আন্তর্জাতিক ডেস্ক : দীর্ঘ সাতবছর সৌদি আরবে আবারও দূতাবাস চালু করছে ইরান। মঙ্গলবার (৬ জুন) রাজধানী রিয়াদে নতুন করে ইরানের দূতাবাস উদ্বোধন করা হবে। এ সময় সৌদি আরবে নবনিযুক্ত ইরানি রাষ্ট্রদূতসহ বেশ কয়েকজন কূটনৈতিক উপস্থিত থাকবেন। সোমবার (৫ জুন) এসব তথ্য জানায় কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
তবে সৌদি আরব ঠিক কবে তেহরানে পুনরায় দূতাবাস চালু করবে অথবা কাকে রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিয়োগ দেবে, সে বিষয়ে এখনো কোনো নিশ্চিত তথ্য জানা যায়নি। ইরান গত মাসে রিয়াদে সৌদি রাষ্ট্রদূত হিসেবে আলিরেজা এনায়াতির নাম ঘোষণা করে।
দীর্ঘদিনের বৈরিতার অবসান ঘটিয়ে মধ্যপ্রাচ্যের দুই শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বী গত ১০ মার্চ চীনের মধ্যস্থতায় পুনরায় কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের চুক্তিতে সই করে। ১৯৭৯ সালে ইরানের পশ্চিমাবিরোধী ইসলামি বিপ্লব ও শিয়া ধর্মতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করার পর থেকেই রিয়াদ-তেহরানের মধ্যে মতাদর্শগত ও সামরিক দ্বন্দ্ব চলে আসছিল।
২০০৩ সালে ইরাকে মার্কিন আগ্রাসনের পর সৌদি আরব ও ইরানের মধ্যকার দ্বন্দ্ব বা উত্তেজনা ছায়াযুদ্ধে রূপ নেয়। তখন থেকেই রিয়াদ ও তেহরান মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর পাশাপাশি বিশ্ব রাজনীতিতে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা চালানো শুরু করে। তবে নানা কারণে ইরান এক্ষেত্রে খুব একটা সফল হতে পারেনি।
ইরান সমর্থিত সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর বিরুদ্ধে সৌদি সমর্থিত সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো সংঘাত পরবর্তী দেড় দশকে এ অঞ্চলের অধিকাংশ অংশকে কার্যত স্থবির করে দেয়। অন্যদিকে, ইয়েমেনে ইরান সমর্থিত বিদ্রোহীদের দমন করতে সৌদি নেতৃত্বাধীন জোটের সামরিক অভিযান শুরু করে, যা বিশ্বের সবচেয়ে খারাপ মানবিক সংকটগুলোর মধ্যে অন্যতম।
তাছাড়া, দুই দশকের দীর্ঘ এ রাজনৈতিক সংকটে সিরিয়া, ইয়েমেন, লেবানন ও অন্যান্য উপসাগরীয় দেশে বিশাল অর্থনৈতিক ও নিরাপত্তাজনিত সংকট সৃষ্টি করে।
২০১৬ সালে সৌদি আরব শিয়া ধর্মগুরু নিমর আল-নিমরকে মৃত্যুদণ্ড দেয়। এর জেরে তেহরানের সৌদি দূতাবাসে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। তখন থেকেই দুই দেশ আনুষ্ঠানিকভাবে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করে।
তবে করোনা মহামারি ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে সৃষ্ট অর্থনৈতিক সংকটের ফলে সৌদি ও ইরানের কর্মকর্তারা অন্ধকার সে অধ্যায়টি পুনরায় চালু করতে আগ্রহী হন।
সূত্র: আল জাজিরা
|