আফগানিস্তানের পাকতিকা প্রদেশে সন্দেহভাজন পাকিস্তানি তালেবানদের একাধিক ঘাঁটিতে বিমান হামলা চালিয়েছে পাকিস্তান। এতে একটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ধ্বংস এবং কিছু বিদ্রোহী নিহত হয়েছেন বলে নিরাপত্তা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
নিরাপত্তা সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) পাকিস্তানের সঙ্গে সীমান্তবর্তী পার্বত্য এলাকায় এই হামলাগুলো চালানো হয়। তবে যুদ্ধবিমানগুলো কতটা গভীরে প্রবেশ করেছিল এবং কীভাবে এই হামলা পরিচালিত হয়েছিল তা এখনো পরিষ্কার নয়। পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর কোনো মুখপাত্র এ বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে মন্তব্য করেননি।
এদিকে, কাবুলে আফগান প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় পাকিস্তানের এই হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। তারা বলেছে, পাকিস্তানি হামলায় নারী ও শিশুসহ সাধারণ নাগরিকরা নিহত হয়েছেন। নিহতদের অধিকাংশই ওয়াজিরিস্তানের শরণার্থী।
মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আফগানিস্তান এই হামলাকে আন্তর্জাতিক নীতিমালার লঙ্ঘন এবং নির্লজ্জ আক্রমণ হিসেবে বিবেচনা করে এর তীব্র প্রতিবাদ জানায়।
স্থানীয় বাসিন্দাদের বরাতে জানা গেছে, হামলায় অন্তত আটজন নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে নারী ও শিশুরাও রয়েছে। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এ ঘটনায় এক্স প্ল্যাটফর্মে আফগান প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, পাকিস্তানের এই একতরফা পদক্ষেপ কোনো সমস্যার সমাধান নয়। আমরা এই কাপুরুষোচিত হামলার জবাব দেবো এবং আমাদের ভূখণ্ড রক্ষার অধিকারকে অগ্রাহ্য করবো না। পাকিস্তানের এই হামলার কয়েক ঘণ্টা আগে দেশটির আফগানিস্তানবিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি মোহাম্মদ সাদিক কাবুল সফর করেন। সফরে তিনি আফগানিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সিরাজউদ্দিন হাক্কানির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং বিভিন্ন দ্বিপাক্ষিক ইস্যু নিয়ে আলোচনা করেন।
বিশ্লেষকদের মতে, পাকিস্তানের এই বিমান হামলা তালেবানদের প্রতি একটি কঠোর বার্তা। ইসলামাবাদভিত্তিক নিরাপত্তা বিশ্লেষক সৈয়দ মুহাম্মদ আলি বলেন, এই হামলা পাকিস্তানি তালেবানকে সতর্ক করার একটি স্পষ্ট বার্তা। তবে পাকিস্তান এই হামলা চালাতে বেসামরিক প্রাণহানির ব্যাপারে যথেষ্ট সতর্কতা অবলম্বন করেছে।
উল্লেখ্য, ২০২১ সালে আফগান তালেবান ক্ষমতায় আসার পর থেকে পাকিস্তানি তালেবান, যা তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি) নামে পরিচিত, আরও সক্রিয় হয়ে উঠেছে। সম্প্রতি তারা পাকিস্তানি সেনা ও পুলিশের ওপর হামলার সংখ্যা বাড়িয়েছে।
সূত্র: এপি
|