মিয়া আবদুল হান্নান : ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ বিদেশি নাগরিকদের হুমকি দিচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বাংলাদেশে থাকা বিশ্বের বিভিন্ন দূতাবাস তাদের নাগরিকদের সতর্ক করছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যে ভালো নির্বাচনের কথা বললেও, নির্বাচন শুরুর আগেই সরকার বিএনপি নেতাকর্মীদের গ্রেফতার শুরু করেছে। পুলিশের ছত্রছায়ায় আওয়ামী লীগ হামলা চালাচ্ছে। বর্তমান সরকারের হাতে যে বিদেশিরাও নিরাপদ না, সেটাই এখন প্রমাণিত হলো।’
তাই দ্রুত এ সরকারকে হটাতে সমগ্র জাতিকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর । বলেন, এজন্য জাতীয় ঐক্য গড়ে যুগপৎ আন্দোলন করতে হবে। সোমবার (২২ মে) রাজধানীর বনানীতে আয়োজিত এক গোলটেবিল আলোচনায় মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘সরকার হাজার হাজার কোটি টাকা লুট করে নিয়ে যাচ্ছে। এক বিদ্যুৎ খাতকে তারা লুটপাটের জন্য আলাদা করে নিয়েছে। শুধুমাত্র এ খাতের জন্য তিন দশমিক তিন বিলিয়ন ডলার গচ্ছা দিতে হচ্ছে। এ প্রক্রিয়ায় দেশকে ফোকলা করে দেয়া হচ্ছে।’বর্তমান ঋণের বোঝা দেশ বইতে পারবে না জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘কোনো অর্থনীতিবিদ বলছে না যে বর্তমান ঋণের বোঝা দেশ বইতে পারবে। মধ্য আয়ের দেশ থাকবে না যদি দুর্নীতি বন্ধ করা না যায়। সরকারের মাফিয়ারা দেশের টাকা পাচার করে বিদেশে বিনিয়োগ করছে, কিন্তু দেশে কোনো বিনিয়োগ হচ্ছে না। বাংলাদেশের অর্থনীতি অতি দ্রুত গতিতে রসাতলে যাচ্ছে।’ দেশের অর্থনীতি ভালো আছে- সরকার গলার জোরে এটি প্রতিষ্ঠা করতে চাইলেও কোনো কাজ হবে না জানিয়ে ফখরুল বলেন, ‘আগামী বছর থেকে ঋণ শোধ করা শুরু করলে দেশ ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত হবে। সরকার অর্থনীতির দিকে নজর না দিয়ে যেনতেনভাবে ক্ষমতায় টিকে থাকতে চায়।
তত্ত্বাবধায়ক সরকার ইস্যুতে তিনি বলেন, ‘সরকার ক্ষমতায় আসার পর দ্রুত জনপ্রিয়তা হারাতে শুরু করে, এরপরই তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করে দিয়েছে। কারণ নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে তাদের পক্ষে জয়ী হয়ে আবার ক্ষমতায় আসা সম্ভব নয়। তাই দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা করেছে।বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমি সুস্পষ্টভাবে বলতে চাই, জনগণের প্রতি দমননীতি প্রয়োগ করে সরকারের ক্ষমতা আর নিরাপদ থাকবে না। রাষ্ট্রীয় অনাচার বৃদ্ধি করে আর সাধারণ মানুষকে ভয়-ভীতি দেখানো যাবে না। আমি সরকারের প্রতি আহ্বান জানাই-গণবিরোধী জুলুমের পথ থেকে অবিলম্বে সরে আসুন, গায়েবি মামলা ও গণগ্রেপ্তার বন্ধ করুন, জনগণের ক্ষমতা জনগণকে ফিরিয়ে দিন। পৃথিবীতে কখনোই স্বৈরাচার বেশিদিন টিকতে পারেনি, আটককৃত নেতাদের মুক্তি দিন এবং এই মুহূর্তে পদত্যাগ করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করুন।
|