মিয়া আবদুল হান্নান : হিজরি বছরের প্রথম মাস মহররম। এ মাসের ১০ তারিখ পবিত্র আশুরা। আল্লাহ তাআলা ঘোষিত সম্মানিত এ মাসের অন্যতম আমল ১০ তারিখ রোজা রাখা। আশুরায় রোজা রাখার ফজিলত এবং মর্যাদা অনেক বেশি। আশুরায় নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের রোজা পালনের বিষয়টি হাদিসের একাধিক বর্ণনায় ফুটে ওঠেছে।
আশুরায় রোজা রাখার কারণ ও হাদিসের দিকনির্দেশনা
হজরত ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মদিনায় এসে দেখলেন, ইহুদিরা আশুরার দিন রোজা রাখছে। তখন তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, এটা কিসের রোজা?
তারা (ইহুদিরা) বলল, এটা একটা উত্তম দিন। আল্লাহ তাআলা এ দিন বনি ইসরাইল জাতিকে তাদের দুশমন (ফেরাউন)-এর আক্রমণ থেকে নিরাপদ করেছেন। তাই হজরত মুসা আলাইহিস সালাম এ দিন রোজা রেখেছিলেন। তখন নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, তোমাদের চেয়ে আমিই হজরত মুসা আলাইহিস সালামের (আদর্শ পালনে) বেশি হকদার। কাজেই তিনি নিজে আশুরার রোজা রাখলেন এবং অন্যদেরকেও রোজা রাখার নির্দেশ দিলেন।’ (বুখারি,মুসলিম, ইবনে মাজাহ, আবু দাউদ, মুসনাদে আহমাদ, বায়হাকি)
আশুরায় রোজা রাখার ফজিলত
১. হজরত আবু কাতাদাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘আমি আশা রাখি যে, আশুরার রোজা বিগত এক বছরের গোনাহের কাফফারা হবে।’ (মুসলিম, আবু দাউদ, মুসনাদে আহমাদ)
২. হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘রমজানের পর সর্বোত্তম রোজা হলো মুহররম মাসের দোয়া।’ (মুসলিম, আবু দাউদ, তিরমিজি)
৩. হজরত আবু কাতাদাহ আনসারি রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে আশুরার রোজা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, ‘আশুরার রোজা বিগত এক বছরের গোনাহের কাফফারাহ হবে।’ (মুসলিম, মুসনাদে আহমাদ)
মুমিন মুসলমানের উচিত, নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের অনুসরণ-অনুকরণ ও ফজিলত বর্ণনায় আশুরার উপদেশ মেনে যথাযথভাবে রোজা পালনের আমল করা জরুরি। আর এতে জারি হবে নবিজির সুন্নাত। আর তা হবে পুরো এক বছরের গুনাহের কাফফারা। মিলবে পরকালের নাজাত। পালন হবে হজরত মুসা আলাইহিস সালামের সুন্নাতও।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে আশুরার রোজা পালনের তাওফিক দান করুন। সম্মানিত মাস মহররমের মর্যাদা দেওয়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।
|