বছর শেষের আগেই সুখবর মিলল দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে। সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরে আকুর বিল পরিশোধের কারণে রিজার্ভ বেশ নিচে নেমে গেলেও গত দেড় মাসে বৈদেশিক মুদ্রার সঞ্চয় বাড়তে বাড়তে আবারও ২০ বিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি পৌঁছেছে।
বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রকাশিত সবশেষ আপডেট থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, আন্তর্জাতিক হিসাবায়ন পদ্ধতি (বিপিএম৬) অনুসারে দেশে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বেড়ে এই মুহূর্তে এক হাজার ৯৯৫ কোটি ৭১ লাখ ৪০ হাজার ডলার বা ১৯ দশমিক ৯৬ বিলিয়ন ডলার দাঁড়িয়েছে। বৈদেশিক মুদ্রায় গঠিত বিভিন্ন তহবিলসহ মোট রিজার্ভের পরিমাণ দুই হাজার ৪৯৪ কোটি ৬৩ লাখ ২০ হাজার ডলার।
মূলত, রিজার্ভের তিনটি হিসাব সংরক্ষণ করে থাকে বাংলাদেশ ব্যাংক। প্রথমটি হলো বৈদেশিক মুদ্রায় গঠিত বিভিন্ন তহবিলসহ মোট রিজার্ভ। মোট রিজার্ভের মধ্যে রয়েছে তৈরি পোশাক শিল্পের উদ্যোক্তাদের জন্য একটি সহজ শর্তের ঋণ, বিমান ক্রয়ে সোনালী ব্যাংককে দেওয়া ঋণসহ বেশ কয়েকটি তহবিল।
দ্বিতীয়টি হলো আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাবায়ন পদ্ধতি অর্থাৎ বৈদেশিক মুদ্রায় গঠিত তহবিল বা ঋণের অর্থ বাদ দিয়ে একটি তহবিল।
এর বাইরে রয়েছে ব্যবহারযোগ্য রিজার্ভ। বর্তমান যা ১৫ বিলিয়ন ডলারের কিছুটা নিচে।
দেশের ন্যূনতম তিন মাসের আমদানি খরচের সমান রিজার্ভ থাকতে হয়। সেই মানদণ্ডে বাংলাদেশ রিজার্ভ এখন প্রায় চার মাসের আমদানি মূল্য মেটানোর অবস্থায় রয়েছে।
গত ১১ নভেম্বর এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) মাধ্যমে সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসে আমদানি পণ্যের বিল বাবদ ১ দশমিক ৫০ বিলিয়ন ডলার পরিশোধ করে বাংলাদেশ। ফলে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে দাঁড়ায় ১৮ দশমিক ৪৫ বিলিয়ন ডলার (বিপিএম৬)। কিন্তু গত দেড় মাসে বৈদেশিক মুদ্রার এই সঞ্চয় বাড়তে বাড়তে আবারও ২০ বিলিয়ন ডলার ছুঁই ছুঁই হয়েছে।
এর আগে ২০২২-২৩ অর্থবছরে শেষ নাগাদ নিট রিজার্ভ নামে ২৪ দশমিক ৭৩ বিলিয়ন ডলারে। এ সময় বৈশ্বিক উচ্চ মুদ্রাস্ফীতির কারণে আমদানি ব্যয় বাড়তে থাকে। অন্যদিকে বৈদেশিক মুদ্রার আহরণের ক্ষেত্রটা সংকুচিত হতে থাকে। এ অবস্থায় জ্বালানি ও জরুরি খাদ্যপণ্য আমদানিতে ডলারের চাহিদা বাড়তে থাকে। উল্টোদিকে ডলার বিক্রি করার কারণে কমে যায় বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ। এরপর বৈদেশিক ঋণ ও বিভিন্ন বাণিজ্যিক ব্যাংকের কাছ থেকে ডলার ক্রয়ের মাধ্যমে আবার রিজার্ভ বাড়ায়।
বর্তমান সরকারের সময় বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি বন্ধ রয়েছে। পাশাপাশি বিভিন্ন সোর্স থেকে ডলার যোগ হচ্ছে প্রতিদিনই। এর ধারাবাহিকতায় ক্রমেই বাড়ছে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ।
|