আন্তর্জাতিক ডেস্ক : দীর্ঘ ১৫ মাসের বেশি সময় পর সম্প্রতি ফিলিস্তিনের গাজায় কার্যকর হয়েছে বহুল আকাঙ্ক্ষিত যুদ্ধবিরতি চুক্তি। ৪৭ হাজার মানুষের প্রাণহানির পর কার্যকর হওয়া এই যুদ্ধবিরতির পর বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিরা এখন ফিরছেন তাদের নিজ এলাকায়।
তবে এরপরও বেড়েই চলেছে প্রাণহানি। মূলত ধ্বংসস্তূপের নিচে থেকে একের পর এক উদ্ধার হচ্ছে নিহতদের লাশ। গত ২৪ ঘণ্টায় অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডের ধ্বংসস্তূপের নিচে থেকে আরও অর্ধশতাধিক ফিলিস্তিনির লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।
এতে করে উপত্যকাটিতে নিহতের মোট সংখ্যা প্রায় ৪৭ হাজার ২০০ জনের কাছাকাছি পৌঁছে গেছে। বুধবার (২২ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর বর্বরতায় নিহত আরও ৫৩ জন ফিলিস্তিনির লাশ ধ্বংসস্তূপের নিচে থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। এতে করে ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৪৭ হাজার ১৬১ জনে পৌঁছেছে বলে বুধবার অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।
মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ১৯ জন আহত ব্যক্তিকেও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এতে করে ইসরায়েলি হামলায় আহতের সংখ্যা বেড়ে ১ লাখ ১১ হাজার ১৬৬ জনে পৌঁছেছে। অনেক মানুষ এখনও ধ্বংসস্তূপের নিচে এবং রাস্তায় পড়ে থাকলেও উদ্ধারকারীরা তাদের কাছে পৌঁছাতে পারছেন না।
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডে গত ১৯ জানুয়ারি যুদ্ধবিরতি চুক্তি কার্যকর হয়। এর ফলে গাজায় ইসরায়েলের বর্বর আগ্রাসনের আপাতত অবসান ঘটলেও ভূখণ্ডটিতে ইসরায়েলি আক্রমণে নিখোঁজ রয়েছেন ১১ হাজারেরও বেশি মানুষ। মূলত গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির দাবি জানিয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব থাকা সত্ত্বেও ইসরায়েল দীর্ঘদিন ধরে অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডে তার নৃশংস আক্রমণ অব্যাহত রেখেছিল।
এছাড়া ইসরায়েলি আগ্রাসনের কারণে প্রায় ২০ লাখেরও বেশি বাসিন্দা তাদের বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছিলেন। মূলত ইসরায়েলি আক্রমণ গাজাকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে।
জাতিসংঘের মতে, ইসরায়েলের বর্বর আক্রমণের কারণে গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছিলেন। এছাড়া অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডের ৬০ শতাংশ অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে। ইসরায়েল ইতোমধ্যেই আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছে।
|