বাড়ির ছাদে হাতবোমা তৈরির সময় বিস্ফোরণে আহত হাফিজুর রহমান সুরুজ নামে এক যুবক রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে পালিয়ে গেছেন বলে জানা গেছে।
হাসপাতালের মুখপাত্র শংকর কে বিশ্বাস রোববার বলেন, “শুক্রবার থেকে সুরুজ অর্থোপেডিক্স বিভাগের ৩১ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি ছিলেন। রোববার সকাল থেকে তাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।”
সুরুজের (৩৫) বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের পেঁচিপাড়া গ্রামে। শুক্রবার বিকালে ছাদে হাতবোমা তৈরি করতে গিয়ে বিস্ফোরণে তিনি গুরুতর আহত হন। রাতেই তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
পুলিশ জানায়, সুরুজ আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। তিনি হাতবোমা তৈরির কারিগর হিসেবে এলাকায় পরিচিত। মানুষ তাকে ‘বোমারু সুরুজ’ নামে চেনে।
শুক্রবার ওই ঘটনার পর থেকে সুরুজের বাড়ির পুরুষ সদস্যরা পালিয়ে যান। খবর পেয়ে রাতেই পুলিশ সুরুজের বাড়ি পরিদর্শন করেছেন। তবে পুলিশ যাওয়ার আগেই ওই স্থান পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলা হয়েছে।
রোববার দুপুরে হাসপাতালের ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের ভিতরে এবং বাইরের বারান্দায় খোঁজেও সুরুজকে পাওয়া যায়নি।
পরে নার্সেস স্টেশনে গিয়ে খোঁজ নিলে একজন কর্মকর্তাও তাকে খুঁজতে যান। তিনিও পাননি।
খাতাপত্র দেখে ওই কর্মকর্তা বলেন, “খাতাপত্রে ভর্তি থাকা রোগী হিসেবেই সুরুজের নাম লেখা আছে। তাকে কোথাও স্থানান্তর করা হয়নি। আবার ছাড়পত্রও দেওয়া হয়নি। সেই অনুযায়ী, তিনি হাসপাতালে ভর্তিই আছেন। কিন্তু তাকে পাওয়া যাচ্ছে না।”
তিনি জানান, অনেক সময় পুলিশি মামলার রোগীরা কাউকে না জানিয়েই গোপনে চলে যান। তারা বাইরে কোনো বেসরকারি হাসপাতাল কিংবা ক্লিনিকে গোপনে চিকিৎসা নেন। সুরুজের বিষয়টিও সে রকম হতে পারে। বিষয়টি ঊর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
হাসপাতালের মুখপাত্র শংকর কে বিশ্বাস বলেন, “এত বড় হাসপাতালে আসলে সব রোগীকে দেখে রাখা সম্ভব হয় না। কেউ ছুটি না নিয়েই গোপনে পালিয়ে গেলে আমাদের কিছু করার থাকে না। যারা এভাবে পালিয়ে যায় তাদের কোনো না কোনো অসৎ উদ্দেশ্য থাকে।”
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর মডেল ওসি রইস উদ্দিন বলেন, “আমরাও সুরুজকে খুঁজছি। তাকে পেলে গ্রেপ্তার করব। তবে সে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি ছিল এটা জানতাম না। পালিয়ে গেছে কি-না সেটাও জানি না।
“তবে তার বাড়িতে কোনো পুরুষ নেই। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। প্রাথমিক তদন্ত শেষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
|