোনিয়া। বিশেষ করে শীতের সময় শিশু ও বয়স্কদের এ রোগের প্রকোপ বেশি বৃদ্ধি পায়। অপুষ্টি, বায়ুদূষণ, টিকা না নেওয়া ও অ্যান্টিবায়োটিকের অভাবে শিশুরা নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে থাকে। এছাড়া অল্প বয়স্ক, স্বাস্থ্যবান এবং তরুণদেরও হতে পারে নিউমোনিয়া।
বিশেষজ্ঞ বলছেন, বিশ্বব্যাপী পাঁচ বছরের কম বয়সি শিশুমৃত্যুর অন্যতম কারণ নিউমোনিয়া। এখনো প্রতিদিন ৭৩ শিশু নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করে। ফলে নিউমোনিয়ায় প্রতি বছর মৃত্যু হচ্ছে ২৬ হাজার ৭৬৬ শিশুর। শুধু বাংলাদেশে শিশু হাসপাতালেই নিউমোনিয়ার চিকিৎসা নিতে আসে ৮ হাজার শিশু। বিশ্বে প্রতি বছর প্রায় ৭ লাখ শিশু নিউমোনিয়ায় মারা যায়।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনা অনুযায়ী, শিশু চিকিৎসায় হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ১০টি মৌলিক সুবিধা থাকা উচিত। তবে বাংলাদেশ স্বাস্থ্য সুবিধা জরিপ ২০১৭ অনুযায়ী, দেশে মাত্র ৫ শতাংশ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এই সুবিধাগুলো রয়েছে। বাকি ৯৫ শতাংশ কেন্দ্রেই নেই প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম, ওষুধ বা প্রশিক্ষিত কর্মী।
আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র বাংলাদেশের (আইসিডিডিআরবি) জানিয়েছে, নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত শিশুর ৫২ শতাংশ মারা যাচ্ছে বাড়িতে, কোনো চিকিৎসা না পেয়ে। বাড়িতে চিকিৎসা নিয়েও মারা যাচ্ছে ৩ শতাংশ, আর হাসপাতাল বা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসা নিয়েও মারা যাচ্ছে ৪৫ শতাংশ শিশু। দেশে নিউমোনিয়ার সংক্রমণ কোন জীবাণুর মাধ্যমে হচ্ছে, তার ৫০ শতাংশ কারণ এখনও অজানা।
চাইল্ড হেলথ রিসার্চ ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক সমীর কুমার সাহা বলেন, সংক্রমণ ভাইরাসের মাধ্যমে, না ব্যাকটেরিয়ার মাধ্যমে তা জানার উদ্যোগ নেই। নিউমোনিয়া প্রতিরোধে সংক্রমণের কারণ জানা জরুরি।
আইসিডিডিআর,বির জ্যেষ্ঠ বিজ্ঞানী মোহাম্মদ জোবায়ের চিশতি বলেন, অপুষ্টিতে থাকা শিশুদের নিউমোনিয়ায় মৃত্যুর ঝুঁকি ১৫ গুণ।
তিনি আরও বলেন, প্রতিটি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পালস অক্সিমিটার থাকা বাধ্যতামূলক করা উচিত।
বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক ডা. কামরুজ্জামান কামরুল জানান, শিশুদের জন্মের প্রথম ছয় মাস কেবল বুকের দুধ খাওয়ানো নিউমোনিয়া প্রতিরোধের বড় হাতিয়ার।