মিয়া আবদুল হান্নান : বাংলাদেশের আকাশে গতকাল মঙ্গলবার কোথাও ১৪৪৫ হিজরী সনের পবিত্র মুহাররম মাসের চাঁদ দেখা যায়নি। ফলে আজ বুধবার পবিত্র জিলহজ মাস ৩০ দিন পূর্ণ হবে। আগামীকাল বৃহস্পতিবার থেকে পবিত্র মুহাররম মাস গণনা শুরু হবে। এ প্রেক্ষিতে আগামী ২৯ জুলাই শনিবার পবিত্র আশুরা পালিত হবে। গতকাল সন্ধ্যায় বায়তুল মোকাররম সভাকক্ষে জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মোঃ ফরিদুল হক খান এমপি।সভায় ১৪৪৫ হিজরী সনের পবিত্র মুহাররম মাসের চাঁদ দেখা সম্পর্কে সকল জেলা প্রশাসন,ইসলামিক ফাউন্ডেশনের প্রধান কার্যালয়,বিভাগীয় ও জেলা কার্যালয়সমূহ, বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর এবং মহাকাশ গবেষণা ও দূর অনুধাবন প্রতিষ্ঠান হতে প্রাপ্ত তথ্য নিয়ে পর্যালোচনা করে দেখা গেছে বাংলাদেশের আকাশে পবিত্র মুহাররম মাসের চাঁদ দেখা যাওয়ার সংবাদ পাওয়া যায়নি।
সভায় ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মুহাম্মদ আঃ হামিদ জমাদ্দার, ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মুহাম্মদ আঃ আউয়াল হাওলাদার, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব মোঃ নজরুল ইসলাম, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক মোঃ নায়েব আলী মন্ডল (অতিরিক্ত দায়িত্ব), সিনিয়র উপ-প্রধান তথ্য কর্মকর্তা মোঃ আবদুল জলিল, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের উপ-সচিব মো. সাইফুল ইসলাম ভূইয়া, বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক মোঃ আজিজুর রহমান, বাংলাদেশ মহাকাশ গবেষণা ও দূর অনুধাবন প্রতিষ্ঠানের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মুহাম্মদ শহিদুল ইসলাম, বাংলাদেশ টেলিভিশনের কন্ট্রোলার মোঃ জুলফিকার রহমান কোরাইশী, বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদের সিনিয়র পেশ ইমাম হাফেজ মাওলানা মুহাম্মদ মিজানুর রহমান, লালবাগ শাহী জামে মসজিদের খতিব মুফতি মুহাম্মদ নিয়ামতুল্লাহ, সরকারি মাদ্রাসা-ই-আলিয়ার প্রিন্সিপাল মুহাম্মাদ আবদুর রশীদ উপস্থিত ছিলেন।
আল্লাহর গণনায় মাস ১২টি। এ ১২টি মাসের মধ্যে চারটি মাস সম্মানিত ও মর্যাদাবান। মহররম, রজব, জিলকদ ও জিলহজ। আল্লাহ তাআলা নিজে এ মাসের নামকরণ করেন ‘মহররম’। আরবরা এ মাসকে ‘সফরুল আউয়াল’ তথা প্রথম সফর নামকরণ করে নিজেদের ইচ্ছা মতো যুদ্ধ-বিগ্রহসহ বিভিন্ন কাজকে হালাল ও হারাম করতো। অবশেষে আল্লাহ তাআলা এ অবস্থাকে নিষিদ্ধ করে এ মাসের ইসলামি নামকরণ করেন ‘শাহরুল্লাহিল মুহাররাম’ তথা মহররম আল্লাহর মাস বলে ঘোষণা করেন।এ মাসের ১০ তারিখকেই আশুরা বলা হয়। নিঃসন্দেহে আশুরার দিনটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও মর্যাদার দিন। এ দিনটি মুসলিম উম্মাহকে পৃথিবীর বিভিন্ন ঘটনার কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। এক কথায় এ দিনটি দ্বীন প্রতিষ্ঠায় হিজরত এবং হক হক তথা উত্তম প্রতিষ্ঠার জন্য এক সুমহান দিন। এ কারণেই মুসলিম উম্মাহ এ দিনটিকে বিশেষ ইবাদাত-বন্দেগি তথা রোজা পালনের দিন হিসেবে শ্রদ্ধা ও ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে পালন করে থাকে।এ দিনটিতে ইবাদাত বন্দেগির ফজিলত ও তাৎপর্য অনেক বেশি। সংক্ষেপে আশুরার কিছু ফজিলত ও তাৎপর্য তুলে ধরা হলো-ক. মুসা আলাইহিস সালামের সফলতা ও ফিরাউনের ধ্বংসআল্লাহ তাআলা হজরত মুসা আলাইহিস সালামকে এ দিনে মহান সফলতা দান করেছেন। নিজেকে প্রভু দাবিকারী অত্যাচারী ফিরাউন হজরত মুসা আলাইহিস সালাম ও তাঁর অনুসারীদের ওপর মাত্রাতিরিক্ত অত্যাচার নির্যাতন চালাতেন। এ দিনে আল্লাহ তাআলা তাঁর রাসুল মুসা ও তাঁর অনুসারী বনি ইসরাইলকে ফিরাউনের অত্যাচার থেকে নাজাত দান করেছেন।
|