শেয়ার বাজার ডেস্ক
দেশের শেয়ারবাজরে মন্দা প্রবণতা চললেও গত সপ্তাহে শেয়ারের দাম বাড়ার ক্ষেত্রে দাপট দেখিয়েছে দুর্বল কোম্পানির শেয়ারগুলো। গত সপ্তাহে ডিএসইতে দাম বাড়ার শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে দুটি স্থান দখল করেছে ‘পচা’ বা ‘জেড’ গ্রুপের কোম্পানি। এছাড়া বাকি আটটির মধ্যে তিনটি রয়েছে ‘বি’ গ্রুপের প্রতিষ্ঠান।
এছাড়া ভালো কোম্পানি বা ‘এ’ গ্রুপের প্রতিষ্ঠান রয়েছে চারটি। বাকি একটি ‘এন’ গ্রুপের প্রতিষ্ঠান। তবে ‘এ’ গ্রুপের এ প্রতিষ্ঠানগুলো শীর্ষ দাম বাড়ার তালিকায় স্থান করে নিয়েছে তাদের মান নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।
সপ্তাহজুড়ে পুঁজিবাজারের বিনিয়োগকারীদের কাছে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে চাহিদার শীর্ষে ছিল নতুন তালিকাভুক্ত সি পাল বিচ রিসোর্ট অ্যান্ড স্পা। ফলে সপ্তাহজুড়ে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে এ কোম্পানিটির শেয়ার দামে বড় ধরনের উত্থান ঘটেছে।
মূল্যে বড় ধরনের উত্থান হওয়ায় বিনিয়োগকারীদের একটি অংশ কোম্পানিটির শেয়ার বিক্রি করতে রাজি হননি। ফলে সপ্তাহজুড়ে লেনদেন হয়েছে ৯ কোটি ১৬ লাখ ৭০ হাজার টাকা। আর প্রতি কার্যদিবসে গড়ে লেনদেন হয়েছে ২ কোটি ২৯ লাখ ১৭ হাজার টাকা।
এদিকে কোম্পানিটির শেয়ারের দাম সপ্তাহজুড়ে বেড়েছে ১৪ দশমিক ৮৬ শতাংশ। টাকার অঙ্কে বেড়েছে ৩ টাকা ৩০ পয়সা। সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস শেষে কোম্পানিটির শেয়ারের দাম দাঁড়িয়েছে ২৫ টাকা ৫০ পয়সা, যা আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ছিল ২২ টাকা ২০ পয়সা।
সি পাল বিচ রিসোর্টের পরেই গত সপ্তাহে বিনিয়োগকারীদের আগ্রহে ছিল এসইএমএল এফবিএলএসএল গ্রোথ ফান্ড। সপ্তাহজুড়ে এই মিউচ্যুয়াল ফান্ডটির দাম বেড়েছে ১৪ দশমিক ৬৬ শতাংশ। এর পরেই রয়েছে অগ্রণী ইন্স্যুরেন্স। সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির শেয়ার দাম বেড়েছে ১৩ দশমিক ৫৯ শতাংশ।
শেয়ারের এমন দাম হলেও ২০০৫ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়া অগ্রণী ইন্স্যুরেন্সের লভ্যাংশের ইতিহাস খুব একটা ভালো না। শেয়ারহোল্ডাদের নামমাত্র লভ্যাংশ দেয়ার কারণে কোম্পানিটির বর্তমান স্থান ‘বি’ গ্রুপে।
২০১৫ সালে ৫ শতাংশ নগদ ও ৫ শতাংশ বোনাস শেয়ার, ২০১৬ সালে ৩ শতাংশ নগদ ও ৭ শতাংশ বোনাস শেয়ার, ২০১৭ সালে ৫ শতাংশ নগদ ও ৫ শতাংশ বোনাস শেয়ার লভ্যাংশ দেয়া প্রতিষ্ঠানটি ২০১৮ সালে শেয়ারহোল্ডারদরে ৫ শতাংশ বোনাস শেয়ার লভ্যাংশ হিসেবে দেয়।
ডিএসইর তথ্যানুযায়ী, ৩০ কোটি ২৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা পরিশোধিত মূলধনের এ কোম্পানিটির মোট শেয়ার সংখ্যা ৩ কোটি ২ লাখ ৪৪ হাজার ৬৮৭টি। এর মধ্যে ৩৪ দশমিক ৩১ শতাংশ শেয়ার রয়েছে উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের হাতে। বাকি অংশের মধ্যে ৪৭ দশমিক ৪১ শতাংশ আছে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে। আর প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে ১৮ দশমিক ২৮ শতাংশ শেয়ার আছে।
সপ্তাহজুড়ে দাম বাড়ার শীর্ষ তালিকায় চতুর্থ স্থান দখল করেছে ‘বি’ গ্রুপের প্রতিষ্ঠান ন্যাশনাল ফিড। ২০১৫ সালে তালিকাভুক্ত হওয়া কোম্পানিটি থেকে শেয়ারহোল্ডাররা কখনো লভ্যাংশ হিসেবে নগদ টাকা পায়নি। প্রতি বছরই প্রতিষ্ঠানটি লভ্যাংশ হিসেবে বিনিয়োগকারীদের বোনাস শেয়ার বা কাগজ ধরিয়ে দিয়েছে।
এর পরের স্থানে রয়েছে রূপালী লাইফ। এ কোম্পানিটি ২০১৮ সালে শেয়ারহোল্ডারদের ১২ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দেয়। তার আগে ২০১৭ সালে ৮ শতাংশ নগদ ও ৪ শতাংশ বোনাস শেয়ার, ২০১৬ ও ২০১৫ সালে ১০ শতাংশ নগদ, ২০১৪ সালে ১০ শতাংশ বোনাস শেয়ার লভ্যাংশ হিসেবে দেয় প্রতিষ্ঠানটি।
এছাড়া গত সপ্তাহে দাম বাড়ার শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় থাকা ‘জেড’ গ্রুপের প্রতিষ্ঠান সমতা লেদারের ১২ দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ, গ্লোবাল ইন্স্যুরেন্সের ১০ দশমিক ৯১ শতাংশ, সেন্ট্রাল ইন্স্যুরেন্সের ১০ দশমিক ৮০ শতাংশ দাম বেড়েছে।
|