চলতি বছর দীপাবলির দিন পশ্চিমবঙ্গ প্রশাসন আগেই আশঙ্কা করেছিল, রাত গড়ালেই নিষিদ্ধ বাজি ফাটানোর মাত্রা ব্যাপকভাবে বাড়বে। ঠিক হয়েছেও তাই। রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কলকাতা শহরে পাল্লা দিয়ে বাড়ে বাজির দাপট। আর তাতেই বায়ুদূষণে বিশ্বের শীর্ষ শহরের তালিকায় আবারও জায়গা করে নেয় ‘দ্য সিটি অব জয়’।
রাজ্য আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, দীপাবলির পরদিন সোমবার (১৩ নভেম্বর) সকালে বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত শহরের তালিকায় কলকাতা উঠে আসে ৪ নম্বরে ৷ মুম্বাই ছিল আট নম্বরে আর বরাবরের মতোই এ তালিকার শীর্ষে রয়েছে দিল্লি।
জানা গেছে, রোববার রাতে কলকাতার একিউআই ছিল ১৯৬। তবে বিভিন্ন শহরের অবস্থা ছিল আরও খারাপ। রোববার (১২ নভেম্বর) রাতে, বালিগঞ্জে বাতাসের মান বা একিউআই ছিল ৩৪৪, যা সোমবার সকালে হয় ৩৩৪। রাতে ফোর্ট উইলিয়ামে একিউআই ছিল ৩০৬, সোমবার সকালেও তা অপরিবর্তীত ছিল।
রোববার রাতে বেলেঘাটার একিউআই ছিল ৩৩৬, সোমবার সকালে তা বেড়ে হয় ৩৭৭। এরমধ্যে সবচেয়ে উদ্বেগজনক পরিসংখ্যান পাওয়া গেছে পার্কস্ট্রিটের। কারণ রোববার রাতে সেখানে দূষণের মাত্রা ছিল ৪৬৫। সোমবার সকালে তা ৪৬৬ এ পৌঁছায়।
পরিবেশবিদের মতে, কলকাতা শহরের একিউআই থাকা উচিত ০ থেকে ৫০ এর মধ্যে। ১৫০ থেকে ২০০ মধ্যে গেলেই বাড়তে থাকে অস্বস্তি। বাড়ে শ্বাসকষ্ট, নিঃশ্বাস নিলেই জ্বালা-জ্বালা ভাব হয়, বাড়ে ফুসফুসের সমস্যা। আর যদি একিউআই ৪০০ এর ওপর উঠে যায়, তাহলে গুরুতর অসুস্থতা দেখা দেয়।
রোববার রাতে কলকাতা পুলিশের কড়া নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও শহরের অলি-গলি, বাড়ির ছাদ ছাড়াও বহুতল ভবনের জানালা কিংবা বারান্দা থেকেও ছোড়া হয় নিষিদ্ধ শব্দবাজি। এসব বাজির অধিকাংশই পরিবেশবান্ধব নয়। ফলে এগুলো ফাটালে একই সঙ্গে শব্দ ও বায়ুদূষণ হয়।
মূলত দুর্গাপূজার আগে থেকেই কলকাতা পুলিশ নিষিদ্ধ বাজির উপর নজরদারি রেখেছিল। অসংখ্য কারখানা ও খুচরা বিক্রেতাদের দোকানে আচমকা তল্লাশি চালিয়ে বাজেয়াপ্ত করা হয়েছিল টনটন বাজি।
কলকাতা পুলিশের সদর দপ্তর সূত্র জানিয়েছে, আলোর উৎসবে নিয়ম ভাঙার জন্য এরই মধ্যে বেশ কয়েকজনকে গ্ৰেফতার করা হয়েছে। সেই সঙ্গে বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে ৪১৪ কেজি বাজি।
পুলিশের দাবি, নিষিদ্ধ বাজি ফাটানোর অভিযোগ পাওয়া মাত্রই পদক্ষেপ নিয়েছে তারা। তবে শহরকে সুস্থ রাখার স্বার্থে নগরবাসীকে আরও সতর্ক হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে রাজ্য পুলিশ।
|