মিয়া আবদুল হান্নান : বিদেশীদের সমর্থন হারাচ্ছে এ সরকার বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বর্তমান সরকার দেশ-বিদেশে সব সমর্থন হারিয়ে ফেলেছে। এদের আর বেশি দিন সময় নেই। সব দলকে ঐক্যবদ্ধ করে একটা ঝড়ের গতির মতো আন্দোলন করতে হবে। এদেরকে(সরকার) বিদায় করতে হবে।
শুক্রবার ১৯ মে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির জনসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। শ্যামলী ক্লাব মাঠ আদাবর লিংক রোডে এ জনসমাবেশের আয়োজন করে মহানগর বিএনপি।
উচ্চ আদালতের নির্দেশনাকে অধীনস্থ আদালত ও সরকারের অবজ্ঞা, গায়েবি মামলায় নির্বিচারে গ্রেফতার, মিথ্যা মামলা ও পুলিশি হয়রানি, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, বিদ্যুতের লোডশেডিং ও আওয়ামী সরকারের সর্বগ্রাসী দুর্নীতির প্রতিবাদে জনসমাবেশ কর্মসূচি ঘোষণা করে বিএনপি।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আজকে মানুষ রাস্তায় নেমেছে তার ভাত ও ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনতে। ৩৫ লাখ নেতাকর্মীদের ওপর মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের দাবিতে মানুষ আজ রাজপথে নেমেছে। প্রধানমন্ত্রীকে গণভবন থেকে বেরিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, আজ গ্যাস নাই, পানি নাই, কিন্তু দাম বারবার বৃদ্ধি করছেন। সারের দাম তিন থেকে চার গুণ বৃদ্ধি করেছেন। কৃষকেরা কিছু করতে পারছে না। গ্রামে বিদ্যুতের অভাবে পানি সেচ দিতে পারছে না। গণভবন থেকে বেরিয়ে আসুন, মানুষের চোখের ভাষা বুঝুন দেখুন। মানুষের কী হাল করেছেন। সরকারকে উদ্দেশ্য করে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, উন্নয়নের কথা বলেন, আমারা পেটের উন্নয়ন চাই, সাধারণ মানুষের ভাগ্যের উন্নয়ন চাই। বিএনপির এই মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘বলা যাবে না, কওয়া যাবে না কথা, জীবন দিয়ে পেলাম আজ আজব স্বাধীনতা। সাংবাদিকরা লিখতে পারছে না। কারণ ডিজিটাল সিকিউরিটি আইন করে মুখ বন্ধ করেছে। লিখতে-বলতে ভয় পায় সাংবাদিকরা। যতই বিদেশে ঘোরাঘুরি করেন কোনো লাভ হবে না। টিকতে পারবেন না। আর সময় নেই। এরা টিকে থাকার জন্য মরণকামড় দিবে। এখন হাইকোর্ট জামিন দেয় কিন্তু নিম্নকোর্ট এটা আটকে দেন। কোন পর্যায়ে গেছে দেশ। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আরো বলেন, এ দেশের মানুষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া নির্বাচনে যাবে না। আমরা সংঘাত চাই না। আমরা নিরপেক্ষ নির্বাচন চাই। নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে। সেই ব্যাবস্থা করুন। ১৮ সালে নির্বাচন ডেকে নিয়ে বলেছিলেন নির্বাচন সুষ্ঠু হবে। কোনো অনিয়ম হবে না। কিন্তু কী হয়েছিল? দেখলাম ভোটের আগে আমাদের প্রার্থীদের গ্রেফতার করে, মামলা দিয়ে, রাতে ভোট করেছেন। সরকার বলছে, তারা নাকি ঝড় মোখাকে প্রতিরোধ করেছে কিন্তু এ দেশের গণমানুষের ঝড় কিভাবে থামাবেন? থামাতে পারবেন না বলে মন্তব্য করেন ফখরুল ইসলাম আলমগীর ।ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহবায়ক সাবেক মন্ত্রী, ডাকসু ভিপি আলহাজ আমান উল্লাহ আমান সভাপতিত্ব করেন। জনসমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে আলহাজ আমান উল্লাহ আমান বলেন, গুলি চালিয়ে এই ফ্যাসিস্ট সরকার আমাদের ১৭ জন নেতাকে হত্যা করেছে। গুলি চালিয়ে আন্দোলন বন্ধ করতে চায় এ সরকার। আমরাও দেখতে চাই, এই সরকারের কত গুলি আছে? আমাদের বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিব তবুও তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া ঘরে ফিরবো না।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক আব্দুস সালাম বলেন, গত ১৫ বছরে এই সরকার এই ঢাকাতে শত শত নেতা-কর্মীকে গুম করেছে। তাতে আমাদের কি ঠেকানো গেছে। ঠেকানো যায়নি। যত গুলি-হামলা করেন আমাদের ঠেকাতে পারবেন না। এ সময় উপস্থিত ছিলেন- ও সদস্য সচিব আমিনুল হকের সঞ্চালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন- চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, হাবিবুর রহমান হাবিব, কেন্দ্রীয় নেতা ফজলুল হক মিলন, শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, কামরুজ্জামান রতন, মীর নেওয়াজ আলী সপু, রকিবুল ইসলাম বকুল, আনিসুর রহমান তালুকদার খোকন, পারভেজ রেজা কানন, রফিক শিকদার, , তাবিথ আউয়াল, মুন্সি বজলুল বাসিত আনজু, যুবদলের মামুন হাসান, শফিকুল ইসলাম মিল্টন, স্বেচ্ছাসেবক দলের এসএম জিলানী, কৃষক দলের হাসান জাফির তুহিন, মহিলা দলের সুলতানা আহমেদ, ছাত্রদলের কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ প্রমুখ।
|