মোশাররফ হোসাইন রাজু : ২০২৩ সনের ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনের গাজায় শুরু হয় মুক্তিকামী সংগঠন হামাস ও দখলদার ইসরাইলের মধ্যকার যুদ্ধ। যুদ্ধ শুরুর পর থেকেই নিপীড়িত গাজাবাসীর পাশে দাঁড়িয়েছে সরকারী নিবন্ধনভূক্ত জাতীয় সেবা সংস্থা হাফেজ্জী চ্যারিটেবল সোসাইটি অব বাংলাদেশ। বাংলাদেশের এটিই একমাত্র সেবা সংস্থা, যেটি আলাদা প্রজেক্ট চালু করে সক্রিয়ভাবে গাজাবাসীদের সহযোগিতায় কাজ করছে।
এখন পর্যন্ত সংস্থাটি প্রায় এক কোটি টাকার সহায়তা পৌঁছে দিয়েছে সরাসরি নিপীড়িত মানুষের কাছে।
এরই মধ্যে গত ১৯ শে নভেম্বর মঙ্গলবার মিশর সফরে যায় সংস্থাটির ছয় সদস্যের একটি টিম।
১০ দিনের ওই সফরে মিশরের শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নেয়া গাজাবাসীদের সহায়তা দেয়ার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক সেবা সংস্থাগুলোর সাথে সমন্বয় করে গাজা ও খান ইউনিসেও সহায়তা পৌঁছে দেন তাঁরা।
সংস্থাটির সাথে কথা বলে এবং ফেসবুক পেইজ ও ওয়েব সাইটে এসব কার্যক্রম দেখা গেছে।
কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে— যুদ্ধাহত ও সাধারণ রোগীদের চিকিৎসা সেবা প্রদান, খাবার ও পানি বিতরণ, নগদ অর্থ সহায়তা প্রদান এবং শীতবস্ত্র বিতরণ ইত্যাদি।
হাফেজ্জী চ্যারিটেবল সোসাইটির পরিচালক নওমুসলিম মুহাম্মদ রাজ এবং সাধারন সম্পাদক মাওলানা ইবরাহিম।মিয়া বলেন, এখন পর্যন্ত গাজার খান ইউনিস ও দেইর আল বালাহতে আমাদের ফি.লিস্তিনি স্বেচ্ছাসেবক টিমের মাধ্যমে গত দুই মাসে প্রায় আশি হাজার লিটার পানি, পরপর রান্না করা খাবার, শীতবস্ত্র, নগদ অর্থ বিতরণ করতে সক্ষম হয়েছি। ফিলিস্তিনের সঙ্কট দূর না হওয়া পর্যন্ত আমাদের কার্যক্রম চলমান থাকবে ইনশাআল্লাহ।
কার্যক্রম পরিচালনার পদ্ধতি সম্পর্কে জানতে চাইলে পরিচালক বলেন, গত নভেম্বরে তো আমরা মিশর সফরে গিয়ে সেখানকার শরণার্থীদের সহযোগিতা করেছি। সেখানে আমরা কয়েকশো পরিবারকে সহায়তা দিয়েছি। এরপর ওখানকার নির্ভরযোগ্য সেবা সংস্থা এবং উলামায়ে কেরামের মধ্যস্থতায় গা জা র দেইর আল বালাহা ও খান ইউনিসে আমরা ফি লি স্তি নি ভাইদের দুটি স্বেচ্ছাসেবক টিম তৈরী করেছি আলহামদুলিল্লাহ। এখন আমরা বাংলাদেশ থেকে তাদের মাধ্যমে গা.জাতে আমাদের সমস্ত কার্যক্রম পরিচালনা করছি আলহামদুলিল্লাহ।
তিনি আরও বলেন, প্রতিটি কার্যক্রম আমাদের নিজস্ব ব্যানারে, ইউনিফর্ম পরে করে থাকেন। সেখান থেকে সমস্ত কার্যক্রম ধারাভাষ্য সহ আমাদের কাছে পাঠানো হয়। আমরা সেগুলো আমাদের পেইজ ও ওয়েবসাইটে আপলোড দিয়ে থাকি। স্বচ্ছতা এবং সততার ক্ষেত্রে আমরা বিন্দুমাত্র ত্রুটি করি না আলহামদুলিল্লাহ। সবশেষে তিনি দেশের সকল মানুষকে নিপীড়িত গা.জাবাসীদের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান।
প্রসঙ্গত, হাফেজ্জী চ্যারিটেবল সোসাইটি অব বাংলাদেশ ( টিম এইচ সি এস বি ) সরকারী নিবন্ধনভূক্ত একটি অলাভজনক এবং অরাজনৈতিক সেবা সংস্থা। দেশের শীর্ষ আলেমগণের তত্ত্বাবধানে এটি পরিচালিত হয়। ২০১৫ সনে আনুষ্ঠানিকভাবে এর কার্যক্রম শুরু হয়। অল্প দিনের মধ্যেই এর সুনাম সুখ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে সারাদেশে। সরকার এটিকে জাতীয় সংস্থা হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করে। জাতীয় পত্র পত্রিকায় উঠে আসে হাফেজ্জী চ্যারিটেবলের অভূতপূর্ব সব সেবামূলক কর্মযজ্ঞের ফিরিস্তি। দুস্থ এবং অসহায় রোগীদের চিকিৎসা সেবা দিয়ে সবার নজর কেড়েছে হাফেজ্জী চ্যারিটেবলের জান্নাতের খোঁজে প্রজেক্ট। এর আরও কিছু প্রজেক্ট রয়েছে। যেমন, সাবলম্বী করণ প্রজেক্ট, নিউ মুসলিম ওয়েলফেয়ার প্রোগ্রাম, শীতবস্ত্র বিতরণ, দুর্যোগকালীন সহায়তা ইত্যাদি। দেশের শীর্ষ উলামায়ে কেরাম, ডাক্তার, শিক্ষক, আইনজীবী এবং সাংবাদিক সহ বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ হাফেজ্জী চ্যারিটেবলের সদস্য।
|